Web bengali.cri.cn   
আমার স্বপ্ন ভবিষ্যত্ চীন-আর্জেন্টিনার শ্রোতা রিকার্ডো
  2009-11-09 15:48:30  cri

রিকার্ডও বালটেজার হুয়েটার একজন আইনজীবি । ৩১ বছর বয়সী রিকার্ডো ছোটবেলা থেকেই চীন সম্পর্কে জানতে অনেক আগ্রহী । তার একটি শখ হল আঞ্চলিক ম্যাগজিনের মাধ্যমে চীন সম্পর্কিত তথ্য আর্জেন্টিনার লোকজনকে জানানো । এর পাশাপাশি তিনি চীন ও স্পেনিস ভাষার একটি ওয়েবসাইট খুলেছেন এবং এ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তিনি আর্জেন্টিনার জনগণকে চীন সম্পর্কিত তথ্য জানান । তিনি বলেন , চীন দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে , তিনি মনে করেন তাঁর ভবিষ্যত চীনকে । তিনি আমাদের সংবাদদাতাকে চীনা ভাষায় নিজের পরিচয় দিচ্ছেন :

প্রিয় শ্রোতা বন্ধুরা , চীনের বন্ধুরা , সবাই ভালো আছেনতো ? আমি একজন আর্জেন্টিনো , আমার নাম রিকার্ডো বালটেজার হুয়েটার । আমি বরাবরই চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে আসছি । চীনের ইতিহাস , সংস্কৃতি ও অর্থনীতির উন্নয়ন সম্পর্কে আমি অনেক আগ্রহী ।

রিকার্ডো আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনেস আয়ার্সের ৩ শ' কিলোমিটার দূরের রোজারিও শহরে থাকেন । তার বাসায় চীনের বৈশিষ্ট্যময় বিভিন্ন জিনিস রয়েছে । চীনের প্রতি তার আগ্রহ সম্পর্কে তিনি বলেন , তার বাবা মার কাছ থেকে তিনি চীনকে জানতে শুরু করেছেন । তিনি বলেন :

আমার বাবা মার কাছ থেকে চীন সম্পর্কে আমি জানতে শুরু করি । তারা এশিয়ায় ভ্রমণ করতে গিয়েছিলেন এবং এ ভ্রমণে তারা যা দেখেছেন , আমাকে তা শোনান । চীন আর্জেন্টিনার সঙ্গে সম্পর্ক ভিন্ন রকমের । আমি এ দেশকে জানতে অনেক আগ্রহী । তখন থেকেই আমার ভবিষ্যত্ এশিয়ার সঙ্গে যোগ হয়েছে ।

২০০০ সালে রিকার্ডো রোজারিও রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ভাষা শিখতে শুরু করেন । ৪ বছর পর আর্জেন্টিনায় চীনের আয়োজিত "চীনা ভাষা সেঁতু" নামে একটি প্রতিযোগিতায় তিনি সব প্রার্থীকে পরাজিত করে বিজয়ী হন এবং আর্জেন্টিনার পক্ষ থেকে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য চীনে আসেন । সেবার হল তার প্রথম চীন সফর । ৬ মাসের মধ্যে রিকার্ডো চীনের সাংহাই ও নান চিংসহ বিভিন্ন বড় বড় শহর পরিদর্শন করেছেন । তিনি বলেন , চীনে আসার আগে চীনের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল শুধু প্রাথমিক পর্যায়ের । সে বার চীন সফরের পর তিনি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এ সিদ্ধান্তের কারণে চীনের সঙ্গে তার যোগাযোগ আগের চেয়ে আরো ঘনিষ্ঠ হয়েছে । তিনি বলেন :

আর্জেন্টিনা ফিরে যাওয়ার আগে আমি ভাবছি , চীনে আমি শুধু তিন চারটি প্রদেশে গিয়েছি এবং এরপর আর্জেন্টিনায় ফিরে যেতে হয় । যদি চীন সম্পর্কে আমার কোনো অনুভূতি না হয় , তাহলে সময় পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ অভিজ্ঞতা আস্তে আস্তে আমি ভুলে যাবো । তা হবে খুব দুঃখের ব্যাপার । আর্জেন্টিনা ফিরে যাওয়ার আগে এবং ফিরে যাওয়ার পথে আমি সবসময় এ বিষয়ে চিন্তা করি । এ প্রশ্নের উত্তর পরে আমি খুঁজে বের করেছি , তা হল ম্যাগাজিনে চীন সম্পর্কিত প্রবন্ধ প্রকাশ করা ।

আর্জেন্টিনা ফিরে যাওয়ার পর রিকার্ডো নিয়মিতভাবে "নিয়েমপো" নামে একটি মাসিক ম্যাগাজিনের জন্য প্রবন্ধ লিখেন । তিনি এসব প্রবন্ধে পাঠকদের চীনের অর্থনীতি ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয় জানান এবং নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে পাঠকদের চীন সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেন । তিনি বলেন :

আমার প্রবন্ধের অনেক পাঠক আছে । মজার ব্যাপার হল , অনেক পাঠকেই শুরুতে চীন সম্পর্কে শুধু অল্প কিছু জানতেন । আমার প্রবন্ধ পড়ার পর তারা জানতে পেরেছেন , চীনারা চপস্টিক্স ব্যবহার করে এবং চীনের অলিম্পিক গেমস ছাড়াও চীন সম্পর্কে আরো অনেক কিছু জানা দরকার । তারা আস্তে আস্তে চীন সম্পর্কে আরো গভীরভাবে উপলব্ধি করছেন । অনেক পাঠক আমাকে জানিয়েছেন যে আমার প্রবন্ধ তাদের চীন সম্পর্কে জানার জন্য অনেক সহায়ক হয়েছে । এ মাসের প্রবন্ধ পড়ার পর তারা আগামী মাসের প্রবন্ধের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন । আরো অনেকে আমার প্রবন্ধ নিয়ে তাদের বন্ধুদের দেখান । এমন খবর আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ।

২০০৪ সাল থেকে রিকার্ডো সি আর আই'র ওয়েবসাইট "সি আর আই অনলাইনের" মাধ্যমে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের অনুষ্ঠান শুনতে শুরু করেন। ২০০৭ সালে তিনি সি আর আই'র জ্ঞান যাচাই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে বিনা খরচে তিনি পুনরায় চীন ভ্রমণের সুযোগ পান । দ্বিতীয় বার চীনে আসার এ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে চীন সম্পর্কে তার যোগাযোগের উপায়েরও পরিবর্তন হয়েছে । তিনি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আর্জেন্টিনা জনগণকে চীন সম্পর্কে জানাতে শুরু করেন । তিনি বলেন :

আমার মনে হয় , আরো বেশি পদ্ধতির মাধ্যমে চীন সম্পর্কিত তথ্য জানাতে হবে । ২০০৭ সালে চীন থেকে দেশে ফিরে যাওয়ার তিন মাস পর আমি দু'টি ওয়েবসাইট স্থাপন করেছি । একটার নাম হল "মৈত্রী" , আরেকটির নাম হল "পর্যবেক্ষক" । এ দু'টি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নেট ব্যবহারকারীদের কাছে গভীরভাবে চীন সম্পর্কে জানাতে পারি । এখন গোটা ল্যাটিন আমেরিকা , স্পেন ও চীনের প্রায় এক হাজার লোক আমার ওয়েবসাইটে তাদের নাম অন্তভূক্ত করেছে । আমি নিয়মিতভাবে তাদেরকে চীন সম্পর্কিত বিভিন্ন ক্ষেত্রের ইমেইল পত্রিকা পাঠাই ।

রিকার্ডোর প্রচেষ্টায় এখন আরো বেশি আর্জেন্টিনার মানুষ আগের চেয়ে আরো ভালোভাবে চীনকে উপলব্ধি করছেন । চলতি বছর হল নয়া চীন প্রতিষ্ঠার ৬০ তম বার্ষিকী । নিজের চোখে চীনের সাফল্য সম্পর্কে রিকার্ডো বলেন :

চীন ৬০ বছরের সংস্কার করেছে । ৬০ বছরে চীনের সমাজে আকাশ পাতাল পরিবর্তন ঘটেছে । জনগণের শিক্ষা গ্রহণ হোক , জীবনযাপনের মান হোক , অথবা বিশ্বের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক হোক , অনেক পরিবর্তন হয়েছে । এর পাশাপাশি বিশ্ব চীনের উন্মুক্তকরণ নীতি চালু হওয়ার পর পাওয়া অগ্রগতি লক্ষ্য করেছে । ৬০ বছর আগের চীন সম্পর্কে আর্জেন্টিনা কিছুই জানতো না । তবে এখন এ দু'দেশের বিনিময় অনেক ঘনিষ্ঠ হয়েছে।

এখন রিকার্ড নতুন একটি চীন ও স্পেনিস ভাষার ওয়েবসাইট স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন । তিনি এ ওয়েবসাইটকে "চীনের তৈরি" নাম দিয়েছেন । তিনি পণ্যদ্রব্যের বিস্তারিত তথ্য ওয়েবসাইটে অন্তর্ভূক্ত করেন । চীন ও ল্যাটিন আমেরিকার শিল্প প্রতিষ্ঠান এ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে এবং বাণিজ্যিক সুযোগ খুঁজতে পারবে । এর পাশাপাশি রিকার্ডো এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে আইনগত সেবা দেয়ার মাধ্যমে নিজের ব্রত সম্প্রসারণ করতে চান ।

রিকার্ডো আগে ম্যাগাজিন ও ওয়েবসাইটে "১৩০কোটি কারণ" শিরোনামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন । তিনি বলেছেন , ১৩০ কোটি চীনা যেন চুম্বকের মত , ঐকবদ্ধ হয়ে তারা নিজের দেশ গঠনের জন্য চেষ্টা করছেন । তা গোটা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে । তিনি আশা করেন চীনের সঙ্গে নিজের ভবিষ্যত্ যুক্ত করবেন । তিনি চীনা ভাষায় নয়া চীন প্রতিষ্ঠার ৬০তম বার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন । তিনি বলেছেন :

চলতি বছর নয়া চীন প্রতিষ্ঠার ৬০তম বার্ষিক । আমি চীনের আরো সমৃদ্ধি হোক তা কামনা করি । আশা করি চীনাদের জীবন আরো সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে । (শুয়েই ফেই ফেই)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040