|
মাপুতো শিল্পকলা বিদ্যালয় মোজাম্বিকের রাজধানী মাপুতো শহরের উপকন্ঠে অবস্থিত । চীন সরকার পরিকল্পনা অনুসারে মোজাম্বিকে তিনটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে , মাপুতো শিল্পকলা বিদ্যালয় এ তিনটি স্কুলের অন্যতম । সি আর আই সংবাদদাতা মাপুতো শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে গাড়িতে করে ৪০ মিনিটের পথের পর নির্মিয়মান স্কুলটি দেখতে যান । চীনের আন হুই প্রদেশের একটি কোম্পানি এই স্কুল নির্মাণের দায়িত্ব নিয়েছে । এ কোম্পানির ম্যানেজার চান তাও ইউ বলেন , এ স্কুলের মোট আয়তন এক হাজার ৬০ বর্গমিটার । স্কুলটিতে নয়টি ক্লাসরুম রয়েছে । এতে একটি গ্রন্থাগার , একটি সংগীত ক্লাসরুম ও একটি প্রদর্শনী কক্ষ আছে । এতে প্রায় দু' শজন ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করতে পারে ।
আফ্রিকায় চীনের সাহায্যে নির্মিত এক শ'টি স্কুলের মধ্যে মাপুতো শিল্পকলা বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ সবচেয়ে দেরীতে শুরু হয়েছে । কারণ মোজাম্বিক পক্ষ স্কুলের স্থান নির্বাচনের সময় নানা অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছিল ,সংশ্লিষ্ট পক্ষকে বাধ্য হয়ে তিন বার স্কুলের স্থান পরিবর্তন করতে হয়েছে । স্কুলের স্থান নির্ধারণ ঠিক করার পর শহরের উপকন্ঠে অবস্থিত বলে স্কুলের পানি ও বিদ্যুত সরবরাহ অপর্যাপ্ত । চীনা কোম্পানি স্কুলের পানি ও বিদ্যুত সরবরাহ সমস্যা সমাধান করার জন্য এক মাস সময় নিয়েছে । ম্যানেজার চান তাও ইউ বলেন ,এ বছরের ১৮ আগষ্ট স্কুলটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ডিসেম্বর মাস স্কুলের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে হবে । চীন সরকারের সাহায্যে আফ্রিকায় নির্মিত এক শ'টি স্কুলের মধ্যে এ স্কুলের নির্মাণকাজ সবচেয়ে দেরীতে শুরু হয়েছে । নভেম্বর মাসের শেষে নির্মাণকাজ মোটামুটি শেষ হওয়ার পর ক্লাসরুম ও গ্রন্থাগার সাজানোর কাজ শুরু করতে হবে। তাই শ্রমিকরা অবিরাম দিন রাত কাজ করছেন ।
স্থানীয় অধিবাসীরা বিশ্বাস করেন না যে চীনারা চার মাসের মধ্যে একটি প্রাথমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে পারবে । নির্মাণ কাজের সময় কম হলেও চীনা শ্রমিকরা প্রকল্পের গুণগত মানের দিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়। ম্যানেজার চান তাও ইউ সি আর আই সংবাদদাতাকে বলেন , দক্ষ শ্রমিক ও প্রযুক্তিবিদরা এ স্কুল নির্মাণের কাজ করছেন । সময়মত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য কড়াকড়িভাবে পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করছে । দিনে কাজ শেষ করতে না পারলে তারা রাতেও কাজ করেন । তাদের কাজের দ্রুততার প্রধান কারণ হলো প্রতি দিন পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা সম্পন্ন করা । মোজাম্বিকের সংশ্লিষ্ট পক্ষ মাঝেমধ্যে তাদের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করতে আসে , চীনা শ্রমিকের কাজ দেখে তারা বার বার প্রশংসা করে বলেন ,চীনাদের নির্মাণ কাজ যেমন দ্রুত , তেমনি ভালো ।
এ শিল্পকলা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মালামগাটানা ভেলেনটে নগুয়েনিয়া সব সময় এ স্কুলের নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতির ওপর নিবিড় দৃষ্টি রাখছেন । তিনি চীনা শ্রমিকদের কার্যকারিতার প্রশংসা করার পাশাপাশি চীনের আন্তরিক সাহায্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান । তিনি বলেন , আমি জানি চীনা শ্রমিকরা নিরলসভাবে কাজ করছেন । তাদের কাজের অগ্রগতি দেখে আমি অবাক হয়েছি । কয়েক মাস আগে আমি কাজের জন্য এখানে ছিলাম না ,সেই সময় এখানে নির্মাণ কাজ শুরুই হয় নি , কিন্তু দু'দিন আগে আমি ফিরে এসে দেখেছি স্কুলের নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে । আমি দেখেছি স্কুলটির নির্মাণকাজ সুন্দর হয়েছে । আমরা সযত্নভাবে এ স্কুল ব্যবহার করবো । আমি ছেলেমেয়েদের পক্ষ থেকে চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাই ।
যদিও স্কুলটি আরো কয়েক মাস পর আনুষ্ঠানিক চালু হবে ,কিন্তু স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসগুয়েনিয়া ইতোমধ্যে স্কুলটির ভবিষ্যত সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করছেন । তিনি এ স্কুলকে চীন ও মোজাম্বিকের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি সেতুতে পরিণত করার আশা রাখেন । তিনি বলেন , স্কুলটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর আমার প্রথম কাজ হবে এ স্কুলে একটি শিল্পকলা প্রদর্শনী আয়োজন করা । আমি আশা করি চীনের সংশ্লিষ্ট বিভাগও এ প্রদর্শনীতে অংশ নেবে । পরবর্তীকালে এ স্কুলে দু'টি দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি পরিচালিত হবে ।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |