|
জেলেনা ভাসিলজেভিক হচ্ছেন একজন সার্বিয় মেয়ে। তাঁর অধিকাংশ সহপাঠীর চেয়ে তিনি ভাগ্যবান। কারণ তিনি স্বপ্নের দেশ, অর্থাত্ চীনে এসেছেন। তিনি বলেন,
'আগে আমি বই বা ক্লাসরুমে চীন সংক্রান্ত জ্ঞান শিখতাম। চীনের প্রতি আমার একটি অস্পষ্ট ধারনা ছিলো।'
সার্বিয়ায় চীনা ভাষা শেখার অভিজ্ঞতার সুবাদে চীনে আসার পর তিনি সবকিছু মোকাবিলা করতে পারেন। চাকরি খুঁজে বের করা হলো তাঁর প্রথম কর্তব্য। ভাগ্যের বিষয় হলো, বিভিন্ন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার ফলে তিনি অনেক চাকরির তথ্য ও চ্যানেল পেয়েছেন। তিনি বলেন,
'আমার প্রথম চাকরি হলো একটি কিন্ডারগার্টেনে ইংরেজী শিক্ষাদান। কারণ এমন ধরনের কাজ করলে অতিরিক্ত প্রযুক্তি থাকার প্রয়োজন নেই। আমার জন্য এই কাজ সহজ এবং সরাসরি করতে পারি।'
সার্বিয়ায় কর্মসংস্থানের পরিবেশ আশাব্যঞ্জক নয় বলে চীনে এক বছর থাকার পর জেলেনা অব্যাহতভাবে চীনে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্ডারগার্টেনে কাজ করার এক বছর পর তাঁকে নতুন একটি চাকরি খুঁজে বের করতে বাধ্য হন। এ প্রসঙ্গে জেলেনা বলেন,
'আমার দ্বিতীয় চাকরি হলো সার্বিয়ার একটি কোম্পানিতে বাণিজ্য করা। এমন একটি সুযোগ পাওয়ায় আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি।'
কোম্পানিতে চীনা কর্মীদের থাকার কারণে তাঁর চীনা ভাষা বলতে পারা এই সুবিধা পুরোপুরিভাবে কাজে লাগানো যায় নি। তাই অবশেষে তিনি এই কোম্পানি ত্যাগ করেন। বেঁচে থাকার জন্য তিনি বিভিন্ন জায়গায় চাকরির সুযোগ খুঁজে বের করতে শুরু করেন। একদিন তিনি একজন বন্ধুর ই-মেইল পান। ফলে তিনি চীনে আসার পর তৃতীয় চাকরি পান। এই চাকরি প্রসঙ্গে জেলেনা ভাসিলজেভিক বলেন,
'আমার একজন বন্ধু আমাকে পাঠানো এক ই-মেইলে বলেন, একটি দাতব্য সংস্থায় কাজ করার সুযোগ আছে। আমার কোন আগ্রহ আছে কিনা। জনগণকে সাহায্য করতে পারাকে আমি মনে করি খুব ভালো কাজ, এটিই একটি ভালো চাকরি।
অবশেষে তাঁর স্বপ্নের চাকরি পেয়ে জেলেনা ভাসিলজেভিক চীনে আনন্দদায়ক জীবন উপভোগ করছেন। তিনি অধিকাংশ বিদেশীর মত অবসর সময়ে দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করেন, ভালো খাবার খান এবং নানা রকমের মদ পান করেন। তিনি বলেন,
'পেইচিংয়ে আমার সবচেয়ে প্রিয় পার্ক হলো গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ। সেখানকার দৃশ্য খুবই সুন্দর। আমি প্রতি মাসে সেখানে একবার যাই। আমি মহাপ্রাচীর পছন্দ করি। মহাপ্রাচীর থেকে দূরদূরান্তের দৃশ্য অতন্ত সুন্দর। মাঝে মাঝে আমি হৌহাইতে বেড়াতে যাই।'
এ সময় জেলেনা ভাসিলজেভিক একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেন। কাব্যগ্রন্থে তিনি জীবনের প্রতি তাঁর অনুভব অন্যান্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চান। তিনি বলেন,
'বই লেখা হলো আমার চীনের জীবনের একটি অংশ।'
খুশিতে দু'বছর সময় কাটিয়েছেন জেলেনা ভাসিলজেভিক। গত বছরের অক্টোবর মাসে তিনি আবার চাকরি হারান। চীনে আসার ছ'বছরের মধ্যে তিনি বাস্তবতার সাথে শীত ও উষ্ণতা উপলব্ধি করেন। চীনে থাকা বা চীন ত্যাগ করা হলো তাঁর সম্মুখীন একটি সমস্যা। অবশেষে তিনি প্রথম পথটাকেই বেছে নিয়েছেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন, চীনে আরো বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে। আচ্ছা, আজকের অনুষ্ঠানের শেষে আশা করি, জেলেনা ভাসিলজেভিক শিগগিরি তাঁর পছন্দের চাকরি খুঁজে পাবেন।
লিলি/আবাম
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |