Web bengali.cri.cn   
চীনের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র-'ঘোড়ার মাথাওয়ালা বেহালা'
  2010-05-28 20:42:39  cri

আজ এ অনুষ্ঠানে চীনের মঙ্গোলিয় জাতির ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র-'ঘোড়ার মাথাওয়ালা বেহালা' সম্পর্কে আপনাদের কিছু বলবো ।

ঘোড়ার মাথাওয়ালা বেহালা ত্রয়োদশ শতকের প্রথম দিক থেকেই চীনের মঙ্গোলিয় জাতির লোকজনের মধ্য প্রচলন শুরু হয় । বাদ্যযন্ত্রটির উপর দিকে একটি ঘোড়ার মাথার মূর্তি খোদাই করা হয় । এ মূর্তির কারণে বাদ্যযন্ত্রটিকে মাথুছিং অর্থাত্ ঘোড়ার মাথাওয়ালা বেহালা বলা হয় । চীন ও বিদেশের বেশ কিছু তারযুক্ত বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে ঘোড়ার মাথাওয়ালা বেহালা অদ্বিতীয় । বাদ্যযন্ত্রটির দু'টো তার তৈরির জন্য ঘোড়ার লেজ থেকে আলাদা আলাদাভাবে ৪০ ও ৬০টি লম্বা ও উন্নত মানের লোম বাছাই করা হয় । সংগীত বাজানোর সময় বেহালা ও ঘোড়ার লেজ দিয়ে তৈরি তারের স্পর্শের মাধ্যমে সংগীতের সুর বাজানো হয় । এতে এক ধরনের অসাধারণ ও মধুর কন্ঠস্বর সৃষ্টি করা যায় । এর পাশাপাশি তৃণভূমির নিবিড় রীতি-নীতি ও বৈশিষ্ট্যও বেহালায় প্রকাশ পেয়েছে ।

আগে বাদকদের নিজের ব্যবহারের জন্য ঘোড়ার মাথাওয়ালা বেহালা তৈরি করা হতো । এ ধরনের বাদ্যযন্ত্রের স্বর দুর্বল ছিল । যুগের বিকাশের সংগে সংগে চীনের বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুতকারীরা ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মাথাওয়ালা বেহালা সংস্কারের চেষ্টা চালিয়েছেন । ফলে এ ধরনের বাদ্যযন্ত্রের বাজানোর ম্বর এ ক্ষেত্রে অনেক উন্নত হয়েছে । বাদ্যযন্ত্রটি ঘরের ভেতর ও বাইরের নানা জায়গায় বাজানোর জন্য এখন উপযোগী হয়েছে । এটাও মঙ্গোলীয় জাতির অন্যতম প্রধান বাদ্যযন্ত্রে পরিণত হয়েছে ।

এ ছাড়াও বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুতকারীরা মাঝারি ও বড় আকারের ঘোড়ার মাথাওয়ালা বেহালাও তৈরি করেছেন । এ দু'টো বাদ্যযন্ত্র পাশ্চাত্যের বড় বেহালা ও নিম্ন স্বরের বেহালার মতো ভূমিকা পালন করে থাকে । ফলে ঘোড়ার মাথাওয়ালা বেহালা একটি পূর্ণাঙ্গ বাদ্যযন্ত্র হিসেবে গড়ে উঠেছে । চীনের বিবিধ লোক সংগীত বাজানোর ব্যাপারে তা আরো আবেগপূর্ণ ও বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠেছে । বাইরের দিক থেকে দেখা যায় নতুন ধরনের ঘোড়ার মাথাওয়ালা বেহালায় মঙ্গোলিয় জাতির বৈশিষ্ট্য বজায় রয়েছে । বেহালাটির বাইরে এ জাতির রেওয়াজ বিশিষ্ট নক্সা অঙ্কন করা রয়েছে । বেহালাটিকে সৌন্দর্যময় হস্তশিল্প বলেও মনে করা হয় ।

চীনের অন্তর্মঙ্গোলিয়ার তৃণভূমিতে ঘোড়ার মাথাওয়ালা বেহালা সম্পর্কিত একটি রূপকথা এখনো প্রচলিত রয়েছে । অনেক দিন আগের কথা । তৃণভূমিতে এক পশুপালকের একটি ছোট সাদা ঘোড়া ছিল । ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতায় ছোট ঘোড়াটি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর রাজা তাকে দখল করেন । ঘোড়াটি রাজার নিয়ন্ত্রণ ও নির্যাতন মানে না । সে পশুপালকের বাড়ির দিকে দৌড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে । রাজার আদেশে প্রহরীরা তীর নিক্ষেপ করে ঘোড়াটাকে হত্যা করে । ঘোড়াটির মৃত্যুতে পশুপালক বেশ মর্মাহত হন । ঘোড়াটির প্রতি চিরকালের উদ্দেশ্যে স্মৃতি নিবেদন করার জন্য তিনি ঘোড়াটির হাড় ও লেজ দিয়ে ঘোড়ার মাথাওয়ালা একটি সুন্দর বেহালা তৈরি করেন । এতে নিবিড়ভাবে জীবনের দুঃখ-দুর্দশা ও তৃণভূমির প্রতি ভালবাসা ব্যক্ত হয়েছে । (থান ইয়াও খাং)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040