|
১৯৯৮ সালে প্রথম পেইচিং আন্তর্জাতিক পর্যটন উত্সবের আয়োজন করা হয় । তখন থেকেই এর প্রধান প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয় । তা হচ্ছে জনসাধারণের জীবনকে সমৃদ্ধ করে তোলা এবং বিশ্বের আদান-প্রদান সম্প্রসারণ করা ।
জীবন ও জনসাধারণই হচ্ছে শিল্পকলার উত্স । যে কোনো ধরণের উত্সব ও উদযাপনী অনুষ্ঠান জনসাধারণের অংশগ্রহণ ও সমর্থন ছাড়া তার প্রাণশক্তি হারিয়ে যায় । তাই পেইচিং আন্তর্জাতিক পর্যটন উত্সব একেবারে শুরু থেকেই তার সরল আকাংক্ষা প্রকাশ করেছিল যে , এ উত্সবের মধ্য দিয়ে জনসাধারণের সাংস্কৃতিক জীবন বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠবে এবং জনসাধারণ ব্যাপকভাবে এ উত্সবে শামীল হতে পারবে । গত দশ বছরে পেইচিং আন্তর্জাতিক পর্যটন উত্সব পেইচিংয়ের ১৮টি এলাকা ও জেলায় প্রবেশ করেছে এবং উত্সবে অংশ নেয়া শিল্পীরা পেইচিংয়ের গ্রামাঞ্চল , শিল্পপ্রতিষ্ঠান , পাড়া এলাকা , স্কুল বিদ্যালয় , পর্যটন এলাকা , দমকল , বার্ধক্যসুদন ও প্রতিবন্ধী আরোগ্য কেন্দ্রে তাদের অনুষ্ঠান পরিবেশন করেছেন । প্রথম দশটি পেইচিং আন্তর্জাতিক পর্যটন উত্সবে লাখ লাখ জনতা নানা ধরণের অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন এবং এক কোটি পেইচিংবাসী ও দেশ বিদেশের পর্যটকরা বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপভোগ করেন ।
একাদশ পেইচিং আন্তর্জাতিক পর্যটন উত্সবও ব্যাপকভাবে জনসাধারণকে আকর্ষণ করার নীতি অনুসরণ করেছে । "আমার চোখে নয়া পেইচিংয়ের ১৬টি দর্শনীয় স্থান" নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় সাংগঠনিক কমিটির নেয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভোট দানের পদ্ধতি সমাজের বিভিন্ন মহলের ব্যাপক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে । এক হিসাব থেকে জানা গেছে , ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি লোক এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে । পেইচিংয়ের ৬০ বছরের সাফল্য সংক্রান্ত একটি প্রদর্শনীতে পেইচিং ও চীনের কল্যাণ কামনা করি নামক একটি কামনা দেয়াল রাখা হয় । পর্যটকরা কার্ডে কিছু লিখে এ দেয়াল টাংগিয়ে মাতৃভূমি ও রাজধানী পেইচিয়ের প্রতি তাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ব্যক্ত করতে পারেন ।
এবারের উত্সব পেইচিংবাসীদের সংগে ধারাবাহিক আদান-প্রদান তত্পরতার মাধ্যমে জনসাধারণের উত্সাহ উদ্দীপিত করেছে । এভাবে পেইচিং আন্তর্জাতিক পর্যটন উত্সব এখন জনসাধারণের একটি মহাসম্মিলনীতে পরিণত হয়েছে ।
পেইচিং আন্তর্জাতিক পর্যটন উত্সবের অন্য একটি লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বের আদান-প্রদান সম্প্রসারণ করা । প্রথম দশটি পেইচিং আন্তর্জাতিক পর্যটন উত্সবে বিশ্বের ১১২টি দেশের ২৮ হাজার বিদেশী শিল্পী ও তাদের পরিবার এবং অনুরাগীরা পর্যটক হিসেবে নিজেদের খরচে এ উত্সবে যোগ দিয়েছেন । তাদের মাধ্যমে চীনের জনসাধারণ বিভিন্ন দেশের চাল-চলন সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানতে পেরেছে এবং একই সংগে তাদের মাধ্যমে চীনা জনগণের বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবে ও উত্সাহ-উদ্দীপনাকেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দিয়েছে ।
একাদশ পেইচিং আন্তর্জাতিক পর্যটন উত্সবে আরো বেশি আন্তর্জাতিক উপাদান প্রতিফলিত হয়েছে এবং বিভিন্ন দেশের রীতিনীতি প্রদর্শিত হয়েছে । সত্তরটিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের শিল্পীরা এবারের উত্সবে অংশ নিয়েছেন । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের বর্ণাঢ্য মার্চে এবারের পর্যটন উত্সবের আন্তর্জাতিকীকরণ ও সম্প্রীতিময় বিশ্বের প্রতিপাদ্য পরিলক্ষিত হয় । রাশিয়ার পুশকিন নৃত্য দল , ফ্রান্সের সড়ক নাচ ও লোক নৃত্য দল , অস্ট্রিলিয়ার শিল্পী দল , মালয়সিয়ার বাদক দল , সুকল্যান্ডের নৃত্য দল ও দক্ষিণ কোরিয়ার ঐতিহ্যিক শিল্পী দলসহ বিভিন্ন দেশের শিল্পীরা সুন্দর অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন ।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |