|
পেইচিংয়ের ইউয়ান ফাং হোটেলের কর্মচারী ওয়াং ইয়ুয়ে ও তার ছয় সাতজন সহকর্মী কিছুদিন আগে আবারো হোপেই প্রদেশে ভ্রমণ করতে গেছেন । তিনি বলেন , তিনি ও তার সহকর্মীরা কয়েক বছর আগে থেকে সবসময় সাইকেলে করে নানা জায়গায় গিয়ে ভ্রম করেন । এ রকম ভ্রমণের মধ্য দিয়ে তারা একদিকে নিজেদের শরীর সুস্থ্য ও সবল রাখতে পারেন , অন্যদিকে কিছু জ্বালানিও সাশ্রয় এবং কার্বন নির্গমণ কমিয়ে আনতে পারেন ।
অনেক আগে থেকেই বহু বিশেষজ্ঞ পর্যটন শিল্পকে ধোয়াহীন শিল্প বলে আখ্যায়িত করে আসছেন । সম্প্রতি চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদ "পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন দ্রুততর করা সংক্রান্ত মতামত"জারি করেছে । এ মতামতে বলা হয় , পর্যটন শিল্পের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভূমিকা রয়েছে । পর্যটন শিল্প কম সম্পদ ক্ষয় করে , বহু কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে এবং বহুমুখী সুফল এনে দিতে পারে । তাই পর্যটন শিল্পকে জাতীয় অর্থনীতির কৌশলগত ও মেরুদন্ড স্থানীয় শিল্প এবং জনসাধারণের কাছে আরো সন্তোষজনক আধুনিক পরিসেবা শিল্প হিসেবে গড়ে তুলতে হবে । এ মতামতের সুদূরপ্রসারী তাত্পর্য রয়েছে ।
চীনে নিম্ন কার্বন অর্থনীতির উন্নতি ঘটাতে চাইলে পর্যটনের অগ্রণী ভূমিকা নেয়া উচিত । এমনিতে পর্যটনের সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ এবং নয়নাভিরাম নিসর্গের দরকার । নিম্ন কার্বন পর্যটন কার্যকরভাবে কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনতে পারে । এ কারণে সারা চীনে এখন সাইকেলে করে পর্যটন ও পায়ে হেটে পর্যটনের এক হিড়িক পড়েছে ।
জানা গেছে , চীনের কুয়াং সি চুয়াং জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কুই লিন শহরের ইয়াং সু এলাকার সংশ্লিষ্ট বিভাগের উদ্যোগে পায়ে হেটে লি নদী ও ইয়াং সু ভ্রমণ এবং চে চিয়াং প্রদেশের হাংচৌ শহরের উদ্যোগে সাইকেলে করে পশ্চিম হ্রদ প্রদক্ষিণ করার ভ্রমণ সে দু্ই স্থানের ব্যাপক পর্যটকের সমাদর পেয়েছে । সংশ্লিষ্ট একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , বর্তমানে চীনে দেড় শ'রও বেশি সাইকেল পর্যটন সমিতি রয়েছে এবং সাইকেলে করে ভ্রমণের অনুরাগীদের সংখ্যা ১ লাখেরও বেশি । যারা সবসময় পায়ে হেটে ভ্রমণ করে থাকেন , তাদের সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে ।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বন জংগলের ভ্রমণও চীনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে । এখন পেইচিংয়ের হোয়াই রৌ এলাকার সুং শাস পাহাড় , ইয়ানছিং জেলার শি সিয়া এবং হাই তিয়ান এলাকার সুগন্ধ পাহাড়সহ নানা দর্শনীয় স্থানে সবসময় দেখা যায় , বেশ কিছু সংখ্যক পর্যটক দলে দলে বিভিন্ন বনে হেটে বেড়াচ্ছেন । প্রকৃতির সংগে আলিংগণ করার নামে পরিচিত এসব কার্বন পর্যটন এখন চীনের বিভিন্ন প্রদেশ , শহর ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বেশ কিছু দর্শনীয় স্থানে পরিলক্ষিত হয় ।
চীনের বন বিভাগ জানিয়েছে , সংস্কার ও উন্মুক্ত নীতি চালু হওয়ার পর গত ৩০ বছরে চীন বিপুল প্রয়াসের সংগে সবুজীকরণ অভিযান চালিয়েছে । যার ফলে পৃথিবীতে চীনে সবচেয়ে দ্রুত গতিতে বন সম্পদ বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে । জানা গেছে , গত ৩০ বছরে চীনে মোট ১১ বিলিয়ন ৫২ কোটি লোক স্বেচ্ছামূলক সবুজীকরণ অভিযানে অংশ নিয়েছেন এবং ৬ কোটি একর জমিতে ৫৩ বিলিয়ন ৮৫ কোটি গাছ লাগিয়েছেন । অনুমাণ করা হচ্ছে , ২০১০ সালে চীনে বনায়নের হার ২০ শতাংশে উন্নীত হবে । সবুজীকরণের সংগে সংগে চীনের বন ও জংগলে ভ্রমণও আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |