বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার খাইরুল বাশার তাঁর রচনায় লিখেছেন, ১৯৮৪ সাল। আমি তখন দশম শ্রেণীর ছাত্র। সে সময় জানুয়ারি মাসে তিনজন ছাত্রকে প্রাইভেট পড়িয়ে টাকা পেলাম একশত টাকা। এ টাকা দিয়ে এক বন্ধুর কাছ থেকে একটি পুরাতন রেডিও সেট কিনলাম। রেডিও সেটটি কিনে নিয়ে বাড়িতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। সেদিন পড়ার কাজ শেষ করে রেডিওটি অন করে নব ঘুরাতেই চীনাদের মুখে রেডিও পিকিং শব্দটি তিন চার বার শোনা মাত্র আনন্দে পুলকিত হয়ে পড়ি। আমার ছোট্ট রেডিওতে চীনাদের সুন্দর বাংলায় খবর পাঠ, বাংলা গান যেন চীন সম্পর্কে জানার অফুরন্ত সুযোগ এনে দিল। অনুষ্ঠান শেষে চিঠি লেখার ঠিকানা বলা মাত্র খাতায় ঠিকানা লিখে ঐদিনই চিঠি লিখতে বসলাম। সকাল বেলা পোষ্ট অফিসে ঐ চিঠি পোষ্ট করতে লেগে ছিল সাড়ে চার টাকা। চিঠি লেখার পর ৪২তম দিনে চীন থেকে আমার নামে বড় একটা খামে রেডিও পিংকিংয়ের একটি চিঠি পোষ্টম্যান দিয়ে গেল। চিঠিটি পেয়ে আমি ভীষণ আনন্দিত হই। অনুষ্ঠান নিয়মিত শোনা আমার নেশা হয়ে গেল। ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ২৬ বছর আমার রেডিও পিকিং থেকে বর্তমান চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সাথে আমার সম্পর্ক। আমার ভালবাসা, প্রেম, দুঃখ, সুখের সাথে সিআরআই জড়িত। এ পর্যন্ত মোট ৩৫টি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি। চীন সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছি। তবে বিশাল চীন সম্পর্কে সামান্য কিছু জানতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। কুশন কভারসহ বিভিন্ন উপহারে আমার একটি আলমারী ভর্তি করে ফেলেছি। এ পর্যন্ত আমার পাওয়া উপহারের সংখ্যা ৬৯০টি। চীন আন্তর্জাতিক বেতার আমার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে ১১১২টি। আমি চিঠি লেখেছি মোট ৯৮৬টি। ক্যালেন্ডার, ডায়েরী প্রতি বছর পাই। বিশাল চীনের সম্পর্কে প্রত্যেক দিন কিছু না কিছু জানতে পারি। প্রতিদিনের সত্যনিষ্ট খবর আমাকে আরো বেশী বিশ্বাসী করে তোলে। বিশাল সিআরআই'র আন্তরিক সহযোগিতায় আমি মুগ্ধ। আমার মন কৃতজ্ঞায় ভরে গেছে। সত্যিই চীন আন্তর্জাতিক বেতার আমার পূর্ব দিকের সূর্য্য উঠা ভোরের সকাল, বসন্তের কোকিলের কহু কুহু তান। যতদিন রবে এ দেহ মন, তত দিন যাব শুনে সিআরআই'কে সুখে, দুঃখে ভেবে আপন। খাইরুল বাশার, আপনি সত্যি আমাদের পুরানো বন্ধু। আপনার রচনা আমাদেরকে অনেক মুগ্ধ করেছে। আশা করি, আপনি সারাজীবন আমাদের সঙ্গে থাকবেন এবং আপনি অবশ্যই আমাদের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আরো বেশি চিঠি ও উপহার পাবেন।
ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বর্ধমান জেলার জহির আব্বাস মোল্লা তাঁর রচনায় লিখেছেন, স্কুল জীবনে পড়ার সময়ই আমার মনটা কোন এক অজানা কারণেই দারুণ বেতার উত্সাহী হয়ে ওঠে। যার ফলে কোন একদিন রাতে রেডিওর নব ঘোরাতে ঘোরাতে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান আমার মনের অঙিনায় ধরা দেয়। সে দিনটি ছিল ৫ বছর আগে ২০০৪ সালের ১৫ই আগষ্টের এক বর্ষণ মুখর রাত। তারপর থেকে সিআরআই'র সাথে আমার পথচলা শুরু। জ্ঞানের পরিধিকে বাড়াতে আর চীনকে জানতে প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে শুনে চলেছি সিআরআই'র অনুষ্ঠানমালা। সিআরআই'র বাংলা অনুষ্ঠানকে আমি অনুভব করি আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে। এ যেন আপনাদের সুনিপুণ দক্ষতায় গড়ে ওঠা এক অপার শিল্পকলা। অনুষ্ঠানের প্রতি আপনাদের মমত্ববোধ ও সারল্যের ছন্দোবদ্ধতা সমৃদ্ধ প্রাণবন্ত উপস্থাপনা আমাকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে। সিআরআই বাংলা বিভাগ থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠান আমার ভাল লাগে। প্রতিটি অনুষ্ঠানই আমাদের সঙ্গে চীনের সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও মৈত্রীর অগ্রদূত হিসাবে কাজ করছে। অনুষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে চীনের জীবন যাত্রা, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জীবন সম্বন্ধে সম্যক ধারণা পাচ্ছি। অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আমরা পাচ্ছি ওয়েবসাইট যার মান খুবই উন্নত ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে সাজানো। চীন আন্তর্জাতিক বেতার যেমন চীন, চীনের মানুষ ও সংস্কৃতি সম্বন্ধে বেশী বেশী জানার ও বোঝার সুযোগ করে দিচ্ছে তেমনি বাংলাভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্বন্ধে প্রচার এবং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান ও ক্রমবর্ধমান সার্বিক সহযোগিতা ভিত্তিক বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্বকে আরো জোরদার করতে প্রতিদিন মূল্যবান অবদান রাখছে । আজকের এই শুভ অবকাশে সিআরআই বাংলা বিভাগের সকল কর্মীকে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। সিআরআই বাংলা বিভাগের কার্যক্রম ও অনুষ্ঠানমালার নিয়ত নতুন নতুন উত্কর্ষ ও শ্রীবৃদ্ধি ঘটুক এই শুভকামনা রইল। জহির আব্বাস মোল্লা, আপনাকে নিয়মিতভাবে আমাদের অনুষ্ঠান শোনার জন্য ধন্যবাদ জানাই। আমরা আপনার অনুরোধ অনুযায়ী আরো সমৃদ্ধ ও সুন্দর অনুষ্ঠান তৈরীর চেষ্টা করবো।