|
দু' হাজার পাঁচ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স কোর্সের একজন ছাত্রী হিসেবে পোং চিং এবং তাঁর শিক্ষক দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক সেমিনারে অংশ নিয়েছিলেন। সেটি ছিলো তাঁর প্রথম ভারত সফর। সেখানকার শক্তিশালী সংস্কৃতি, সুদীর্ঘ ইতিহাস এবং উত্সাহী ও দয়ালু মানুষ দেখে তিনি শিগগির ওই সুন্দর দেশটিকে ভালোবেসে ফেলেন। তখন থেকেই ভারতের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তিনি যখনই ভারত যান, নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হন এবং নতুন পরিবর্তন আবিষ্কার করেন। পাঁচ শ' সদস্য নিয়ে গঠিত তরুণ-তরুণীদের প্রতিনিধিদলের একজন হিসেবে এবার ভারতের পরিচিত রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাঁর খুব আনন্দ লাগে।
পোং চিং বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে খুব দ্রুত উন্নয়ন এবং ব্যাপক পরিবর্তন হচ্ছে। তিনি বলেন,
'প্রথমবার ভারত সফরের সময় আমার যে অনুভূতি হয়েছিল, এবারের অনুভূতি তা থেকে একদম ভিন্ন। সেখানকার পরিবর্তন খুব দ্রুত ও বিশাল।'
খুব ভালো ব্যক্তিত্বের কারণে পোং চিং বেশ কয়েকজন ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে সক্ষম হন। যতবার তিনি ভারত ভ্রমণে যান, তাঁর ভারতীয় বন্ধুরা তাকে তাদের বাড়িতে বেড়ানোর জন্য আমন্ত্রণ জানান। পোং চিং বলেন, ভারতীয় মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারা একটি আনন্দের ব্যাপার। তিনি বলেন,
'আমি মনে করি, ভারতীয় বন্ধুরা খুব আন্তরিক ও উত্সাহী।'
মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের পর পোং চিং সি ছুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া কেন্দ্রে চীন-দক্ষিণ এশিয়া সম্পর্ক বিষয়ে গবেষণা করছেন। তাই তার ভারত যাওয়ার সুযোগও বেড়েছে। নয়াদিল্লি, মুম্বাই, কোলকাতা, শিমলা, চন্ডিগড় ও ব্যাঙ্গালোরসহ অনেক জায়গা ভ্রমণ করেছেন তিনি। প্রতিবার ভারত ভ্রমণের সময় তিনি সুন্দর কাপড়, প্রাকৃতিক প্রসাধনী এবং চমত্কার হাতশিল্পজাত দ্রব্যসহ অনেক পণ্য কিনে আনেন বন্ধুদেরকে উপহার হিসেবে দিতে।
অবসর সময় পোং চিং বলিউড চলচ্চিত্র এবং ভারতীয় নাচ ও গান উপভোগ করতে পছন্দ করেন। মাঝেমাঝে ইন্টারনেটে ভারতীয় গান ডাউনলোড করেন তিনি। যদিও তিনি হিন্দি ভাষা বলতে পারেন না, তবে হিন্দি গান গাইতে পারেন।
চীনের তরুণ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে এবারেরটি ছিল তার প্রথম ভারত সফর। সেজন্য এবারের সফর তার জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা। এবারের ভারত সফর প্রসঙ্গে পোং চিং বলেন, এবারের সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার হলো প্রেসিডেন্ট ভবন পরিদর্শন করা এবং প্রেসিডেন্টের অভ্যর্থনায় যোগ দেওয়া। তিনি বলেন,
'আগে আমি বাইরে থেকে প্রেসিডেন্ট ভবন দেখেছি। এবার খুব ভাগ্যের ব্যাপার হলো যে, আমরা ভবনের ভেতরে গিয়েছি। প্রেসিডেন্ট নিজ উদ্যোগে আমাদেরকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। তিনি খুব বন্ধুত্বভাবাপন্ন।'
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও ভারতের মধ্যে ঘন ঘন বিনিময় হচ্ছে। পোং চিং মনে করেন, সুপ্রাচীন সভ্যতার দেশ হিসেবে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে চীন ও ভারতের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। বর্তমানে দুর্বল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দু'দেশের হাতে হাত মিলিয়ে সহযোগিতা করা উচিত্। দু'দেশের তরুণ-তরুণীদের জন্য বোঝাপড়া বাড়ানো এবং অব্যাহতভাবে মৈত্রী জোরদার করা উচিত্। তিনি বলেন,
'আমি মনে করি, চীনের মতো ভারত একটি প্রাণবন্ত তারুণ্যের দেশ। আমাদের দু'দেশের তরুণ-তরুণীদের পারস্পরিক জানাশোনা গভীর করা এবং বিনিময় জোরদার করা উচিত্। পরস্পরের সঙ্গে সংলগ্ন এ দু'টি দেশ আরো উন্নত ও সমৃদ্ধশালী হবে এই শুভ কামনা করি।'
লিলি/এসআর
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |