|
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা এখন যে সঙ্গীত শুনছেন তা হলো আ হু দিয়ে বাজানো সঙ্গীত। আ হু চীনের বেহালা নামে পরিচিত। কেন্দ্রীয় সঙ্গীত ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক চাও হান ইয়াং বলেন,
'আ হু'র কন্ঠ জনগণের কন্ঠস্বের সবচেয়ে কাছাকাছি। তার সুর অনেক নমনীয় এবং মনকে মুগ্ধ করতে সক্ষম। আ হু'র দুটি তন্ত্রী যেন জনগণের স্বরতন্ত্রী। মোহময়, বিক্ষুব্ধ, বেদনাময় ও আনন্দময় চিন্তাভাবনা প্রাণবন্তভাবে প্রকাশ করতে সক্ষম।'
আগে আ হু র মাধ্যমে শুধু বেদনার সুর বাজানো হতো । চাও হান ইয়াং বলেন, যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমানে আ হু সঙ্গীত অনেক আনন্দদায়ক হয়ে উঠেছে।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা এখন যে সঙ্গীত শুনছেন তা 'ঘোড়-দৌঁড়' নামে একটি আনন্দময় আ হু সঙ্গীত।
আ হু'র আগেকার নাম ছিলো শি ছিন। তারপর নাম ছিলো হু ছিন। এর এক হাজারেরও বেশি বছরের ইতিহাস রয়েছে। আ হু' তৈরী করা সহজ এবং সহজে বহণযোগ্য বলে সুপ্রাচীনকাল থেকেই এটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত।
আধুনিক যুগে আ হু নামটি সৃষ্টি করা হয়। ২০ শতাব্দীর প্রথম দিকে পশ্চিমা সঙ্গীতের সংস্কৃতি চীনের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির ওপর তুমুল আঘাত হানে ।কিন্তু ঐতিহ্য ও পশ্চিমা সঙ্গীতকে মিলিয়ে সংস্কারের প্রবণতাও দেখা দেয়।এই সংস্কারের গতিধারায় একজন মহান সঙ্গীতজ্ঞ হলেন লিউ থিয়ান হুয়া ।
প্রিয় শোতাবন্ধুরা, আপনারা এখন যে সঙ্গীত শুনছেন তা হলো আ হু'র একক বাদ্যযন্ত্র পরিবেশিত সঙ্গীত। বিখ্যাত লোকসঙ্গীতের রচয়িতা ও বাদক লিউ থিয়ান হুয়া তা সৃষ্টি করেছেন।
চীনের আ হু'র শিল্পের উন্নয়নের ইতিহাসে লিউ থিয়ান হুয়া একজন উল্লেখ্যযোগ্য লোক। তিনি পশ্চিমা বাদ্যযন্ত্রের বাজানোর পদ্ধতি ও নৈপুণ্য গ্রহণ করে আ হু'র বাজানোর পদ্ধতিতে গুরুতর সংস্কার করেছেন, ফলে আ হু'র সুরের আওতা সম্প্রসারিত হয়েছে এবং আ হু'র অভিব্যক্তিও বেড়েছে।
আগে আ হু শেখার সময় ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকের বাজানো সঙ্গীত শুনে শিখতেন। আ হু'র উন্নয়নে লিউ থিয়ান হুয়ার আরেকটি অবদান হলো আ হুকে চীনের উচ্চ শিল্প বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা, ফলে আ হু সঙ্গীত শিক্ষাদানের একটি পেশাগত বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
লোকসঙ্গীতজ্ঞ লিউ থিয়ান হুয়া তাঁর মাত্র ৩৭ বছরের জীবনে আ হুর জন্য যে মহান অবদান রেখেছেন তা সত্যিই বিস্ময়কর। তাঁর সমসাময়িক আরেকজন লোকশিল্পী চীনা জনগণের মধ্যে সুপরিচিত।
প্রিয় শোতাবন্ধুরা, আপনারা এখন যে সঙ্গীত শুনছেন তা হলো বিখ্যাত আ হু সঙ্গীত 'আ ছুয়ান ইং ইউয়ে'। তা প্রায়ই চীনের আ হু'র একটি প্রতিনিধিত্বকারী শব্দ। এই সঙ্গীতের রচয়িতা হলেন হুয়া ইয়ান চুন নামে একজন অন্ধ লোকশিল্পী। মানুষ তাঁকে আ বিং বলে ডাকেন। 'আ ছুয়ান ইং ইউয়ে' সঙ্গীতে জগতের দুঃখের অভিজ্ঞতা একজন অন্ধ লোকশিল্পীর অনুভূতিতে প্রকাশ করা হয়েছে।
২০ শতকের ৫০ থেকে ৭০ এর দশকে চীনের মুলভূভাগে আ হু'র লক্ষ্যণীয় উন্নতি হয়েছে। বিপুল সংখ্যক উন্নত আ হু সঙ্গীত সৃষ্টি হয়েছে। গত শতাব্দীর ৬০ এর দশকে 'শাংহাইয়ের বসন্তকাল' শিরোনামে প্রথম আ হু প্রতিযোগিতা হলো আ হু'র উন্নয়নে তাত্পর্যপূর্ণ একটি বড় ঘটনা। শিক্ষক চাও হান ইয়াং বলেন,
'৬০ দশক একটি মোক্ষম সময়। শাংহাই বসন্তকাল নামে আ হু প্রতিযোগিতায় অনেক ভালো সঙ্গীতের সৃষ্টি হয়।'
২০ শতাব্দীর ৮০'র দশকে চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমা সঙ্গীত ব্যাপকভাবে চীনে প্রবেশ করে। আ হু শিল্পে বহুমুখী আবহ ফুটিয়ে তোলা হয়। আ হু সঙ্গীত কনসার্টের মতো লম্বা ও জটিল রূপে দেখা দিয়েছে। আধুনিক সুর রচনার পদ্ধতি গ্রহণ করে রচনা করা আ হু সঙ্গীতকর্মের মধ্য দিয়ে আ হু'র উন্নয়ন ইতিহাসের একটি নতুন সময়পর্বে প্রবেশ করেছে।
লিলি/শান্তা
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |