Web bengali.cri.cn   
পেইচিং আন্তর্জাতিক বেসরকারী মৈত্রী ফোরাম
  2011-09-28 19:48:40  cri
সম্প্রতি 'পেইচিং আন্তর্জাতিক বেসরকারী মৈত্রী ফোরাম' জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, রাশিয়া, ফ্রান্স, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ মোট ২০টিরও বেশি দেশের ৫০টি বেসরকারী মৈত্রী সংস্থা এবারের ফোরামে অংশ নিয়েছে। ফোরামের প্রতিপাদ্য হলো 'বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার উন্নয়ন এবং সম্মিলিতভাবে সম্প্রীতিমূলক বিশ্ব গঠন'। এ ফোরামের লক্ষ্য হলো বিশ্বের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে পেইচিংয়ের বেসরকারী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং বেসরকারী আন্তর্জাতিক বিনিময়ের সংযোগ সম্প্রসারিত করা। ফোরামে অংশগ্রহণকারীদের এ বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছেছেন এখন এবারের ফোরাম সম্পর্কিত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন শুনুন।

এবারের ফোরাম পেইচিং পৌর বৈদেশিক মৈত্রী সমিতিসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পেইচিং পৌর বৈদেশিক মৈত্রী সমিতির মহাপরিচালক চাও চিয়া ছি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন,

'বর্তমানে পেইচিং চীনের বৈশিষ্টসম্পন্ন বিশ্বমুখীতার দিকে এগুচ্ছে। আমাদের এবারের ফোরাম আয়োজনের লক্ষ্য হলো মৈত্রী সমিতির সুবিধা পালন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বেসরকারী সংস্থাগুলোর অভিজ্ঞতা গ্রহণ, বিশ্বের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে পেইচিং শহরের বেসরকারী বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, সহযোগিতামূলক ও উভয়ের জন্য কল্যাণকর পদ্ধতি খুঁজে বের করা, পেইচিংয়ের জন্য সুষ্ঠু বৈদেশিক বিনিময়ের আন্তর্জাতিক পরিবেশ সৃষ্টি করা, পেইচিংয়ের বৈদেশিক প্রভাব ও আন্তর্জাতিকীকরণের মান উন্নত করা এবং বিশ্বের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে পেইচিংয়ের অভিন্ন সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা।'

'বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার উন্নয়ন এবং সম্মিলিতভাবে সম্প্রীতিমূলক বিশ্ব গঠন' নামে এবারের ফোরামের প্রতিপাদ্য অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশী বেসরকারী মৈত্রী সংস্থার মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া-চীন মৈত্রী সমিতির উপ-পরিচালক, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার শাখা সমিতির মহাপরিচালক নেভিল গ্রীন ফোরামে অভিন্ন লক্ষ্যের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মৈত্রী গভীরতর করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন,

'যুগ এখন সত্যিই পরিবর্তিত হয়েছে। চীনের সঙ্গে সুষ্ঠু সম্পর্ক স্থাপনকারী মৈত্রী সমিতি হিসেবে আমাদের যুগের উন্নয়নের গতির সাথে সমতালে চলা উচিত। তাদের মধ্যে একটি কার্য হলো পাঁচ বছর সময় দিয়ে এবারের ফোরামের প্রতিপাদ্য, অর্থাত সত্যিকার আন্তর্জাতিক মৈত্রী ও বিশ্বের সম্প্রীতি বাস্তবায়ন করা।'

মঙ্গোলিয়া-চীন মৈত্রী সমিতির মহাপরিচালক এম.চিমেদসয়ে ফোরামে বলেন, বেসরকারী কূটনীতি হলো দেশের সঙ্গে দেশের যোগাযোগের অপরিহার্য গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এবারের ফোরাম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বেসরকারী কূটনৈতিক বিনিময় এবং পরস্পরের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা গ্রহণের জন্য খুব সহায়ক। চিমেদসয়ে চীনা ভাষায় বলেন,

'বেসরকারী কূটনীতি হলো সরকারী কূটনীতির গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য ও পরিপূরক। বেসরকারী বিনিময় ও সহযোগিতা হলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সরকারী কূটনীতি যে গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক ভূমিকা পালন করতে পারে না বেসরকারী কূটনীতি তা পালন করতে পারে। কূটনৈতিক সম্পর্ক হলো জটিল এবং দেশের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক মাঝে মাঝে পরিবর্তিত হচ্ছে। কিন্তু বেসরকারী ও জনগণের মৈত্রী চিরস্থায়ী। বিশ্বের দেশের সঙ্গে দেশের সম্পর্কের মধ্যে কোন বিষয় দু'দেশের জনগণের মৈত্রীকে ছাড়িয়ে যায় না। তাই আমরা সবসময় বলি, সরকারী কূটনীতি নেতৃত্বাধীন ভূমিকা পালন করে এবং বেসরকারী কূটনীতি হলো এর মৌলিক ভিত্তি। বেসরকারী কূটনীতি দেশের সম্পর্কের জন্য একটি স্থিতিশীল ভিত্তি স্থাপন করতে সক্ষম।'

Tokyo, Japan-China Friendship Association টোকিও জাপান-চীন মৈত্রী সমিতির মহাপরিচালক উটসুনোমিয়া তোকুইচিরো আমাদের বেতারের সংবাদদাতাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, তাঁর দাদা উতসুনোমিয়া তোকুমা ১৯৭৮ সালে টোকিও জাপান-চীন মৈত্রী সমিতির প্রথম জন মহাপরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর নাতি হিসেবে তিনি দাদা ও পূর্বপ্রজন্মের স্থাপিত ভিক্তি গ্রহণ করে জাপান ও চীনের বেসরকারী মৈত্রীর কাজ চালিয়ে যাবেন। উটসুনোমিয়া তোকুইচিরো বলেন,

'বর্তমানে যুগের পরিবর্তন অনেক দ্রুত হচ্ছে। আমার দাদার সময়ের তুলনায় পরিবেশ অনেক বদলে গেছে। আমার দাদার যুগে চীন ও জাপানের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময়ের কার্যক্রম চালাতে চাইলে দু'দেশের সরকার ও জনগণের অভিন্ন প্রচেষ্টার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বর্তমানে দু'দেশ স্বাধীনভাবে বিনিময়ের কার্যক্রম চালাতে পারে। যেমন, এবারের ফোরাম আমাদেরকে একটি ভালো প্লাটফর্ম যুগিয়েছে। উল্লেখ্য যে, আমাদের কেন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা দরকার তা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে। ভাবানুভূতির বিনিময় না করলে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিনিময় করলে দু'দেশের সম্পর্কের যথাযথ উন্নয়ন হবে না। বেসরকারী বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময় বজায় রাখলে এবং পারস্পরিক সমঝোতা জোরদার করলে জাপান ও চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বংশপরম্পরায় প্রচলিত থাকবে।'

পাকিস্তান-চীন মৈত্রী সমিতির বালুচিস্তান প্রদেশের শাখা সমিতির মহাপরিচালক সৈয়দ ফাসেইহ ইকবাল হচ্ছেন পাকিস্তান-চীন মৈত্রী সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৭৫ সালে এ সমিতির গঠনের পর থেকে তিনি সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি ও তথ্যমাধ্যমসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু'দেশের বেসরকারী বিনিময় ও এ সমিতির উন্নয়ন এগিয়েন নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছেন। তিনি বলেন,

'পেইচিং আন্তর্জাতিক বেসরকারী বন্ধুত্বপূর্ণ ফোরামের মধ্য দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বেসরকারী বন্ধুব্যক্তিরা একত্রিত হয়েছেন। তাঁরা হচ্ছেন মৈত্রীর সেতু।'

ফোরামে অংশগ্রহণকারী দক্ষিণ কোরিয়া-চীন নারী বিনিময় সমিতির মহাপরিচালক হাইয়োং আই-য়ের এবারের বিশেষ বিষয় হলো নারীর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিদ্যাগত বিনিময়। তিনি আশা করেন, ভবিষ্যতে দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের সহযোগিতা দিন দিন জোরদার হবে। বিশেষ করে এন জি ও সম্পর্কিত নানা ধরনের তত্পরতার ওপর গুরুত্ব বাড়বে।

চীনের এন জি ও'র উন্নয়ন ও সামাজিক অবদান প্রসঙ্গে পেইচিং পৌর বৈদেশিক মৈত্রী সমিতির উপ-পরিচালক এবং চীনের বিশ্ব শান্তি তহবিলের চেয়ারম্যান লি রুও হোং এর আস্থা অনেক বেশি। তিনি বলেন, বর্তমানে তালিকাভূক্ত হওয়া চীনের সামাজিক সংস্থার সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার। সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, মোট সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। প্রতি বছর এই সংখ্যা ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চীনের সামাজিক সংস্থা সমাজের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জীবিকা উন্নয়ন, নারী ও শিশুর অধিকার সংরক্ষণ, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জাতিসংঘের সহস্রাব্দের লক্ষ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সক্রিয় ও বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040