|
৫০ কোটি ইউয়ান ব্যয়ে "শাওলিন সংস্কৃতির উন্নয়ন প্রকল্প" এখন হাতে নেয়া হয়েছে । চীনের হোনান প্রদেশের তেংফোং শহর আশা করে যে , এ প্রকল্পের মধ্য দিয়ে তেংফোং শহর বিশ্বের কুংফু নগরে পরিণত হবে । এভাবে শাওলিন সংস্কৃতি ক্রমে বিশ্ব পর্যায়ের মানের কাছাকাছি হবে এবং আন্ত:দেশীয় সাংস্কৃতিক বিনিময়ের রূপ নেবে ।
২৫ অক্টোবর হোনান প্রদেশের তেংফোংয়ে অনুষ্ঠিত শাওলিন সংস্কৃতির উন্নয়ন প্রকল্প সংক্রান্ত এক সেমিনারে তেংফোং শহরের সহকারী মেয়র চেং ফু লিন স্বীকার করেন যে , শাওলিন সংস্কৃতি এখন দেশে ও বিদেশে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে । যেহেতু শাওলিন সংস্কৃতির মূল্যের ওপর গভীরভাবে গবেষণামূলক কাজ চালানো হয় নি , সেহেতু তেংফোংয়ে অবস্থিত শাওলিন মন্দিরের সুনাম বিশ্বের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়লেও সেখানকার নিসর্গ বলতে তেমন বেশি নেই । সুতরাং বাইরের পর্যটক এখানে আসলে সাধারণত কেবল অর্ধেক দিন অবস্থান করে থাকেন । যদিও এখন তেংফোং শহরে সন্ধ্যার সময় শাওলিন কুংফুর ওপর বিশেষ সংগীত অনুষ্ঠানের আয়োজন হয় , তবুও অনেক পর্যটক শুধু এ অনুষ্ঠান উপভোগের জন্যে এখানে আর বেশি ক্ষণ থাকতে চান না । কেন না এখানে দেখার মতো বেশি দর্শনীয় স্থান নেই । বাইরের দিক থেকে দেখতে গেলে ইউরোপ , যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের অনেক স্থানে শাওলিন সংস্কৃতির ঝান্ডা উড়িয়ে নানা ধরণের শাও লিন কুংফু স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । প্রকৃতপক্ষে তাদের অনেকে চীনের সংশ্লিষ্ট মেধাস্বত্বের অধিকার লংঘন করেছে । তবে তেংফোং শহর বর্তমানে শাওলিন কুংফুর শিক্ষা , প্রতিযোগিতা ও পরিবেশনার ওপর গভীরভাবে গবেষণামূলক গবেষণা চালায় নি বলে কার্যকরভাবে নিজের ন্যায়সংগত অধিকার রক্ষা করতে পারছে না ।
তেংফোং শহরের সহকারী মেয়র চেং ফু লিন বলেন , তেংফোং শহরের সংস্কৃতি ও পর্যটন উন্নয়ন এখন পরিবর্তন ও মানোন্নয়নের সাপেক্ষ । অর্থাত এখনকার ভ্রমণমূলক সংস্কৃতি থেকে কুংফু সংস্কৃতির চর্চায় পরিণত করা হবে এবং শাওলিন সংস্কৃতি থেকে বিশ্ব পর্যায়ের সংস্কৃতি এবং আন্ত:দেশীয় সাংস্কৃতিক বিনিময়ের প্ল্যাটফর্মে পরিণত করা হবে । এভাবে তেংফোংয়ের শাওলিন সংস্কৃতি আস্তে আস্তে হোনান প্রদেশের সংস্কৃতি ও পর্যটন শিল্পের একটি নিদর্শনমূলক পণ্যে পরিণত হবে ।
জানা গেছে , শাওলিন সংস্কৃতির উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্পের অধীনে শাওলিন কুংফুকে কেন্দ্র করে চীনের কুংফু সংস্কৃতি প্রদর্শন ও উত্তরাধিকার কেন্দ্র , শাওলিন কুংফুর মানদন্ড প্রণয়ন কেন্দ্র , শাওলিন কুংফু সংক্রান্ত বিদ্যাগত গবেষণা ও বিনিময়ের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ও শাওলিন কুংফুর উচ্চ শ্রেণীর ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে । এ প্রকল্প নির্মাণের কাজ পর্যায়ক্রমে চলবে । প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে শাওলিন কুংফুর সাংস্কৃতিক যাদুঘর , শাওলিন কুংফু আন্তর্জাতিক একাডেমী , শাওলিন কুংফু আন্তর্জাতিক বিনিময় কেন্দ, বিশ্ব কুংফু মঞ্চ ও কীর্তিমান ব্যক্তিদের ভাস্কর্য উদ্যান । এসব প্রকল্প নির্মাণের জন্যে ৫০ কোটি ইউয়ান বরাদ্দ করা হবে ।
হোনান প্রদেশিক সরকারের উপমহাসচিব সুন থিং সি বলেন , হোনান প্রদেশ ইতোমধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ বড় প্রদেশ থেকে সাংস্কৃতিক দিক থেকে শক্তিশালী প্রদেশে পদার্পণের উন্নয়ন কৌশল নির্ধারণ করেছে । তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে হোনান প্রদেশে সাংস্কৃতিক সংস্কার ও উন্নয়ন সংক্রান্ত পরীক্ষামূলক এলাকা স্থাপন করা হবে । এ পর্যন্ত হোনান প্রদেশের খাইফোং ও তেংফোংসহ ৮টি শহর ও জেলাকে প্রথম কিস্তির সংস্কৃতিক সংস্কার ও উন্নয়ন সংক্রান্ত পরীক্ষামূলক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে । তেং ফোং শহরকে বিশ্বের কুংফু নগর ও চীনের পবিত্র সাংস্কৃতিক নগর বলে নির্ধাণ করা হয়েছে ।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |