Web bengali.cri.cn   
অন্তর্মঙ্গোলীয় বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ—সি ছিন ছাও কে থু
  2011-04-13 19:02:17  cri

সি ছিন ছাও কে থু'র জন্মস্থান সুন্দর বা লিন তৃণভূমিতে। এটা হলো অন্তর্মঙ্গোলিয়ার বিখ্যাত নাচগানের জন্মভূমি। এই লোকশিল্প জন্মস্থানে বড় হওয়া সি ছিন ছাও কে থু ছোটবেলা থেকেই মঙ্গোলীয় জাতির সঙ্গীত ও শিল্পের প্রতি আগ্রহী উঠতে শুরু করেন। ছোটবেলায় তিনি একজন সঙ্গীতজ্ঞ হওয়ার ইচ্ছে হৃদয়ে পোষণ করতেন। ১৯৮৮ সালে সি ছিন ছাও কে থু অন্তর্মঙ্গোলিয়ার নর্মাল ইউনিভার্সিটির সঙ্গীত বিভাগে ভর্তি হন। স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়েই সঙ্গীত শিক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৯৭ সালে 'নীল মঙ্গোলীয় পার্বত্য এলাকা' শিরোনামের একটি গানে সুরারোপ করার মধ্য দিয়ে সি ছিন ছাও কে থু সঙ্গীতমঞ্চে প্রথম পরিচিতি লাভ করেন। এ গানে সুর দেয়ার সময় তিনি প্রথমবারের মতো তৃণভূমি ত্যাগ করেন এবং তৃণভূমির প্রতি তাঁর সুগভীর অনুভূতি ও ভালোবাসা সুরে মিলিয়ে দেন। তিনি বলেন,

"আমি মনে করি, আমরা তৃণভূমির ছেলেরা এখানে জন্মগ্রহণ করেছি এবং তৃণভূমির প্রতি আমাদের ভালোবাসা ছিন্ন করা যায় না।"

সি ছিন ছাও কে থু বলেন, তৃণভূমি হলো তাঁর মনে পবিত্র গান। তিনি জীবনের প্রতি নিজের ভালোবাসা এবং জন্মস্থানের প্রতি সুগভীর কৃতজ্ঞতা সঙ্গীতে ব্যক্ত করতে ইচ্ছুক।

'নীল মঙ্গোলীয় পার্বত্য এলাকা' শিরোনামের এই গানে কণ্ঠ দেয়া বিখ্যাত গায়িকা তে তে মা সুন্দর ও মধুর সুরের মধ্য দিয়ে জন্মস্থান ও তৃণভূমির প্রতি সি ছিন ছাও কে থুর সুগভীর ভালোবাসা অনুভব করতে পারেন। তিনি এভাবে মূল্যায়ন করেন, "এই গান অনেক সুন্দর এবং গানের কথাও মনোমুগ্ধকর। সি ছিন ছাও কে থু হচ্ছেন আমাদের মঙ্গোলীয় জাতির শ্রেষ্ঠ তরুণ সুরকার।"

নিজের প্রতিভা ও সঙ্গীতের ব্যাপারে নিজের সঠিক অনুভূতির ওপর নির্ভর করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সি ছিন ছাও কে থু তাঁর সুর রচনাকে উপজাতীয় শিল্পের মাটিতে বদ্ধমূল করে তুলছেন। এখনো পর্যন্ত তিনি ছশ'টিরও বেশি গানে সুর দিয়েছেন। এদের মধ্যে অনেক গান সারা চীনে জনপ্রিয়। সি ছিন ছাও কে থু'র প্রতিটি শিল্পকর্মে ও প্রতিটি সুরে তৃণভূমির সুগভীর আমেজে ভরপুর।

তাঁর সঙ্গীত শোনার সময় লোকেরা যেন অন্তর্মঙ্গোলিয়ার তৃণভূমির সবুজ তৃণ ও প্রবহমান নদী দেখতে এবং মৃদু সমীরণ অনুভব করতে পারেন। সঙ্গীতামোদীরা বলেন, তৃণভূমির আত্মা তাঁর মনোগ্রাহী সঙ্গীতের দ্বারা পূর্ণ হয়। এ প্রসঙ্গে সি ছিন ছাও কে থু বলেন

"সবচেয়ে জনপ্রিয় তিনটি গানে আমি কাঁদতে কাঁদতে সুর দিয়েছি।"

সি ছিন ছাও কে থু'র সুরারোপিত গান সম্পর্কে বলতে গেলে আরেক জনের কথা উল্লেখ করতে হবে। তিনি হচ্ছেন মঙ্গোলীয় জাতির গীতিকার উ না ছিন। তাঁরা যৌথভাবে অনেক জনপ্রিয় গান সৃষ্টি করেছেন। নিজের জুটি প্রসঙ্গে উ না ছিন বলেন,

"গানের মান ও শ্রোতাদের মধ্যে সমাদৃত হওয়ার মাত্রার দিক থেকে বলা যায়, সি ছিন ছাও কে থু মঙ্গোলীয় জাতির তরুণ সুরকারদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন।"

উ না ছিন আরো বলেন, সি ছিন ছাও কে থু'র সঙ্গীতের আকর্ষণীয় শক্তি হলো তিনি গানের সুরে সাধারণ মানুষের সাধারণ অনুভূতি ব্যক্ত করেন। তাঁর সুর সোজা ও সরল। তাঁর সঙ্গীতে তাঁর মনের বিশ্ব দেখা যায়।

প্রায় বিশ বছর ধরে সি ছিন ছাও কে থু আধুনিক সঙ্গীতের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী ও উপজাতীয় সঙ্গীতের সমন্বয়ের মাধ্যমে নিজের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্য স্থাপন করেন। নিজের শিল্পকর্মের মাধ্যমে আরো বেশি লোককে মঙ্গোলীয় জাতি ও অন্তর্মঙ্গোলিয়ার সঙ্গে পরিচিত করে তোলা হলো সি ছিন ছাও কে থু'র বৃহত্তম উচ্চাকাঙ্ক্ষা। তিনি বলেন,

"আমি মনে করি, অন্বেষণ না করলে জীবন পূর্ণাঙ্গ হবে না। আমার অনেক বন্ধু আমাকে বলেন, আসলে তুমি যথেষ্ঠ শ্রেষ্ঠ, লেখাপড়ার আর দরকার নেই। কিন্তু আমি সাফল্য লাভের সঙ্গে সঙ্গে আবিষ্কার করি যে, আমাকে অনেক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।"

এখন সি ছিন ছাও কে থু অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু শিল্প অন্বেষণের পথে তিনি কখনও থামেননি। তিনি যথাক্রমে চীনের কেন্দ্রীয় সঙ্গীত ইন্সটিটিউটে লেখাপড়া করেন এবং সঙ্গীতের সুর রচনার বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন।

আজকের অনুষ্ঠানের শেষে আমরা একসঙ্গে সি ছিন ছাও কে থু'র সুর দেয়া 'মনের অনুসন্ধান'নামে গানটি উপভোগ করবো।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040