|
মাথুয়ানের ইতিহাস দক্ষিণ চীনের ফুচিয়ান প্রদেশের হাক্কাস লোকের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। প্রাচীনকালে চীনের ফুচিয়ান প্রদেশের হাক্কা লোকেরা দারিদ্রতার ভেতর জীবনযাপন করছিল। অতিথি আসলে কোনো সুস্বাদু খাবার দিয়ে অভ্যের্থনা করতে পারতো না, ফলে তারা ভাবছিল ঠান্ডা ভাত নরম করার পর বাদামের গুড়ো, চিনি দিয়ে মাথুয়ান তৈরী করার পর তা দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করা যায়, আর তা হল মাথুয়ানের সবচেয়ে পুরনো ধারণা। পরে এ খাবার আরও সুস্বাদু করার জন্য তারা আদার স্লাইস দিয়ে লাল চিনির সঙ্গে মিশিয়ে রস সিদ্ধ করলো, তারপর এ রস মাথুয়ানের উপর দিল, তারপর তা খেলে আরও মজার হলো এবং এ রসসহ মাথুয়ানের আরেকটি নাম হল নিউ ওয়েন শুই। ১৯৮৬ সালের অক্টোবর মাসে বৃটিশ রাণী এলিজাবেথ দ্বিতীয় চীনে সফরকালে তাঁকে অভ্যের্থনা জানানোর জন্য এ মিষ্টি খাবার স্বাগত ভোজে ব্যবহার করা হয়েছে এবং তিনি এ খাবার বেশ পছন্দ করছিলেন।
সুস্বাদু মাথুয়ান তৈরী করলে ভালো কাঁচামাল প্রস্তুত করতে হবে। গুণগতমানের আঠালো ময়দা, চিনি ও গরুর চর্বি এবং সুগন্ধী সাদা সিসেমের বাছাইও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি সিসেমের গুণ ভালো না হয়, তা ভাজার পর মাথুয়ানের উপর সহজে স্পট দেখা যায়, তা দেখতে সুন্দর লাগে না।
মাথুয়ানের গল্প শোনার পর এখন আমি আপনাদেরকে তা রান্নার উপায় জানিয়ে দিচ্ছি। আঠালোর ময়দা ৫০০ গ্রাম, চিনি ১০০ গ্রাম, গরুর চর্বি ৫০ গ্রাম, লাল ডালের পুর ১৫০ গ্রাম, সাদা সিসেম ১০০ গ্রাম, লাল চিনি ১০০ গ্রাম, বাদাম তেল ৫০০ গ্রাম ও অল্প পরিমাণের সোডা গুড়ো প্রস্তুত করুন। প্রথমে এক বড় সাইজের পেয়ালায় আঠালো ময়দা, চিনি, গরুর তেল ও ২৫০ গ্রাম গরম পানি দিয়ে পিন্ড তৈরী করুন, বিশেষ করে চিনি গরম পানিতে মিশ্রিত হওয়ার পর আঠালো ময়দার সাথে মেখে নেয়া যায়। তাছাড়া, চিনি'র পরিমাণ অত বেশি হবে না, নইলে তা ভাজার সময় সহজে সোনালী রঙ দেখা যাবে, তবে ভিতরে গরম না হলেও, ধীরে ধীরে তা ভিতরে গরম হওয়ার সময় বাইরে কালো হয়ে যাবে, তা খেতে মজা লাগবে না। পিন্ড তৈরীর পর কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে, একটু পরে পিন্ড দিয়ে ৯০ গ্রাম অর্জনের ছোট তুকরা কাটান, তা গোল আকার তৈরী করার পর এর মাঝখানে ১৫ গ্রামের লাল ডালের পুর অথবা কালো সিসেমের পুর রাখুন, তারপর বলের মতো পিন্ড টুকরা পেচিয়ে নিন। তারপর বলের বাইরে সাদা সিসেম রাখুন। পাত্রে বাদাম তেল রাখুন, তা একটু গরম হওয়ার পর মাথুয়ান ভাজুন, মাথুয়ান পরস্পরের সাথে যাতে না লেগে যায় তা এড়ানোর জন্য অব্যাহতভাবে তা পাত্রের ভেতর নাড়তে হবে, কয়েক মিনিট পর মাথুয়ানের সাইজ আগের চেয়ে বড় হয়ে যাবে, তখন প্রজ্জ্বলিত আগুণে তা ভাজুন, তখন মাথুয়ানের বাইরে একটু শক্ত হবে, তখন তা প্লেটে রাখুন। এভাবে সুস্বাদু মাথুয়ান তৈরী শেষ হবে।
মাথুয়ানের সুগন্ধী ও সুস্বাদু অনুভব করার জন্য আপনারা অবশই গরম গরম মাথুয়ান খেতে হবে। তা আঠালো দিয়ে তৈরীর কারণে সহজে ডাইজেস্ট হবে না, এ কারণে পাকস্থলীর স্বাস্থ্যের জন্য বেশি পরিমাণের মাথুয়ান খাবেন না।
এখন ঢাকার চীনা রেস্টোরাঁয় মাথুয়ান পাওয়া যায়, যদি আপনারা তা খেতে চান, তাহলে সময় পেলে একটু চেষ্টা করুন, খেয়ে দেখুন তা মজার কিনা।
(সুবর্ণা)
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |