Web bengali.cri.cn   
মঙ্গোলিয়ার সংস্কৃতি মাস সম্পর্কিত ধারাবাহিক কর্মসূচি পেইচিংয়ে শুরু
  2012-04-25 13:04:40  cri

১২ এপ্রিল চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং মঙ্গোলিয়ার শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত 'মঙ্গোলিয়ার সংস্কৃতি মাস-২০১২' চীনের জাতীয় জাদুঘরে শুরু হয়েছে।

১২ এপ্রিল রাত সাড়ে ৭টায় জাতীয় জাদুঘরের পরিবেশনা হলে 'মঙ্গোলিয়ার কন্ঠ' শিরোনামে মঙ্গোলিয়ার জাতীয় মা থৌ ছিন সঙ্গীত দলের একটি সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে 'মঙ্গোলিয়ার সংস্কৃতি মাস' কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রী ছাই উ এবং মঙ্গোলিয়ার শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান মন্ত্রী ওতগোনবায়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়েছেন এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেছেন। ছাই উ বলেন,

'২০১১ সালে চীন ও মঙ্গোলিয়ার সুপ্রতিবেশীসুলভ পারস্পরিক আস্থাশীল অংশীদারিত্বের সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত হয়েছে। এতে নতুন সময়পর্বে দু'দেশের সম্পর্কের উন্নয়নের ওপর চীন ও মঙ্গোলিয়ার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের গুরুত্ব প্রতিফলিত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দু'দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় ক্রমশ ঘন ঘন হচ্ছে এবং দু'দেশের সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হচ্ছে। দু'দেশের সরকারের ব্যাপক সমর্থনে এবং দু'দেশের জনগণের যৌথ প্রচেষ্টায় দু'দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক অবশ্যই সুসংহত ও উন্নত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।'

তিনি আরো বলেন, ২০১২ সালে চীন ও মঙ্গোলিয়া পরস্পরের দেশে সংস্কৃতি মাসের আয়োজন করে। যা দু'দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ইতিহাসে খুবই তাত্পর্যসম্পন্ন। মঙ্গোলিয়ার সংস্কৃতি মাস সম্পর্কিত তত্পরতা চীন ও মঙ্গোলিয়া উভয় দেশের সরকারের কাছেই বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। সেটি হলো নতুন সময়পর্বে চীন ও মঙ্গোলিয়ার সাংস্কৃতি বিনিময় ও সহযোগিতার সুষ্ঠু সূচনা, যা দু'দেশের সরকার ও দু'দেশের জনগণের পারস্পরিক সমঝোতা মৈত্রী গভীরতরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ওতগোনবায়ার আমাদের বেতারের সংবাদদাতাদের কাছে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন,

'চীনের কৃষি সংস্কৃতি খুব বিশাল এবং সুগভীর। মঙ্গোলিয়ার যাযাবর সংস্কৃতি সুদীর্ঘকালের। দু'দেশের সংস্কৃতি ভিন্নতর। তাই পারস্পরিক সমঝোতা বাড়ানো ও সহযোগিতা জোরদার দু'দেশের সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য কল্যাণকর হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিক্ষা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে মঙ্গোলিয়া ও চীনের বিনিময় ও সহযোগিতা খুব ঘনিষ্ঠ। পরস্পরের দেশে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রী পাঠানোর ক্ষেত্রে চীন বছরের বছর চীনে মঙ্গোলিয়ার অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এবং সরকারী বৃত্তির পরিমাণ বাড়ায় এবং মঙ্গোলিয়া সেদেশে চীনের অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীর সরকারী বৃত্তির পরিমাণ বাড়ায়। সংস্কৃতি ক্ষেত্রে দু'দেশের যৌথ প্রচেষ্টায় নির্মিত সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ কমিটির কাঠামোয় দু'দেশ হাতে হাত মিলিয়ে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পদের সংরক্ষণ ও উন্নয়নের কাজকর্ম চালায়। প্রতি বছরে আমরা নিয়মিতভাবে আলোচনা, বাণিজ্যিক সহযোগিতা ও বিনিময় করি। আমাদের দু'দেশের সহযোগিতায় অনেক প্রকল্প এখন সুষ্ঠুভাবে চলছে এবং সাফল্য অর্জিত হচ্ছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরিবেশনায় মঙ্গোলিয়ার ক্লাসিক্যাল শিল্পকর্ম ও মঙ্গোলীয় জাতির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সংস্কৃতি প্রদর্শনের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গোলিয়ার ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে 'জার্দাস'সহ বিশ্ববিখ্যাত সঙ্গীত এবং 'জ্যাসমিন'সহ চীনের ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। এবারের পরিবেশনার শিল্প নির্দেশক ও মঙ্গোলিয়ার শিল্পী জান্টসান্নোরোভ বলেন,

'এবারের পরিবেশনার তিনটি বৈশিষ্ট্য আছে। প্রথমতঃ মঙ্গোলিয়ার জাতীয় মা থৌ ছিন সঙ্গীত এবারের অনুষ্ঠানের অধিকাংশ সঙ্গীতে ছিল। তাই এবারে মা থৌ ছিন ছিলো পরিবেশনার প্রধান চরিত্র। দ্বিতীয়তঃ আমরা চীনা দর্শকদের কাছে মঙ্গোলিয়ার আধুনিক সঙ্গীত ও শিল্পের উন্নয়নের বাস্তব অবস্থা জানিয়ে দিতে চাই। তৃতীয়তঃ বর্তমানে আন্তর্জাতিক সংস্কৃতিতে সংমিশ্রণ ঘটায় সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক বিনিময় খুব সক্রিয়। তাই এবারের পরিবেশনায় আমরা ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে বিশ্ববিখ্যাত ও চীনের ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত বাজাই।'

দেড় ঘন্টার পরিবেশনায় দর্শকদের হাততালি শোনা যায়। পরিবেশনা উপভোগকারী চীনের আন্তর্জাতিক কৌশলগত গবেষণালয়ের গবেষক ইন ওয়েই কুও বলেন,

'পরিবেশনা খুব চমত্কার হয়েছে। ২০০৯ সালে আমি চীনের আন্তর্জাতিক কৌশলগত সমিতির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মঙ্গোলিয়া সফর করেছি। এবারের পরিবেশনার অনেক অনুষ্ঠান আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। একটা পুরানো কথা বলতে চাই আমি, জাতীয় দ্রব্য বিশ্বের দ্রব্যও। জাতীয় বৈশিষ্টসম্পন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিশ্বের দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্য।'

মঙ্গোলিয়ার সংস্কৃতি মাস সম্পর্কিত এক মাসব্যাপী অনুষ্ঠান চলাকালে মঙ্গোলিয়া চীনের বিভিন্ন জায়গায় ছবি প্রদর্শনী, শিল্প প্রদর্শনী ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মসূচির আয়োজন করে। চীন ও মঙ্গোলিয়ার '২০১২ সালে পরস্পরের দেশে সংস্কৃতি মাসের আয়োজনের স্মারকলিপি' অনুসারে আগস্ট মাসে চীন মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোরসহ বিভিন্ন জায়গায় 'চীনের সংস্কৃতি মাস' সম্পর্কিত কর্মসূচির আয়োজন করবে।

লিলি/শান্তা

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040