|
আরেকটি পার্ক হলো সেন্ট্রাল পার্ক (Central Park)। এটি পুরানো শহরের মাঝখানে অবস্হিত। এ পার্কটি শহরের প্রায় কেন্দ্রস্হলে অবস্হিত হওয়ার কারণে বেশিরভাগ সময় এখানে পিকনিকের মত পারিবারিক অনুষ্ঠানের আয়োজন বেশি হয়ে থাকে। তবে একটু সময়ের জন্যেও এতটুকুন ময়লা দেখা যাবে না কোথাও। সেন্ট্রাল পার্কে মানুষের ঢল নেই বছরে এমন কোনদিন পাওয়া যাবে না। সব সময়ই যেন লোকে লোকারণ্য। বিরাটাকরের এ পার্কটিতে রয়েছে নানা ধরনের অসংখ্য ফুলের সমাহার। বিভিন্নি আকৃতিতে এসব ফুলের সমাহারকে সাজিয়ে রাখা হয়েছে সারা পার্কের শরীর জুড়ে। রয়েছে বিশাল বিশাল সব পাহাড়ী পাথরের বাগান। এ পার্কটির আরেকটি বৈশিস্ট হলো তার গাছের সারি। এখানে বহু বছরের পুরানো অনেক বড় বড় গাছ রয়েছে। এসব গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়াও যেন মহা আনন্দের। এখানে দেখা যায় আমাদের দেশের দোয়েলের মত অবিকল এক ধরনের বড় বড় পাখি। আর চরুই পাখির কিচির মিচিরতো সারা চীন জুড়েই কানে সুর ছড়ায়।
সবাইকে নিয়ে আনন্দ বিনোদনের জন্য রয়েছে যে পার্কটি তার নাম হলো শুইশাং পার্ক (Shushang Park)। এটি থিয়েনচিন থেকে বেশ কিছুটা দূরে প্রাকৃতিক বনাঞ্চলকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে। এখানে আসলে গভীর সবুজ বনের ভেতর বাতাসে ঢেউ তোলা পানির ছন্দের ভেতর হারিয়ে যাবার অনুভূতির আমেজ পাওয়া যাবে। বিশেষ করে বিকেল বেলায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে বা প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে লেকের পানিতে পায়ে চালানো ছোট ছোট নৌকায় ঘুরে বেড়ানো সত্যিই রোমাঞ্চকর ও আনন্দের। এ পার্কে রয়েছে একটি বই সমৃদ্ধ পাঠাগারও। ইচ্ছে করলেই হারিয়ে যাওয়া যাবে নেশার মত গল্পের জগতে। সন্ধ্যার আবছায়া আলোতে মনে হয় যেন স্বর্গীয় সুখের মধ্যে ডুবে আছি।
থিয়েনচিনে আমরা যখন ক্লান্তিহীন ঘুরে বেড়াচ্ছি আমরা দেখেছি কোন কিছুরই কমতি নেই এখানে। উঁচু উঁচু আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের পাশাপাশি রয়েছে অসংখ্য হরেক রকম পণ্যের ও খাবারের দোকান। ফুটপাতেও অপরাহ্নের পর বসে যায় নিম্নবিত্ত মানুষেরা তাদের নানা রকম পসরা নিয়ে। দেখলাম এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিস। বাচ্চাদের এবং বড়দের কাপড়-চোপড় এবং খেলনাসহ সব ধরনের জিনিসপত্র। কী নেই ভাসমান চাদর বিছিয়ে বসা এসব পশরা বিক্রিকারীদের কাছে। এখানে যারা জিনিসপত্র বিক্রি করতে এসেছে তারা সবাই মনে হচ্ছে সময়টাকে কাজে লাগাচ্ছে আর একটু ভালো জীবন কাটানোর জন্য। দু'একজন বয়স্ক ছাড়া আর সবাই দারুণ স্মার্ট। দেখলে মনে হয় না। খুব একটা দরিদ্য। দেখলাম তাদের পশরার পাশে অনেকেই তাদের কুকুরকেও নিয়ে এসেছে। পেইচিংয়ের উপকন্ঠেও দেখেছি এসব জমকালো পশরার দোকান। একটা বিষয়ে খুবই অবাক হলাম যে, বহুদিন ধরেতো চীনে আছি। রাস্তা, ঘাটে বা পার্কে সব জায়গায়ই দেখছি সবার সাথে কুকুর রয়েছে। বেশিরভাগই তার ছোট আকারের। দেখলাম না শুধু অহেতুক কুকুরের ঘেউ ঘেউ চিত্কার আর তাদের আক্রমণাত্মক ভঙ্গী। সামাজিক অবস্হার সাথে তারাও যেন বেশ ভালোভাবেই খাপ খাইয়ে নিয়েছে। (চলবে) –আ বা ম ছালাউদ্দিন ।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |