|
হেইলুংচিয়াং চীনের অন্যতম একটি প্রদেশ, যার রাশিয়ার সংগে রয়েছে অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিজ্ঞান এবং কারিগরি ক্ষেত্রের সহযোগিতা। সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার সুবিধা ছাড়াও হেইলুংচিয়াং উত্তর পূর্ব এশিয়া এবং পার্শ্ববর্তি রাশিয়াসহ দূর প্রাচ্যের সংগে সহযোগিতার সুবিধা পাচ্ছে। বিশেষ করে রাশিয়ার সংগে তার তিন হাজার আটত্রিশ কিলোমিটারের একটি বিশাল সীমান্ত এলাকা রয়েছে। যার সুবিধাকেও কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে। এ সীমান্ত বরাবর হেইলুংচিয়াংয়ের হাইহা (), সুইফেনহা () এবং তুংলিং এ জেলায় চীনের শীর্ষ সারির ২৫টি উন্মুক্ত বন্দর রয়েছে। চীন সরকারের অনুমোদনের পর হেইলুংচিয়াংয়ের সুইফেনহা এবং হেইশিয়াযি () দ্বীপ রাশিয়ার সংগে পারষ্পরিকভাবে উন্মুক্ত বাণিজ্যিক এলাকা গঠনের কাজ চলছে। একই সংগে এ অঞ্চলের অন্যতম থুংচিয়াং হেইলুংচিয়াং নদীর ওপর যোগাযোগের সেতুটিও এখন নির্মাণাধীনদ রয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে হা- মু-সুই-তোং প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে রাশিয়ার সংগে সহযোগিতায় একটি বাণিজ্যিক এলাকা নির্মাণের কাজও চলছে।
হেইলুংচিয়াং প্রদেশের রয়েছে প্রাচীন ইতিহাস ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতি। এ অঞ্চলে তিরিশ থেকে চল্লিশ হাজার বছর আগের মানব সভ্যতার ইতিহাসও রয়েছে। প্রাক ছিন () রাজত্বকালে এ অঞ্চলে তিনটি বৃহত্ পরিবার শাসন করতো। তারা হলো সুসেন (), খুয়াইডমো () এবং তুংহু ()। হান ডাইনাস্টির সময় সুসেন পরিবারটি ইলৌ (), ওয়েই () ও চিন () ডাইন্যাস্টির সময় উচি, সুই ও থাং ডাইনাস্টির সময় মোহা ()। আর এভাবেই ছিং ডাইনাস্টির সময় থেকে মাঞ্চু () হিসেভে পরিচিতি পেতে শুরু করে। বলতে গেলে মাঞ্চু সংস্কৃতির শুরু সেই সময়কাল থেকেই। হেইলুংচিয়াং অভিবাসী লোকজনের জন্য একটি উন্মুক্ত ও নিরাপদ এলাকা। এ প্রদেশে প্রায় দশটি জাতি রয়েছে। এর মধ্যে মাঞ্চু, কোরিয়ান, হুই, মঙ্গোলীয়, তাউর, শিবা, অরোছেন, হাচেন, ইওয়েন্কি এবং কিরগিজ জাতি। এসব জাতির চীনের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও উন্নয়নের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ রাস্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সুদুর অতীতকাল থেকেই বিশেষ অবদান রয়েছে। মিং ডাইন্স্টির শেষ দিক থেকে শুরু করে ছিং ডাইনাস্টির শুরুর দিকে তাউর অধিবাসিরা প্রথমবারের মত রাশিয়ার জারের বিরুদ্ধে দক্ষিণ মুখি সংগ্রাম শুরু করেছিল। এ প্রদেশে চায়না-ইস্টার্ন রেলওয়ে নির্মাণের পর থেকেই এখানে রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি ও পোলিশরা তাদের ব্যবসা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আসতে শুরু করে । যে কারণে রাজধানী 'হারবিন' পরিচিত হয়ে ওঠে পূর্বের প্যারিস হিসেবে আর পশ্চিমের মস্কো হিসেবে। এটা সত্যি যে, চীনের প্রথম সিনেমা হল এবং সৈনিকদের সমন্বয়ে প্রথম ব্যালে নৃত্য ও প্রথম সিম্ফনি অর্কেস্ট্রার শুরু এখান থেকেই; যা জাপানী আগ্রাসন প্রতিরোধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
(চলবে) –আ বা ম ছালাউদ্দিন।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |