Web bengali.cri.cn   
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার পাকিস্তান দপ্তরের মহাপরিচালক লি তুং লিনের বিশেষ সাক্ষাত্কার
  2011-01-12 17:24:29  cri
আপনারা পেইচিং থেকে প্রচারিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান শুনছেন। এখন শুনুন 'সাংস্কৃতিক সম্ভার' অনুষ্ঠানটি। পরিবেশন করছি আমি ... বন্ধুরা, আজকের 'সাংস্কৃতিক সম্ভার' অনুষ্ঠানে রয়েছে সাংস্কৃতিক ঘটনা,আপনাদের প্রিয় গল্পের ঝুলি এবং বেশ কয়েকটি সুন্দর গান। প্রথমে শুনুন সাংস্কৃতিক ঘটনা। ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার পাকিস্তান দপ্তরের মহাপরিচালক লি তুং লিন তাঁর দায়িত্বভার গ্রহণ থেকে এ পর্যন্ত তাঁর নেতৃত্বাধীন দল পাকিস্তানে বিশেষ অবদান রেখেছে। তিনি হচ্ছেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ইতিহাসে রাষ্ট্রীয় দপ্তরের মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব গ্রহণকারীর প্রথম চীনা। বন্ধুরা, আজকের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অনুষ্ঠানে আমরা মহাপরিচালক লি তুং লিনের গল্প নিয়ে আপনাদেরকে শোনাবো। লি তুং লিন ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থায় যোগ দেন। প্রথম দিকে তিনি থাইল্যান্ডে আঞ্চলিক দপ্তরের বিশেষ উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি স্মরণ করে বলেন, সেসময় আঞ্চলিক দপ্তরের মহাপরিচালক তাঁর কাছে জানতে চান মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য তিনি পাকিস্তান নাকি ফিজিতে যেতে চান। লি তুং লিন দ্বিধাহীনভাবে পাকিস্তানে যাওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন: ( রে১) "সেসময় সবাই আমাকে বললেন, পাকিস্তান ফিজির চেয়ে বড়, তার রাষ্ট্রীয় দপ্তরও ফিজির চেয়ে বড় এবং সংশ্লিষ্ট খাতও বড় বলে ব্যবস্থাপনার দিক থেকে বেশ কষ্টকর। তবে আমি চ্যালেঞ্জসম্পন্ন জায়গা পছন্দ করি। সুতরাং নিঃসন্দেহে আমি পাকিস্তান যেতে চাই। আসলে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে চীন ও পাকিস্তানের মৈত্রী সুদীর্ঘকালীন, দু'দেশের ভ্রাতৃপ্রতীম মৈত্রী সাগরের চেয়ে গভীর এবং পাহাড়ের চেয়ে উচুঁ। তাই পাকিস্তানে গিয়ে একজন ভাল চীনা বন্ধু হিসেবে আমি পাকিস্তানকে যথাসাধ্য সাহায্য প্রদান করতে আগ্রহী।" লি তুং লিন বলেন, ৬ বছরে পাকিস্তানের প্রতিটি জায়গায় তিনি সকল পাকিস্তানীর আন্তরিক আতিথেয়তা উপভোগ করেছেন। এ আতিথেয়তা এ কারণে নয় যে তিনি একজন জাতিসংঘ কর্মকর্তা, বরং এ কারণে যে তিনি একজন চীনা মানুষ। এ সম্পর্কে তিনি বলেন: ( রে২) "পাকিস্তানে রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ বা শিশু যেই হোক না কেন, সবাই চীনাদের প্রতি আন্তরিক সম্মান প্রদর্শন করেন এবং চীনাদের পছন্দ করেন। এক ছোট্ট উদাহরণ দিয়ে বলি, একবার আমার পরিবার বাইরে ভ্রমণ করেছিল। যাওয়ার পথে আমার গাড়ির টায়ার হঠাত্ ফেটে যায়। কোন উপায় না দেখে আমরা সবাই খুব উদ্বিগ্ন হয়ে উঠি। ঠিক এমন সময় ৭-৮জন তরুণ পাকিস্তানী আমাদেরকে সাহায্য করেন। তাঁরা আমার গাড়ির টায়ার বদলে একটা ভালো টায়ার লাগিয়ে দেন। আমি খুবই আনন্দিত হই। কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য তাঁদেরকে এক শ' ইউয়ান দেয়ার চেষ্টা করেছিলাম। তবে তাঁরা আমার টাকা গ্রহণ না করে বলেন, চীনাদের কোনো সহায়তা দিতে পারলে আমাদের বেশ আনন্দ লাগে। তাঁরা আমাদেরকে তাঁদের বাসায় চা খাওয়ার আমন্ত্রণও জানান। এ সাধারণ ব্যাপার থেকে স্পষ্ট যে, চীনাদের প্রতি পাকিস্তানীদের কেমন বিশেষ মনোভাব রয়েছে।" পাকিস্তানে দায়িত্ব পালনের ৬ বছরে লি তুং লিন নানা চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন হন। তবে তিনি সাফল্যের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রের দায়িত্ব সম্পন্ন করেছেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন: (রে৩) "৬ বছরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলা ও বিভিন্ন রকমের সংকটের মধ্যে কাটালাম। আমি মনে করি, বর্তমানে পাকিস্তানের জন্য বিশ্বের সহায়তা দরকার। একজন চীনা হিসেবে ও পাকিস্তানীর একজন ভালো বন্ধু হিসেবে আমরা তাদেরকে যথাসাধ্য সহায়তা দিতে দায়িত্বশীল। সুতরাং, গত ৬ বছরে পাকিস্তানের ভূমিকম্পে সহায়তা দেয়া, বন্যা দুর্যোগে সহায়তা দেয়া, নারীদের কর্মসংস্থানে সুযোগ সৃষ্টি করা, তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ দেয়া এবং পাকিস্তানে শ্রমিক বাজার পদ্ধতি গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমি বেশ অনেক প্রচেষ্টা চালিয়েছি।" পাকিস্তানে ভূমিকম্প ও বন্যার পর দুর্গত অঞ্চলে সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা শীর্ষে অবস্থানকারী প্রতিষ্ঠান। দেশটির সাধারণ ট্রেড ইউনিয়নের এক পুরস্কার বিতরণী সম্মেলনে লি তুং লিনের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার পাকিস্তান দপ্তরকে পুরস্কার দেয়া হয়। পাকিস্তান দপ্তরের সকল কর্মকর্তা মনে করেন, লি তুং লিন হচ্ছেন এ দপ্তরের এখনো পর্যন্ত দায়িত্বপালনকারী সকল মহাপরিচালকের মধ্যে সেরা। লি তুং লিন বলেন, এতো ভাল সাফল্য অর্জন সম্প্রীতিময় ধারণা কাজে লাগানোর সঙ্গে সম্পর্কিত। এ সম্পর্কে তিনি বলেন: ( রে৪) "পাকিস্তানে কাজ করার ৬ বছরে আসলে আমি প্রেসিডেন্ট হু চিন থাওয়ের সম্প্রীতিময় সমাজ গড়ে তোলার ধারণা আমার কাজে ব্যবহার করেছি। আমার ব্যবস্থাপনার লক্ষ্য হচ্ছে এক পরিবারের মতো পরিবেশ সৃষ্টি করা; ভাই-বোনের মতো সকল কর্মচারীর মিলেমিশে থাকতে পারা। প্রত্যেককে প্রত্যেকের সম্মান ও সহায়তা করা এবং একের কাছ থেকে অন্যের শেখা উচিত। আমি মনে করি, এটি খুবই প্রয়োজনীয়, একটি ধর্মীয় দেশের জন্যও এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।" লি তুং লিন বলেন, বিশ্বে চীনের প্রভাব অব্যাহতভাবে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতিসংঘ সংস্থাগুলোতে বেশি চীনা কর্মকর্তা দায়িত্বভার পালন করে আসছেন। চীনের সম্প্রীতিময় ধারণাকে পশ্চিমা দেশগুলোর রাষ্ট্রপরিচালনার অভিজ্ঞতার সঙ্গে কাজে লাগানো গেলে নিশ্চয়ই আরও বেশি সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন: ( রে৫) "জাতিসংঘ সংস্থায় কাজ করার ১০ বছরে আমি এটা বুঝতে পেরেছি যে, পশ্চিমা দেশগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে চীনের শেখা দরকার। আবার চীনের অভিজ্ঞতা থেকে পশ্চিমা দেশগুলোরও শেখা দরকার। সুতরাং, দু'পক্ষের অভিজ্ঞতাকে পুরোপুরিভাবে একসাথে কাজে লাগানো গেলে, তা শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা যে কোনো সংস্থার জন্য নিশ্চয়ই আরও বেশি সাফল্য বয়ে আনবে।"---ওয়াং হাইমান বন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি আমাদের আজকের সাংস্কৃতিক সম্ভার। আশা করি আগামী আসরে আবার আপনাদের সাথে কথা হবে। ততদিন ভালো থাকুন। যাই চিয়ান।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040