সিআরআই বাংলা বিভাগের উপস্থাপনা আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে সিছুয়ানের ছবি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি
2010-10-28 10:45:36 cri
বাংলাদেশের ঢাকার নেপচুন রেডিও ফ্রেন্ডজ ক্লাবের পরিচালক লুত্ফর রহমান তাঁর রচনায় লিখেছেন, "চীন সরকার পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ যে চমত্কার ফুটফুটে প্রাণিটি উপহার পাঠানোর রীতি প্রচলন করেছে সেই পান্ডার জন্মভূমি সিছুয়ান দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি প্রদেশ। বাস্তবিক অর্থেই এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার ধারকের একটি আলাদা বৈশিষ্ট্য এবং গুরুত্ব রয়েছে চীনা ঐতিহ্যে। পর্যটকদের আকৃষ্ট করে পৃথিবীর এমন বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানগুলোর অন্যতম সিছুয়ান। এখানে আছে বিশ্বের স্বর্গ নামে সুপরিচিত চিউচাইকো উপত্যকা, সারাবিশ্বে চীনের প্রথম পাহাড় বলে পরিচিত বৌদ্ধধর্মের অন্যতম পবিত্রস্থান অ্যামেই পাহাড়, বিশ্বের সবচেয়ে প্র্রাচীন জলসেচ প্রকল্প তুচিয়াং ইয়ে, তাও ধর্মের পবিত্র স্থান ছিংচেন পাহাড় এবং দুই হাজার বছরের সানসিংতুন সভ্যতা। চিউচাইকো উপত্যকায় নয়টি তিব্বতী জাতির গ্রাম আছে বলে এ নামকরণ করা হয়েছে। স্থানীয়দের ভাষায় 'সাগরের ছেলে' নামে ১০০টিরও বেশি হ্রদ আছে চিউচাইকো উপত্যকায়। নোরিলাং নামে চীনের সবচেয়ে চওড়া জলপ্রপাত আছে এখানে। চিউচাইকো'র নীল আকাশ, সাদা মেঘ, তুষারঢাকা পাহাড় ও বন আকাশ থেকে নামা মুক্তার মালার মতো দেখায়। অ্যামেই পাহাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি প্রজাতির উদ্ভিদ আছে, যার সংখ্যা গোটা ইউরোপের উদ্ভিদের মোট সংখ্যার সমান। অ্যামেই শব্দের অর্থ হচ্ছে মেয়ের ভ্রু। এ শব্দের অর্থ থেকেই অ্যামেই পাহাড়ের সৌন্দর্য্যকে কল্পনা করা যায়। ১৯৯২ সালে চিউচাইকোকে বিশ্বের প্রাকৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে তালিকভূক্ত করা হয়েছে। পৃথিবীর বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণীগুলোর মধ্যে পান্ডা অন্যতম। আর সারা চীনে যেসব পান্ডা পাওয়া যায় তার প্রায় সবারই জন্ম ও চারণভূমি এই সিছুয়ানে। পান্ডা খুব সুন্দর ফুটফুটে প্রাণী। আমি পেইচিংয়ের একটি চিড়িয়াখানায় পান্ডা দেখেছি, যেখানে পান্ডার খাঁচার সামনে বহু চীনা ছেলেমেয়ে ভীড় করে ছিল। পান্ডার প্রতি সবার ভালোবাসা লক্ষ্যণীয়। চীন বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্য জাতি অধ্যুষিত ভূখন্ড। সিছুয়ানে সানসিংতুন ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কারের ফলে প্রাচীনতম সভ্যতার এ দেশটির আরো বেশি ঐতিহ্যিক প্রমাণাদি উন্মোচিত হয়েছে, যা বিশ্ব দরবারে চীনের ঐতিহাসিক মর্যাদাকে আরো সুসংহত করেছে। সম্প্রতি সিছুয়ান প্রদেশের রাজধানী ছেংতু শহর আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনেস্কোর সৃজনশীল নগর নেটওয়ার্কে অন্তর্ভূক্তির অনুমোদন পেয়েছে এবং এশিয়া মহাদেশের প্রথম শহর হিসেবে সুস্বাদু খাবারের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। কেউ কেউ বলেন, চীনে নানা সুস্বাদু খাবার আছে এবং সিছুয়ান হচ্ছে চীনা মানুষের পছন্দের সুস্বাদু খাবারের স্বর্গ। ২০০৮ সালের ১২ মে সিছুয়ানের ওয়েনছুয়ান জেলায় এক মর্মান্তিক ভূমিকম্প এবং এর ফলে ভূমি ও পাহাড়ধসে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে ইতিমধ্যে ধ্বংসস্তুপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো উড়াল দিয়েছে সিছুয়ান। দুর্গত অঞ্চলের পুনর্গঠন কাজে লক্ষ্যণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ১৪ লাখ ৫০ হাজার পরিবারের বাড়ীঘর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। গত দু'বছরে দুর্গত-পরবর্তী পুনর্গঠন কাজে চীন সরকারের এক বিলিয়ন ৯৪৯ দশমিক ২৪ কোটি ইউয়ান বরাদ্দের ফলে সামগ্রিক ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে। পেইচিং ও ইউনানে আমি যে প্রাণবন্ত চীনকে স্বচক্ষে দেখেছি -- হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছি তাতে সিছুয়ানের সৌন্দর্য দেখার প্রচন্ড আগ্রহ তৈরী হওয়াই স্বাভাবিক। সিআরআই বাংলা বিভাগের উপস্থাপনা আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে সিছুয়ানের ছবি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। এত সুন্দর ছবির মতো জায়গার সৌন্দর্য্য ভাষায় বর্ণনা করা যায় না।" বন্ধু লত্ফর রহমান, আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ গ্রহণ করুন এমন সুন্দর একটি রচনা আমাদেরকে পাঠানোর জন্য। সময় বিবেচনায় আমরা আপনার পুরো রচনাটা এখানে উপস্থাপন করতে পারিনি। আপনার রচনা থেকে বোঝা যাচ্ছে, আপনি মন দিয়ে আমাদের অনুষ্ঠান শোনেন এবং আমাদের ওয়েবসাইট দেখেন।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা