|
এ ডিশের কেন দুটি নাম আছে? এ সম্পর্কে একটি গল্প রয়েছে। কাহিনী অনুযায়ী, প্রাচীনকালের ছিং রাজবংশের একজন বিখ্যাত রাজার নাম ছিয়ান লোং। তিনি সবসময় রাজপ্রাসাদ থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করেন অথবা পরিদর্শনে যান। তখন তিনি সবসময় নিয়মিত সাধারণ নাগরিকের পোশাক পড়ে রাস্তায় হেঁটে হেঁটে চলেন। একদিন যখন তিনি চিয়াং সু প্রদেশের ছাংসু শহরে আসার পর, তাঁর সাথে থাকা সব টাকা পয়সা হারিয়ে যায়। টাকা ছাড়া তিনি খাবার কিনতে পারেন না। উপকন্ঠ এলাকায় হেঁটে হেঁটে তার অনেক ক্ষিদে লেগে যায়, তখন ছিয়ান লোং রাজা একজন ভিক্ষুকের সাথে দেখা পান। ভিক্ষুক তাঁকে দেখে বুঝতে পারে যে সে অনেক দিন খাবার খায় নি। ফলে এ ভিক্ষুকটি তখন মুগরী, মাটি ও শাপলার পাতা দিয়ে ভিক্ষুক মুরগী রান্না করেন। রাজা ছিয়ান লোং এ ডিশ খেয়ে অনেক মজা পান এবং ভিক্ষুককে এ ডিশের নাম জিজ্ঞেস করেন। ভিক্ষুক মনে করেন এ ডিশের পুরনো নাম ভিক্ষুক মুরগী শুনতে হয়তো তার ভালো লাগবে না, এ জন্য তাকে ধনী মুরগী বলে তাকে জানান। তখন থেকেই ভিক্ষুক মুরগী ও ধনি মুরগী এ দুটি নাম হয়েছে।
পরে লোকজন জানতে পারেন যে, সেইদিন ভিক্ষুক মুরগী খাওয়া লোকটি ছিলেন রাজা ছিয়ান লোং। এ কারণে ভিক্ষুক মুরগী একটি বিখ্যাত ডিশ হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে যায়।
গল্প শোনার পর এখন আমি আপনাদেরকে এ ডিশ রান্নার পদ্ধতির ওপর কিছু তথ্য দেবো। প্রথমে একটা সম্পূর্ণ ছোট মহিলা মুরগী রান্নার উপযোগী করে কেটে নিন, এর ওজন হবে প্রায় ১০০০ গ্রাম। এ মুরগীর মুখ, পাঁ ও পালক সবই হলুদ রংয়ের হলে সবচেয়ে ভালো। মুরগীর টুকরা ৫০ গ্রাম, চিংরি মাছ ৫০ গ্রাম, গরুর মাংস ১০০ গ্রাম, মাশরুম ২০ গ্রাম, তেল ৪০০ গ্রাম, বড় সাইজের শাপলার পাতা ৪ পিস এবং মাটি ৩০০০ গ্রাম।
তাছাড়া, ৫ গ্রাম লবণ, ২০ গ্রাম চিনি, আরও ১০০ গ্রাম তেল, ২৫ গ্রাম পেঁয়াজের গুড়ো, ১০গ্রাম আদার গুড়ো, লবঙ্গ ৪টা, চীনা পেয়াঁজ ৫০ গ্রাম, মিষ্টি ডালের সস, এ সস আমরা পিকিং রোস্ট ডাক খাওয়ার সময় খাই এবং সিসিমের তেল ৫০ গ্রাম লাগবে।
রান্নার পদ্ধতি:
১. মুরগী ধোয়ার পর সয়া সস, চীনা ভিনেগার, লবঙ্গের গুড়ো এবং লবণ দিয়ে গোটা মুরগীর বাইরে ও পেটের ভিতরে হালকা আস্তরণ করে ফেলুন । এক ঘন্টা পর, এ সব উপকরণের স্বাদ মুরগী মাংসের সঙ্গে মিশে যাবে।
২. রান্নার পাত্রের মধ্যে তেল রেখে পেঁয়াজ ও আদার গুড়ো ভেজে নিন, তারপর মুরগীর টুকরা, গরুর মাংস, চিংড়ি মাছ ও মাশরুমের টুকরা দিয়ে ভেজে নিন, ভাজার পর পাশে রাখুন।
৩. মুরগীর পাখার দু'পাশে দুটি লবঙ্গ স্থাপন করুন। মুরগীর গায়ে তেল মেখে নিন, শাপলার পাতা দিয়ে তা একত্রে মুড়িয়ে নিন। বাইরে গ্রাসিন দিয়ে আরেকবার পেচিয়ে নিন।এর বাইরে শাপলার পাতা দিয়ে আরেকবার মুড়ে নিন এবং সুতা দিয়ে তা বেধে নিন।
৪.মাটি ও পানি একসাথে মিশিয়ে নিন, তরল কাপড়ের ওপর ১.৫ সেন্টিমিটার উঁচু করে মাটি মেখে নিন এবং মুরগী মাটির মাঝখানে রাখুন। তরল কাপড়ের চার দিক নিয়ে মুরগীকে পেচিয়ে নিন,এভাবে মাটি মুরগীর সঙ্গে মিলে যাবে। সবশেষে তরল কাপড় নিয়ে যাবেন এবং গ্লাসিন দিয়ে তা পেচিয়ে নিন।
৫.পেচানের পর মুরগীটি ওভেনের প্রবল আগুণে ৪০ মিনিট রোস্ট করেন, যদি মাটি ভেঙ্গে যায়,তাহলে আবার তরল মাটি দিয়ে ফাকা জায়গা ভরাট করে নিন। আরও ৩০মিনিট প্রবল আগুণে রোস্ট হওয়ার পর হালকা আগুণে ৯০ মিনেট রোস্ট করেন এবং সবশেষে হালকা আগুণ দিয়ে ৯০ মিনেট রোস্ট করেন।
৬. মুরগী ওভেন থেকে নেয়ার পর, মাটি ভেঙ্গে নিন। শাপলা পাতা, গ্রাসিন সব ফেলে দিন, মুরগী মাংসের ওপর সিসিম তেল মেখে নিন। আর এ ভাবেই ভিক্ষুক মুরগী রান্নার পর খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। কি বন্ধুরা, খুব মজা হয়নি কি?
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |