|
সাংহাই বিশ্ব মেলার অস্ট্রিয়া প্যাভিলিয়নের উপ সাধারণ ব্যবস্থাপক মাদাম বার্গিট মুর বলেছেন, পর্যটকরা প্রাণভরে বরফ ও তুষারের আনন্দ উপভোগ করার জন্য অস্ট্রিয়া প্রথম প্রদর্শনী কেন্দ্রের তাপমাত্রা মাইনাস ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বজায় রাখবে। তিনি বলেন,
দর্শকরা প্রদর্শনী কেন্দ্রের এক তলায় প্রবেশ করলে পাহাড়ে হাজির হয়। খুবই ঠাণ্ডা লাগবে। প্যাভিলিয়নের একটি বরফের জায়গা আছে। সেখানে সত্যিকারের তুষার ছড়িয়ে থাকবে। দর্শকরা তুষার খেলতে বা তুষারের বল বানাতে পারবেন। এছাড়া তারা তুষার বল দেয়ালে ছুড়ে মেরে খেলতেও পারবেন। দেয়ালে কিছু প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হবে। ফলে দর্শক ও প্যাভিলিয়নের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ হবে।
প্রযুক্তিবিদ-এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী দেয়াল পর্যটকদের ছুড়ে মারা তুষার বলের গতি প্রত্যক্ষ করে দেয়ালে বিভিন্ন ধরনের ছবির সৃষ্টি করবে। তাহলে কীভাবে গ্রীষ্মকালে নিম্ন তাপমাত্রা এবং বরফ ও তুষারের আবরণ সৃষ্টি করা যায়? প্রযুক্তিবিদরা ব্যাখ্যা করে বলেছেন, তারা তরল বরফ জমা প্রযুক্তি ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে এ প্রদর্শনী অঞ্চলের তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি বজায় রাখবেন।
অস্ট্রিয়া প্যাভিলিয়নের প্রদর্শনী পক্ষ প্রথমবারের মত দর্শনশক্তি শিল্পী দলকে আমন্ত্রণ করে পুরো প্রদর্শনী কেন্দ্রের অডিও ও ভিডিও আবহ সৃষ্টি করবে। ৬০টিরও বেশি প্রজেকটর এবং ১০ লাখেরও বেশি আবর্তনশীল রেখাচিত্রের মধ্য দিয়ে ত্রিমাত্রিক মহাশুণ্যে 'শহর ও গ্রামের পারস্পরিক যোগাযোগ' জীবনযাপনকে তুলে ধরা হবে। যাতে একটি সত্যিকারের অস্ট্রিয়াকে প্রদর্শন করা যায়।
আলপস পাহাড়ের বরফ ও তুষার বিশ্ব থেকে বেড়িয়ে পাহাড়ের নিচে গিয়ে আমরা অস্ট্রিয়ার বন বিশ্বে পৌঁছে এলাম। বন অস্ট্রিয়ার প্রায় অর্ধেক ভূ-সম্পদকে আবৃত করে আছে। সাংহাই বিশ্ব মেলার অস্ট্রিয়া প্যাভিয়িলনে এ দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রদর্শনী কেন্দ্রে বনের সতেজ বাতাস, বিভিন্ন ধরনের চিরল পাতার গাছ ও বৃহদাকার পাতার গাছ, ব্যাঙের ছাতা প্রাকৃতিক সুগন্ধ ছড়িয়ে দেয়। গাছের পাতার এবং পাখির কিচিরমিচির শব্দের সাথে মানুষের শিস এখানে সেখানে ধ্বনিত হয়। বনে আলো ও ছায়ার পরিবর্তন ছাড়া অডিও'র সমন্বয়ও আছে। মাদাম বার্গিট মুর ব্যাখ্যা করেন,
পাহাড় ত্যাগ করার পর বনে প্রবেশ করা যায়। এখানে ভিন্ন শব্দ শোনা যায়। যেমন, পাখির কিচিরমিচির, কুকুরের ডাক এবং মানুষের শিসের শব্দ। বনাঞ্চলে দর্শকরা বনের চার ঋতু'র বিভিন্ন অনুভুতিও অনুভব করতে পারেন। এখানকার দেয়াল দর্শকদের স্পর্শ প্রত্যক্ষ করার সময় প্রতিচ্ছবি হয়ে ফুটে উঠবে।
গ্রামের আমেজ ছাড়া দর্শকেরা অস্ট্রিয়ার নগর পরিবেশও অনুভব করতে পারবেন। নগর অঞ্চলে মোজার্ট ও স্ট্রাউস-এর অস্ট্রিয়া কন্সার্ট সবাইকে স্বাগত জানাবে। এখানে অস্ট্রিয়ান মানুষের নগর পরিবহন, কিছু পরিবেশ সংরক্ষণ প্রযুক্তি, বিকল্পযোগ্য জ্বালানী সম্পদ ও সৃজনশীল শিল্পও এক সঙ্গে প্রদর্শিত হবে।
অস্ট্রিয়ার মানুষ চীনের সঙ্গে সাংস্কৃতিক যোগাযোগের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়। চীনে বিশ্ব মেলা আয়োজন করা অবশ্যই চীনের বৈশিষ্ট্য রূপায়িত করতে হবে। সুতরাং ডিজাইনার প্রদর্শনী কেন্দ্রের বাইরের দেয়ালে দু'দেশের সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে চীনা-মাটি ব্যবহার করেছেন। চীনা মানুষের 'প্রতি বছর নিরাপত্তা'র ধারণা প্রতিফলন করার জন্য তারা বিশেষ করে ১ কোটি লাল ও সাদা রঙের চীনা-মাটির টুকরো অংশ দেয়ালে লাগিয়ে ম্যূরাল তৈরী করেছে। ডিজাইনার মাটিয়া ডেল ক্যাম্পো বলেন,
অস্ট্রিয়া হচ্ছে ইউরোপের সবচেয়ে প্রাচীন চীনা-মাটি তৈরীর দেশ। অস্ট্রিয়া চীনা-মাটির ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। সুতরাং আমরা দু'দেশের সংস্কৃতির অভিন্ন বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করতে চাই। শুনেছি চীনে চীনা-মাটির টুকরো হচ্ছে কল্যাণমূলক বস্তু। সুতরাং আমরা এখানে ১ কোটি চীনা-মাটির টুকরোকে সংযুক্ত করেছি।
এছাড়া অস্ট্রিয়া চীনা অক্ষর 'মানুষ' এবং অস্ট্রিয় ভাষার প্রথম অক্ষর 'এ' প্রদর্শনী কেন্দ্রের প্রতীক হিসেবে দু'দেশের সংস্কৃতির সংমিশ্রণে প্রদর্শিত হবে।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |