Web bengali.cri.cn   
চীনের কুংফুর ব্রাজিল জয়
  2012-03-14 12:36:41  cri
গত ষাটের দশকে ব্রাজিলে চীনের কুংফু সম্পর্কিত চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী শুরু হওয়ার পর পরই মার্শাল আর্ট উশু জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে দেশটিতে। বর্তমানে ব্রাজিলে উশু শিখছেন - এমন মানুষের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ব্রাজিলের শিক্ষার্থীদের জন্য উশু শুধু এক ধরনের ক্রীড়া নয়; এটা চেতনা, সংস্কৃতি ও দর্শনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট এক ধরনের শরীরচর্চা।

সম্প্রতি ব্রাজিলের উশু ফেডারেশনের মহাপরিচালক মার্কুস ভিনিসিয়াস আলভেস আমাদের সংবাদদাতাকে এক সাক্ষাত্কার দেন। সাক্ষাত্কারে তিনি উশু সম্পর্কিত তাঁর জানাশোনা এবং ব্রাজিলে উশু উন্নয়নের অবস্থা ব্যাখ্যা করেন।

ব্রাজিলের উশু ফেডারেশন ১৯৯২ সালে সাও পলোয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ব্রাজিলের ২৭টি রাজ্য ও ২৪টি জেলায় ফেডারেশনের শাখা সংগঠন আছে। ব্রাজিল উশু ফেডারেশনে পাঁচ সহস্রাধিক পেশাদার উশু খেলোয়াড় রয়েছে। পঁচিশ বছর বয়সী রোদরিগো দা সিলভা হচ্ছেন ফেডারেশনের একজন পেশাদার উশু খেলোয়াড়। তিনি সংবাদাতাকে জানান, চলচ্চিত্রই তাঁকে চীনের কুংফু বিশ্বে নিয়ে যায়। তিনি বলেন,

'মাত্র ৫ বা ৬ বছর বয়স থেকেই আমি চীনের কুংফু চলচ্চিত্র দেখতে পছন্দ করি। চীন ছাড়া অন্যান্য দেশের কুংফু চলচ্চিত্রের প্রতি আমার কোনো আগ্রহ ছিলো না।'

সতের বছর বয়সে রোদরিগো উত্তর শান লিন এবং পাঁচ বছর পর তিনি ইয়াং শি থাই-জি শিখতে শুরু করেন। বর্তমানে তিনি কেবল থাই-জি ও উত্তর শাও লিন বিষয়ক শিক্ষক নন; পেশাদার থাইজি খেলোয়াড়ও। তিনি বলেন, এ দু'টি বিষয়ই তাকে অনেক সাহায্য করেছে। তিনি বলেন,

'আমি একটু মেজাজি। কিন্তু উশু বিশেষ করে থাইজি আমাকে বেশ সাহায্য করেছে। বলপ্রয়োগ খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বলপ্রয়োগের পেছনের জিনিস। যেমন, দর্শন, সঠিক-ভুল বিচার করার ক্ষমতা, সংযম বজায় রাখা প্রভৃতি। এসব উপাদান আমাদের সিদ্ধান্তের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।'

ব্রাজিলে স্থানীয় উশু, অর্থাত্ ক্যাপেইরা এবং জাপান থেকে সূত্রপাত হওয়া ব্রাজিলিয়ান জিউ-জিতসু খুব বিখ্যাত ছিল। কিন্তু এখন অধিক থেকে অধিকতর সংখ্যক ব্রাজিয়ান চীনের কুংফু পছন্দ করছে। জানা গেছে, ব্রাজিলের উশু ফেডারেশনে নিবন্ধিত উশু অনুরাগীদের সংখ্যা ৫০ বা ৬০ হাজারে দাঁড়িয়েছে এবং এই সংখ্যা বেড়ে চলেছে। শুধু সাও পলো রাজ্যে দু' শতাধিক উশু কেন্দ্রে চীনের উশু শিক্ষা দেয়া হয়।

ব্রাজিলে উশু জনপ্রিয় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার উশু প্রতিযোগিতার মানও বাড়ছে। দু হাজার আট সালের পেইচিং অলিম্পিক গেমসে ব্রাজিল উশুতে গোটা আমেরিকার মধ্যে পদক অর্জনকারী একমাত্র দেশ ছিলো। মার্কুস বলেন, ব্রাজিলে উশুর উন্নয়নে চীন ব্যাপক সমর্থন দিয়ে আসছে। ব্রাজিলের উশু সমিতি চীনের উশু সমিতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বজায় রেখেছে। প্রশিক্ষণ ও সাজ-সরঞ্জাম ক্ষেত্রে চীনের উশু সমিতি ব্রাজিলকে বেশ সাহায্য দিয়ে আসছে। মার্কুস বলেন,

'উশু চীনের জাতীয় নৈপুণ্য। আমরা চীন সরকারের ব্যাপক সমর্থন পেয়ে আসছি। যেমন, গত বছরের আগস্ট মাসে চীনের উশু সমিতি প্রথমবারের মতো দু'জন উশু প্রশিক্ষককে ব্রাজিল পাঠায়। তাঁরা অক্টোবর মাসে তুরস্কে আয়োজিত উশু বিশ্বকাপে ব্রাজিলের অংশগ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণ দেন।'

বর্তমানে ব্রাজিল উশু ফেডারেশন প্রতি বছর চীনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য প্রতিযোগী পাঠায়। আগামী বছর থেকে প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ ছাড়াও, ফেডারেশনটি চীনে সাংস্কৃতিক ভ্রমণের আয়োজন করবে। মার্কুস বলেন, চীনের সংস্কৃতি সম্পর্কিত এমন ধরনের কর্মসূচি আয়োজনে তাঁর আগ্রহ আছে। তিনি বলেন, সুযোগ পেলে তিনি চীনে আসতে চান। চীনে তাঁর সবচেয়ে আগ্রহের জায়গা হলো সোং শান শাও লিন মন্দির। কারণ চীনের কুংফু চলচ্চিত্রে তিনি সবসময় এই জায়গাটি দেখেছেন।

লিলি/এসআর

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040