|
চীনের হান রাজবংশ আমলে( খৃষ্টপূর্ব ২০৬ থেকে ২২০ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত ) সিয়াও বাদ্যযন্ত্রকে 'ছাং বাঁশি' বলা হয় । কারণ পশ্চিম চীনের সিছুয়াং ও কান সু প্রদেশে বসবাসকারী ছাং জাতির মানুষ ছাং বাঁশি নামে বাদ্যযন্ত্র বাজাতেন । খৃষ্টপূর্ব প্রথম শতাব্দিতে এ বাদ্যযন্ত্র হোয়াং হো নদীর অববাহিকায় প্রচলন হয় । ধীরে ধীরে এ ধরনের বাদ্যযন্ত্র ৬টি ছিদ্র বিশিষ্ট বাদ্যযন্ত্রে পরিণত হয়েছে । এটা আজকের সিয়াও বাদ্যযন্ত্রের খুব কাছাকাছি বলে মনে করা হয় ।
সিয়াও বাদ্যন্ত্রের কাঠামো অপেক্ষাকৃত সহজ। তার আকার এখনকার সাধারণ বাদ্যযন্ত্র বাঁশির মতো । এ ধরনের বাদ্যযন্ত্র একটি বাঁশের নল দিয়ে তৈরি করা হয় । সিয়াও বাদ্যযন্ত্র সাধারনতঃ বেগুণী বাঁশ , হলুদ বাঁশ ও সাদা বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয় । সিয়াও বাদ্যযন্ত্রের দৈঘ্য সাধারণ বাঁশির চেয়ে একটু লম্বা । বাঁশির উপরের দিকে বন্ধ , উপরের দিকের পাশে এক জায়গায় সংগীত বাজানোর জন্য একটি ছিদ্র সৃষ্টি করা হয় । বাঁশির শরীরে ৫টি ছিদ্র রয়েছে । সংগীতের সুর বাজানো এ ৬টি ছিদ্রের ওপর নির্ভর করে । অন্য দিকে বাঁশির পেছনের দিকে সংগীত বাজানোর জন্য ৩ থেকে ৪টি ছিদ্র আছে । এ সব ছিদ্রের মাধ্যমে সংগীতের সুরের পরিবর্তন করা যায় । ফলে সংগীতের সুর আরো সুন্দর এবং সংগীতের সুরের শব্দ আরো বড় হয়ে ওঠে।
সিয়াও বাদ্যযন্ত্র অনেক রকমের । সাধারনতঃ তাকে বেগুণী সিয়াও , ইউবিং সিয়াও ও চুওচিয়েন সিয়াও-তিন ধরনের সিয়াওতে বিভক্ত করা হয় । বেগুণী সিয়াওয়ের শরীর একটু মোটা , সংগীতের সুর বাজানো হয় একটু নিম্নস্বরে । ইউবিং সিয়াও তৈরী করা হয় চীনের কুইচৌ প্রদেশের ইউবিং জেলায় । ওটা স্থানীয় বাঁশ দিয়ে বিশ বাইশটি কাজের প্রক্রিয়াকরণের মধ্য দিয়ে তৈরি করা হয় । এ ধরনের বাদ্যযন্ত্রের বাইরের দিক পাহাড় ও পানি এবং ফুল ও পাখির নক্সায় ভাস্কর্য করা হয় । ১৮৯৬ সালে ও ১৯১৩ সালে লন্ডন ও পানামা আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে ইউবিং সিয়াও বাদ্যযন্ত্র যথাক্রমে স্বর্ণ ও রৌপ্য পুরস্কার পেয়েছে । এ ধরনের দু'টো বাদ্যযন্ত্র প্রথম বারের মতো বিশ্বের শীর্ষ মর্যাদা লাভ করেছে । সিয়াও দিয়ে বাজানো সংগীতের সুর শ্রোতাদের ব্যাপক আকর্ষণ করে । তার সুন্দর সুরে প্রকৃতির সৌন্দর্যময় পরিবেশ ও মানুষের আনন্দঘন আবেগ ফুটে উঠেছে ।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |