|
ব্রিটেনের ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০জন ছাত্রছাত্রী নবম ' চীনা ভাষা সেতু ' নামক চীনা ভাষা প্রতিযোগিতার বাছাই পর্বের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন । ' চীনা ভাষা সেতু ' নামক চীনা ভাষা প্রতিযোগিতা হল চীনের জাতীয় চীনা ভাষা প্রচার কার্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত একটি বিশ্ব প্রতিযোগিতা । ব্রিটেন অঞ্চলের বাছাইপর্বের প্রতিযোগিতা লন্ডনের রাজনীতি ও অর্থনীতি ইন্সটিটিউটে অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
ব্রিটেনে চীনের নতুন রাষ্ট্রদূত লিউ সিয়াও মিং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন । এটা হল ব্রিটেনে চীনা রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব গ্রহণের পর তার অংশ নেয়া প্রথম অনুষ্ঠান । তিনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীন-বৃটেন সম্পর্কের গুরুত্বের দিকটি জোরালোভাবে উল্লেখ করে এবং প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেছেন । তিনি বলেন , আমি আন্তরিকভাবে আশা করি , ব্রিটেনের যুব বন্ধুদের মধ্যে যারা চীনা ভাষা শিখেছেন , শিখছেন বা শিখবেন , তারা চীনা ভাষা শেখার মাধ্যমে চীন সম্পর্কে আরো বেশি জানতে পারবেন , নিজের বন্ধুদের মধ্যে চীনের কথা প্রচার করবেন এবং চীন ও ব্রিটেনের বন্ধুত্বের দূত হিসেবে দু'দেশের সহযোগিতায় অংশ নেবেন ।
প্রতিযোগিরা নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিযোগিতায় পাশ করেই এ বাছাই পর্বে উঠেছেন । প্রতিযোগিতায় তারা চীনা ভাষায় ভাষণ দেয়া , চীন সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর ও নাচ-গান প্রদর্শনের মাধ্যমে চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায় উঠার চেষ্টা করেছেন । ভাষণ দেয়ার সময় ২০জন প্রতিযোগী নিজেদের চীন সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন । জার্মানী থেকে আসা রবার্ট ইশেরউড বলেছেন , তার চীনা ভাষা শেখার প্রধান উদ্দেশ্য হল সাংহাইয়ে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব- মেলায় একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা । তিনি বলেন , সাংহাই বিশ্বমেলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অংশ নেবে । আমরা সেখানে বিভিন্ন দেশের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন প্রদর্শনী দেখতে পাবো । আমি বিশ্বাস করি , বিশ্বমেলা চলাকালে আমরা যে কোনো দেশের প্রদর্শনী ভবন দেখতে যাই না কেন আন্তরিক সংবর্ধনা পাবো । ঠিক যেমন কনফুসিয়াস বলেছিলেন , বন্ধুরা দূর থেকে এসেছেন , এটা কত আনন্দের বিষয় ।
প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগিরা ছবি আঁকা , কুংফু দেখানো , গান গাওয়া , কবিতা আবৃত্তি ও নাটক পরিবেশনের মাধ্যমে চীনের সংস্কৃতির ওপর তাদের উপলব্ধি প্রকাশের চেষ্টা করেছেন । শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থমাস উইকস চীনে তার অভিজ্ঞতার কথা গানের মাধ্যমে ব্যক্ত করেছেন তিনি তার গানে বলেছেন , আমি মঞ্চে ওঠে আপনাদের জন্য গান গাচ্ছি । আমি একজন যাযাবর , চীনের বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যাই । বিদেশী বলে সবাই আমাকে লাও ওয়াই বলেন । আমার স্বপ্ন হল প্রাচ্যের রহস্য অন্বেষণ করা , আমি সব সময় বই , কাগজ ও কলম নিয়ে ঘুরে বেড়াই ।
প্রতিযোগিতা আনন্দময় পরিবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে । লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের আফ্রোশিয় ইন্সটিটিউটের স্টুওয়ার্ট জনসন ও লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাথু বেইলি পেইচিংয়ে সেমি ফাইনাল ও চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন । স্টুওয়ার্ট জনসন আনন্দের সঙ্গে সি আর আই সাংবাদিককে বলেন , আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমি এত ভালো সুযোগ পেতে পারি । এ বছরের গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে আমার পেইচিংয়ের যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল । তাই এ সুযোগে আমি পেইচিংয়ে চীনা ভাষা অধ্যয়নরত বিভিন্ন দেশের বন্ধুদের সঙ্গে বিনিময় করতে পারব । আমি আশা করি পেইচিংয়ে অনুষ্ঠেয় চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায়ও আমি পুরষ্কার পাবো । আমি আমার শিক্ষক চিং ফোং হাও ও চৌ চিং চিংকে ধন্যবাদ জানাতে চাই । তাদের সাহায্যে আমি বাছাই পর্বের প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছি ।
এ প্রতিযোগিতার বিচারক কমিটির প্রধান , ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর ইউয়ান পো পিং বলেন আমি মনে করি , চীনা ভাষার মান উন্নত করা ছাড়া প্রতিযোগিদের চীনের সংস্কৃতি , ভূগোল ও ইতিহাস সম্পর্কিত তথ্যও আয়ত্ত করতে হবে । এ ক্ষেত্রে প্রতিযোগিদের অগ্রগতি হয়েছে । আশা করি আগামী বছরের প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগিরা চীনের ইতিহাস , সংস্কৃতি , ভূগোল ও সমাজ সম্পর্কে আরো বেশি জানতে পারবেন ।
ব্রিটেনে চীনের দূতাবাসের মিনিস্টার থিয়েন সিয়াও কাং বলেন আমরা আশা করি আরো বেশি মানুষ চীনা ভাষা শিখবেন । এর ভিত্তিতে আমরা এটাও আশা করছি যে প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে আরো বেশি শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগির আবির্ভাব ঘটবে । তারা শুধু চীনা ভাষা জানেন , তা' নয় , তারা চীনের সংস্কৃতি তথা চীনের নাচ-গানও পরিবেশন করতে পারেন এবং চীন সম্পর্কিত অনেক কিছুই জানেন ।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |