ওয়াং আন শি'র জন্ম ১০২১ এবং মৃত্যু হয় ১০৮৬ খ্রীষ্টাব্দে । তিনি ছিলেন সেকালের উত্তর সুং রাজবংশের একজন বিখ্যাত রাজনীতিক , সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক । থাং ও সুং রাজবংশ আমলের আট জন বিখ্যাত সাহিত্যিকের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম । ওয়াং আন শি'র জন্ম একজন পদস্থ কর্মকর্তার বাড়িতে । তিনি ছোট বেলা থেকেই লেখাপড়া করতে পছন্দ করতেন । তার স্মরণ শক্তিও ছিল খুব ভাল । সুতরাং তিনি ছোট বেলা থেকেই উন্নত মানের লেখাপড়া করেছেন । ২১ বছর বয়সে তিনি কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন । তার পর তিনি পর পর আঞ্চলিক ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের কর্মকর্তা এমন কি প্রধানমন্ত্রীর পদেও নিযুক্ত হয়েছিলেন । বহু বছর কর্মকর্তার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি অনেক শিখেছেন । তিনি বুঝলেন , দেশ ও সেনাবাহিনী শক্তিশালী হতে হলে আইন ব্যবস্থার সংস্কার করা প্রয়োজন । আইন ব্যবস্থার সংস্কার চালু করার জন্য তিনি সম্রাটের কাছে আবেদন জানান । তার আবেদন অনুযায়ী সুং রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে আইন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে সংস্কার কর্মসূচী চালু করা হয় । ফলে সুং রাজবংশ ক্রমাগত সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠলো । ওয়াং আন শি'র ধারনা অনুযায়ী ধারাবাহিক নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। কৃষি , হস্তশিল্প ও বাণিজ্য এবং গ্রামাঞ্চল ও শহরের ব্যাপারে ব্যাপকভাবে সংস্কার চালু হয় । চীনের সেকাল ও পরের বংশধররা তাকে একাদশ শতাব্দির সবচেয়ে মহান সংস্কারক বলে অভিহিত করতেন ।
ওয়াং আন শি যেমন একজন বিখ্যাত রাজনীতিক , তেমনি তিনি ছিলেন একজন প্রতিভাবান সাহিত্যিক । দেশের প্রশাসনের ক্ষেত্রে তার চিন্তাধারা ও ধারনা বাস্তবায়নের জন্য তিনি রাজনৈতিক অনুশীলনের সঙ্গে সাহিত্যকর্ম চর্চা করতেন । তিনি জনগণ ও সমাজের সেবার ব্যাপারে সাহিত্যকর্মের ভূমিকার ওপর ব্যাপক গুরুত্ব দিতেন । তার সাহিত্যিক প্রতিভার কারণে শাসনকর্তা তার রাজনৈতিক ধারনার ওপর ব্যাপক গুরুত্ব দিতেন ।
সাহিত্যকর্মের ব্যাপারে ওয়াং আন শি মনে করতেন , প্রবন্ধ রচনা সমাজ ও জনসাধারণের জীবনযাপনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত । সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে সমাজের সমাজের বিভিন্ন বিরোধ ও সমস্যা তুলে ধরা প্রয়োজন । এতে সমাজের নানা রকম সমস্যারও সমাধান সম্ভব হবে ।
ওয়াং আন শি যে সাহিত্যকর্ম অনুশীলন করতেন , তাতে পুরোপরিভাবে তার রাজনৈতিক ধারনা প্রকাশ পেয়েছে । তিনি ছিলেন সমাজের সংস্কারের একনিষ্ঠ উদ্যোক্তা। তিনি তার প্রবন্ধে সম্রাটকে রাজবংশের সংস্কার চালু করার আহবানও জানাতেন । তার এ সব প্রচেষ্টা উত্তর সুং রাজবংশের আইন ব্যবস্থা এবং সাহিত্যকর্মের সংস্কারকে ত্বরান্বিত করার ব্যাপারে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে ।