আসলে বিশাল তৃণভূমি তার মানুষ, তার প্রকৃতি ও শহুরে আধুনিক জীবন যাত্রা এ অঞ্চলে সৃষ্টি করেছে এক অনন্য সুন্দর পরিবেশ । রঙিন ফুলে ফুলে আর সবুজের আভায় স্বর্ণ করোজ্জ্বল দিন আর অন্ধকারের চাদরে ঢাকা রাত্রির আকাশ জুড়ে ছায়াপথ ও তারার মেলা কোলাহলহীন শান্ত সৌম এ জনপদকে করে তুলেছে নেশার মত আরো মোহনীয় চিরকালের আপন ।
এমনি একটি শহরে ১৮ আগষ্ট থেকে সপ্তাহব্যাপি এবারের ১১তম এশিয় সাংস্কৃতিক উত্সবের আয়োজন সত্যিই স্বার্থক হয়েছে । এবারের উত্সবের মূল প্রসঙ্গ ছিল "সৌভাগ্যর তৃণভূমি : এশীয়ার শুভ কামনা" এবারের উত্সবে বাংলাদেশের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীসহ ১৭টি দেশের সংস্কৃতি মন্ত্রীদের একটি গোল টেবিল সম্মেলনের আয়োজন করা হয় ।

১.অন্তর্মঙ্গোলিয়ার আলো ঝলমল রাতের ওর্দোস
যা সত্যিকার অর্থেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশ সমূহের মধ্যে পারষ্পরিক সমঝোতা, সমৃদ্ধি ও বন্ধুত্বের বন্ধনকে দৃঢ়তর করে তুলবে । আর এর মধ্য দিয়েই এশীয় দেশ সমূহের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে রক্ষার পাশা পাশি অর্থনৈতিক দিক থেকে দেশগুলোকে এগিয়ে যাবার ক্ষেত্রে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে । দক্ষিণ এশিয় সংস্কৃতি মন্ত্রীদের মত বিনিময়ের এ বৈঠকে দেশ সমূহের কল্যাণের লক্ষে একটি সম্মিলিত ঘোষণাও স্বাক্ষরিত হয়েছে । ঘোষণায় স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে :
এক: বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক ঋন্নয়নে, সামাজিক সংস্হা ও অর্থনৈতিক পুনরুস্ধারের ক্ষেত্রে আর ও বেশি ভূমিকা পালনে সহায়তা করতে হবে ।

২.বিস্তির্ণ তৃণভূমির মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর তীরে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র
দুই: পারস্পরিক আস্হা ও কল্যাণের লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক বাণিজ্য ও জনশক্তি উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে বাস্তব সহযোগিতা জোরদার করা, যাতে এশিয়ার সার্বিক সংকট মেকাবিলার দক্ষতা বাড়ানো যায় ।
তিন : আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক আদান প্রদানে সহযোগিতা জোরদার করা, যাতে এমিয়ার সার্বিক সংকট মোকাবিলার দক্ষতা বাড়ানো যায় ।
চার: দ্বিপাক্ষিক ও বগু পাক্ষিক সহযোগিতার প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার ব্যবস্হাকে জোরদার করার পাশাপাশি সহযোগিতার সুষ্ঠু মানের উন্নয়নও সাধন করা ।

৩. ওর্দোসের চেঙ্গিস খান স্কোয়ারে মঙ্গোলিয়বাসীদের শক্তির প্রতিক ঘোড়া
সম্মিলিত ঘোষণার এ সব সিদ্ধান্ত আমার কাছে এ কারনে আরো বেশি তাত্পর্যপূর্ণ মনে হয়েছে যে চীন একটি শক্তিশালী ও পৃথিবীর মধ্যে একটি বৃহত্তম দেশ হওয়া সত্বেও এ ধরনের আয়োজনের মধ্য দিয়ে নিজের সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির হাত বাড়িয়ে দিয়ে এশিয়ার দেশসমূহসহ আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে যতটা সম্ভব সাহায্য করে যাচ্ছে ।যাতে এ সব দেশের সাধারণ ও দরিদ্র মানুষেরা নিজেদের সংস্কৃতি ও আর্থিক অবস্হানের উন্নয়ন ঘটিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ গঠন করতে পারে । এ ছাড়া তারা যাতে দরিদ্রতাকে কাটিয়ে উঠে জীবন যাত্রার মানকে কিছুটা হলেও এগিয়ে নিতে পারে । এ ধরনের আয়োজন সকল প্রকার হিংসা, দ্বেশ ও মতবিরোধের অবসান ঘটিয়ে দেশ, কাল পাত্র ভেদে মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধনকে অটুট করে তুলতে পারে । একটি বৃহত্ দেশের উদার দৃষ্টিভঙ্গি না থাকলে এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া বাস্তবিকভাবেই সম্ভব নয় । চীনে আমার তিন বছরেরও একটু বেশি সময়ে যেটা আমি লক্ষ্য করেছি যে, চীন সরকারের মধ্যে সবার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার উদার মানসিকতা নির্মল আকাশের মতই বিরাট।(চলবে)

৪. তৃণভূমিতে উটের সংগে লেখক