|
চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির সর্বোচ্চ আদর্শ ও চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো সাম্যবাদ বাস্তবায়ন করা।
১৯২১ সালের জুলাই মাসে চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২১ সাল থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির নেতৃত্বে চীনা জনগণ কঠোর সংগ্রাম চালিয়ে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ আর আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদের শাসন উচ্ছেদ করে গণ প্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠিত করে। নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি সমগ্র চীনের বিভিন্ন জাতির জনগনকে পরিচালিত করে দেশের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা সমুন্নত রেখেছে, চীনকে নয়া গণতান্ত্রিক দেশ থেকে সমাজতান্ত্রিক দেশে রূপান্তরিত করেছে এবং চীনে সুপরিকল্পিতভাবে বিরাটাকারের সমাজতান্ত্রিক গঠনকাজ চালিয়েছে। ফলে চীনের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্রতে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে।
১৯৭৯ সাল থেকে চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি তেং সিয়াও পিং উত্থাপিত সংস্কার ও উন্মুক্ত নীতি কার্যকরী করতে শুরু করে। সংস্কার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর চীনের জাতীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমুল পরিবর্তন ঘটেছে। এই সময়পর্ব নয়াচীন প্রতিষ্ঠার পর সবচেয়ে ভালো সময়পর্ব; এই সময়পর্বে জনসাধারণ সবচেয়ে বেশি সুযোগসুবিধা পেয়েছে।
চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি সক্রিয়ভাবে বিদেশের সংগে সম্পর্ক প্রসারের পক্ষপাতী। এ পার্টি চীনের সংস্কার, উন্মুক্ততা আর আধুনিকায়নের গঠনকাজের জন্য অনুকুল আন্তর্জাতিক পরিবেশ পাওয়ার প্রয়াস চালায়, আন্তর্জাতিক ব্যাপারাদিতে দৃঢ়ভাবে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র শান্তিপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে, চীনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে, আধিপত্যবাদ ও শক্তির রাজনীতির বিরোধিতা করে, বিশ্বশান্তি অক্ষুণ্ণ রাখা আর মানবজাতির অগ্রগতি বেগবান করার প্রচেষ্টা চালায় এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পঞ্চশীল নীতি অর্থাত্ পরস্পরের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতার প্রতি মর্যাদা প্রদর্শন, পারস্পরিক অনাক্রমণ, পরস্পরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা, সমতা ও পারস্পরিক কল্যাণ আর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তিতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংগে সম্পর্ক প্রসার করে। চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র, সমতা, পারস্পরিক মর্যাদা প্রদর্শন ও পরস্পরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা - এই চারটি নীতি অনুসরণ করে পৃথিবীর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংগে মৈত্রী সম্পর্ক প্রসারিত করেছে। কমিউনিষ্ট পার্টি ইতিমধ্যে পৃথিবীর ১২০টি দেশের তিন শরও বেশি রাজনৈতিক দলের সংগে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বজায় রেখেছে।
চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি হচ্ছে নিজের কর্মসূচি ও সনদ অনুসারে গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার নীতি অনুসারে সংগঠিত একটি রাজনৈতিক দল। পার্টির সনদ অনুসারে চীনের শ্রমিক, কৃষক, সৈনিক, বুদ্ধিজীবী আর সমাজের অন্যান্য স্তরের অগ্রণী ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে, যারা কমিউনিষ্ট পার্টির কর্মসূচি ও সনদকে স্বীকৃতি দেন, পার্টির একটি সংগঠনে অংশ নেন এবং সক্রিয়ভাবে কাজ করেন, পার্টির সিদ্ধান্ত মেনে নেন এবং নিয়মিতভাবে ফি জমা দেন, তারা কমিউনিষ্ট পার্টিতে যোগ দেওয়ার আবেদন জানাতে পারেন।
চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের সংগঠনের মধ্যে আছে পার্টির জাতীয় কংগ্রেস, কেন্দ্রীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরো, কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর স্ট্যান্ডিং কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলী, কেন্দ্রীয় কমিটির সামরিক কমিশন ও কেন্দ্রীয় কমিটির শৃঙ্খলা তত্ত্বাবধান কমিটি। পার্টির জাতীয় কংগ্রেস প্রতি পাঁচ বছরে একবার অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় কংগ্রেস শেষে নির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটি চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির সর্বোচ্চ নেতৃস্থানীয় ফোরাম।
চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্য সংখ্যা সাত কোটি। বর্তমানে পার্টির সাধারণ সম্পাদক হলেন হু চিন থাও।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |