|
'ফাং চিয়ান পেই' আর্জেটিনার ম্যানোর রেস্তোরাঁটি পেইচিংয়ের উপকণ্ঠে বিমান বন্দরের কাছাকাছি অঞ্চলে অবস্থিত। এর আয়তন ৩ হাজার ২ শ'রও বেশি বর্গমিটার। এখানকার পরিবেশ গাছপালায় ভরা খুবই সুন্দর। এ উদ্যানের কেন্দ্রস্থলে দাঁড়িয়ে আছে একটি সাদা ভাষ্কর্য অর্থাত্ 'ফাং চিয়ান পেই' যা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। এ উদ্যানের উপ-মহাব্যবস্থাপক থান ফাং লান চিং অবহিত করে বলেন, এ উদ্যানের নকশার মধ্য দিয়ে স্পষ্টভাবে আর্জেটিনার স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:
"এ 'ফাং চিয়ান পেই' হচ্ছে বুয়েনস আইরিস শহর প্রতিষ্ঠার ৪০০তম বার্ষিকী উপলক্ষে স্মৃতি সৌধ প্রোটোটাইপে'র এক তৃতীয়াংশ। এ সৌধের কেন এই নাম হয়েছে সেটা হলো এটি একটি দৃষ্টি নন্দন স্থাপত্য। সবাই যাতে সহজেই মনে রাখতে পারেন। অতিথি আসলে , আমরা তাদেরকে বলতে পারি যে এ 'ফাং চিয়ান পেই'র দিকে আসেন"।
খাবার ঘরে ও কফি রুমে ৪০ হাজার পটল ও লাল মদ রাখতে পারা যায়। যেখানে সেখানে আর্জেটিনার সাজানো বিষয় সব দেখা যায়। যেমন আর্জেটিনা ফুটবল ক্লাবের পতাকা এবং খাবার ঘরে বিক্রী হওয়া আর্জেটিনার চকলেট। উপ-মহাব্যবস্থাপক আমাদেরকে এ উদ্যান নির্মাণের আসল কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন
"আমাদের প্রধান হচ্ছেন একজন চীনা বংশোদ্ভূত আর্জেটিনার অধিবাসী। তিনি আর্জেটিনার লাল মদ ও বার্বিকিউ খুবই পছন্দ করেন। অন্য দিকে, পেইচিংয়ের বার্বিকিউ সাধারণত ব্রাজিল ও দ. কোরিয়ার বার্বিকিউয়ে ভরা, তবে আর্জেটিনার বার্বিকিউ খুবই কম রয়েছে বলে মনে করা হয়। সবাই আর্জেটিনা বার্বিকিউর কথা খুবই কম জানেন। সুতরাং, আমাদের প্রধান কিছু স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জিনিস তৈরী করতে চান"।
আর্জেটিনা ও চীনের মধ্যে দূরত্ব অনেক বেশি । আসল বার্বিকিউ তৈরীর জন্য ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত 'ফাং চিয়ান পেই' বার্বিকিউ খাবারের উপকরণ ও পাচক প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সকলকে এক সন্তুষ্টজনক অবস্থান এনে দিয়েছে। এ সম্পর্কে উপ-মহাব্যাপস্থাপক বলেন:
"আমাদের অধিকাংশ খাবারের উপকরণ আর্জেটিনা থেকে আমদানি করা হয়। এ ছাড়া ,আমাদের পাচকরাও সবাই আর্জেটিনার । তাঁরা আমাদের এখানকার পাচকদেরকে প্রশিক্ষণ দেন। প্রায় দেড় বছরের মতো হলো তাঁরা স্বদেশে ফিরে গেছেন। এখন এখানকার সব খাবার আমাদের নিজেদের পাচকদের তৈরি"।
তবে দক্ষিণ আমেরিকার বার্বিকিউর চীনা বাজারে প্রবেশ করা একটি সহজ ব্যাপার নয়। কী ভাবে পেইচিংয়ের অধিবাসীকে আর্জেটিনার সুস্বাদু খাবার গ্রহণ করাতে পারেন সেটা হচ্ছে খাবার তৈরির সাফল্য ও ব্যর্থ হওয়ার এক চাবিকাঠি বিষয়। এ খাবার তৈরি ঘরের প্রধান পাচক বলেন, তাঁরা এ ব্যাপারে বেশ অনেক চেষ্টা করেছেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:
"আর্জেটিনার বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাবারের ওপর আমরা সবসময় দৃষ্টি রাখি এবং বেশ কয়েকটি বিষয়কে অবিকল বজায় রেখেছি। তবে যদি এ খাবার বিক্রীর অবস্থা ভাল না হয়, তাহলে এ খাবার তৈরীর উপায় আমরা বজায় রাখলেও এ খাবারের নাম আর মেনুতে দেখা যাবে না"।
আমাদের নেতা কিছু স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জিনিস তৈরী করতে চান।
'ফাং চিয়ান পেই' বার্বিকিউ উদ্যানে অতিথিরা কেবল যে আর্জেটিনার আসল খাবার খেতে পারেন শুধু তা নয়, এখানে এসে আর্জেন্টিনার সংস্কৃতির স্বাদও নিতে পারেন। এখানে খাওয়া একজন অতিথি হুয়াং বলেন:
"প্রথমত, আমি মনে করি, এখানকার বার্বিকিউ বেশ স্বতেজ ও সুস্বাদু। খাবার সময় ভাল লাগে ও মন ভরে যায়। মনে হয় এর মধ্য দিয়ে আমরা এক স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সংস্কৃতিকে অনুভব করেছি। এ সংস্কৃতি ঠিক যেন দক্ষিণ আমেরিকার সবুজ ঘাসের গালিচার গন্ধ মাখা বিশিষ্ট বার্বিকিউ সংস্কৃতি। দ্বিতীয়ত, বার্বিকিউর সাহায্যে দক্ষিণ আমেরিকার সংস্কৃতি ও আর্জেটিনার সংস্কৃতিকে চীনে এনে চীনা জনগণের কাছে পরিচিত করে তোলা"।
সুস্বাদু খাবারের পেছনে সৃষ্ট সাংস্কৃতিক বিষয় হচ্ছে একটি রেস্তোঁরা সুষ্ঠুভাবে চালানোর ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ নিশ্চয়তাক অবশ্যই থাকা। বর্তমানে 'ফাং চিয়ান পেই' আর্জেটিনার বার্বিকিউ উদ্যান ধারাবাহিক কর্মসূচীর মাধ্যমে আরও বেশি চীনাকে তাদের সুস্বাদু খাবার ও সংস্কৃতিকে জানান দিচ্ছে। এ সম্পর্কে উপ-মহাব্যবস্থাপক বলেন,
"গত বছর আমরা আর্জেটিনার গরুর মাংস সংক্রান্ত সপ্তাহের কর্মসূচীর আয়োজন করেছিলাম। এ বছর আগের মতো আরও আর্জেটিনার গরুর মাসং, লাল মদ ও দুধসহ বিভিন্ন খাবারের উন্নয়ন সংক্রান্ত কর্মসূচীর ব্যবস্থা নেবো"।
চীনে প্রাচীনকালের একটি কথা আছে, তা হলো ক্ষুধা সব কিছুকেই ছাড়িয়ে যায়। খাবার সংস্কৃতির মধ্যে যা একটি অপরিহার্য স্থান দখল করে আছে। খাবারের বিশেষ দূত হিসেবে 'ফাং চিয়ান পেই' আর্জেটিনার উদ্যান পেইচিং ও বুয়েনস এরিসের মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সেতু স্থাপন করেছে। বার্বিকিউ ও লাল মদের মধ্য দিয়ে চীন ও আর্জেটিনার মৈত্রী এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। এ সম্পর্কে এ উদ্যানের উপ-মহাব্যবস্থাপক আরও বলেন:
"আশা করি, আর্জেটিনার খাবার সংস্কৃতি ছাড়া আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিনিময় ও সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা একে অপরের মাঝে মৈত্রির সেতু গড়ে তুলতে পারবো। ফলে আর্জেটিনার সংস্কৃতি চীনে আসতে পারবে এবং চীনা সংস্কৃতিও আর্জেটিনায় যেতে সক্ষম হবে"।–ওয়াং হাইমান/আবাম
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |