Web bengali.cri.cn   
হাংচৌয়ের ময়দা খাবার--বিড়ালের কান
  2011-01-26 15:57:28  cri

    গত কয়েক সপ্তাহে আমি আপাদের জন্য চীনের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান হাংচৌ শহরের কয়েক রকম খাবারের গল্প জানিয়ে দিয়েছি। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে হাংচৌ শহরের আরেকটি সুস্বাদ্যু খাবার মাও এর ডুও অর্থাত্ বিড়ালের কানের গল্প ও রান্নার উপায় জানিয়ে দেবো।

    আপনারা এ খাবারের নাম শোনার পর খুব আশ্চর্য হয়েছেন কি? কেন এ খাবারের নাম বিড়ালের কান বলে ডাকে? আসলে তা প্রাচীনকালের একটি কাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কিত। কাহিনী অনুযায়ী প্রাচীনকালের ছিং রাজবংশের রাজা ছিয়ানলোং হাংচৌ সফরকালে তিনি সাধারণ অধিবাসীর কাপড় পড়ে পশ্চিম হ্রদের একটি ছোট নৌকায় বসে বসে সেখানকার সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করেছিলেন। তখন আবহাওয়া হঠাত্ পরিবর্তন হয়েছিল, আকাশ থেকে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি হচ্ছিল। সবাই তাড়াতাড়ি ছোট নৌকার ছাদের নিজে বসে বৃষ্টি থামার অপেক্ষা করেছিলেন। তবু সময় চলে যায় কয়েক ঘন্টার মত, বৃষ্টির ধারা আরও বেড়ে গেছে। তখন রাজা ছিয়ানলোং'র অনেক খিদে লাগে, ফলে তিনি নৌকার জেলেকে জিজ্ঞেস করেন নৌকায় কোন খাবার আছে কিনা? জেলে উত্তর দেয় যে ময়দা আছে তবে বেলুন নেই। এ জন্য নুডল তৈরী করতে পারা যাবে না। সে সময় জেলের নাতনী একটি ছোট বিড়াল কোলে করে নিয়ে এসেছিল এবং বলেছিল বেলুন না থাকলে আমি হাত দিয়ে তৈরী করবো। ফলে ছোট মেয়ে হাত দিয়ে ময়দা মাড়িয়ে নিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে দিয়েছিল। তারপর হাতের আঙ্গুল দিয়ে ছোট টুকরাগুলো চেপে চেপে চ্যাপ্টা করে। তা দেখতে ঠিক বিড়ালের কানের আকারের মতো। ছোট মেয়ে এ আকারের নুডলস পাত্রে সিদ্ধ করার পর চিংড়ি মাছ ও অন্যান্য সবজি দিয়ে তৈরী সস রান্না করে এবং নুডলসের ওপর রাখে। রাজা ছিয়ানলোং এ খাবার খেয়ে অনেক পছন্দ করেন। উনি ছোট মেয়েকে এ খাবারের নাম জিজ্ঞেস করেন, ছোট মেয়েটি উত্তর দেয়, এর নাম হচ্ছে বিড়ালের কান। তখন থেকেই বিড়ালের কান অনেক বিখ্যাত হয়ে যায়। জানা গেছে, ইতালির পর্যটক মার্কো পোলো চীন সফরকালে এ খাবার রান্নার উপায় শিখিয়েছিলেন এবং তা অনুযায়ী ইতালির বিখ্যাত খাবার স্প্যাগেটি আবিষ্কার করেছিলেন।

    আচ্ছা, বন্ধুরা, বিড়ালের কানের গল্প শোনার পর মজা পেয়েছেন কি? এখন আমি আপনাদের জন্য এ ডিশ রান্নার উপায় জানিয়ে দিচ্ছি। প্রথমে ময়দা, চিংড়ি মাছ, মুরগীর মাংস, মাশরুম, বাঁশের কোঁড়, শাক সবজি, হলুদ মদ, চীনা পেঁয়াজ, আদার স্লাইস, মুরগীর সুপ এবং মুগরীর তেল প্রস্তুত করুন।

    ময়দা ও পানির সঙ্গে মেশান এবং আঙ্গুলের সাইজের মতো তৈরী করুন, তারপর ছোট ছোট টুকরা করুন। আঙ্গুলে মুরগীর তেল দিয়ে মুছে ফেলেন, বিড়ালের কানের আকারের মত টুকরাগুলো ভাজ করুন।

    পেয়ালার মধ্যে চিংড়ি মাছ, মুরগীর মাংসের টুকরা, মাশরুমের ছোট স্লাইস, হলুদ মদ, চীনা পেঁয়াজ, আদার স্লাইস ও পানি রাখুন, তা পাত্রের মধ্যে রেখে কয়েক মিনিট জাল দিন। উল্লেখ্য যে, সব উপকরণ ও খাবার ছুরি দিয়ে আঙ্গুলের নখের সাইজ অনুযায়ী কাটেন।

    মুরগীর সুপ দিয়ে পাত্রে রাখুন, এর মধ্যে চিংড়ি মাছ, মুরগীর টুকরা, মাশরুমের স্লাইস ও বাঁশের কোঁড় মিশিয়ে একসাথে সুপের মধ্যে সিদ্ধ করুন। তারপর বিড়ালের কানগুলো দিয়ে দিন। কয়েক মিনিট পর সুপ আবার টগবগ করে ফুটতে থাকার সময় শাক সবজি দিন। অবশেষে অল্প পরিমাণের গরম মুরগী তেল দিন। নুডলস জাতীয় এ খাবারের আকার বিড়ালের কানের মতো, ছোট ও নরম, মুরগীর টুকরা এবং চিংড়ি মাছ মুরগী সুপের মধ্যে সিদ্ধ হওয়ার পর তা আরও সুস্বাদু ও মজাদার লাগে। তা শিশু ও বয়সী লোকের জন্য অনেক পুষ্টিকর ও সহায়ক। সময় পেলেই আপনারা তা রান্না করুন এবং খেয়ে দেখুন মজার কিনা।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040