|
১১ জুন অষ্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও অষ্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকারের মধ্যে অষ্ট্রেলিয়ায় চীন সম্পর্কিত গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে । এ চুক্তি অনুযায়ী ফেডারেল সরকারের আর্থিক সগায়তায় অষ্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অষ্ট্রেলিয়ায় চীন সম্পর্কিত গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করবে। এ কেন্দ্র অষ্ট্রেলিয়ার চীন সম্পর্কিত গবেষণা ও শিক্ষার কাজ পরিচালনা করবে।
প্রফেসর বার্মি জানিয়েছেন, আমরা এক বছর আগে থেকেই অষ্ট্রেলিয়ায় চীন সম্পর্কিত গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথা বিবেচনা করতে শুরু করেছি। চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল অষ্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুড রাজধানী ক্যানবেরায় অষ্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেয়ার সময় এ গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন। এ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য অষ্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকার ৫ কোটি ৩০ লাখ অষ্ট্রেলিয়ান ডলার বরাদ্দ করবে। গবেষণা কেন্দ্রটি নবোদিত চীন সম্পর্কে আরো বেশি জানতে এবং চীনের উত্থান ও বিশ্বে চীনের প্রভাব উপলব্ধি করতে অষ্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের সাহায্য করবে।
প্রফেসর বার্মি আরো বলেন, এ গবেষণা কেন্দ্র শুধু চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি নিয়েই যে গবেষণা করবে , তা নয় , কেন্দ্রটি বিভিন্ন উপায়ে ও বিভিন্ন দিক থেকে প্রাণ শক্তিতে ভরপুর আধুনিক চীনের উন্নয়নও গবেষণা করবে। তিনি বলেন, আমরা মনি করি চীনের উত্থান বিশ্বের বড় ঘটনা । মানবজাতির স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় বিবেচনা করার সময় আমরা চীনের উত্থানের কথা চিন্তা করি। পরিবেশ , অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বাণিজ্য , নিরাপত্তা, সংস্কৃতি , চিন্তাধারা , ইতিহাস ও জীবনযাত্রার পদ্ধতি বিবেচনার সময় আমরা বিশ্বায়নের প্রেক্ষাপটে চীনের ভূমিকা দেখেছি। তাই এ গবেষণা কেন্দ্র শুধু চীন সম্পর্কিত গবেষণা সংস্থা নয়, বরং চীন ও বিশ্বের সম্পর্ক গবেষণার একটি কেন্দ্র।
প্রফেসর বার্মি মনে করেন , অষ্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে চীনের উন্নয়ন এবং চীন ও বিশ্বের সম্পর্ককে দেখতে হবে। গবেষণা ছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চীনের সঙ্গে যোগাযোগ ও বিনিময় করতে হবে। অষ্ট্রেলিয়া ও চীন যে পরস্পরের সাংস্কৃতিক বর্ষ কর্মসূচী আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে দুদেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি বলেন, সবাই জানেন, চীনা ভাষা শুধু চীনে ব্যবহৃত নয়, বিশ্বের অনেক দেশের প্রবাসীচীনা ও বিদেশী চীনারাও চীনা ভাষায় কথা বলেন। অষ্ট্রেলিয়ায় অনেক চীনা বা চীনা বংশোদ্ভুত মানুষ রয়েছেন। সংস্কৃতি ও প্রযুক্তিবিদ্যা ক্ষেত্রে দুদেশের কর্মী বিনিময় ও যোগাযোগ বেশি। অষ্ট্রেলিয়ায় প্রবাসীচীনা ও বিদেশী চীনা ছাড়া অনেক চীনা ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করছে ,অষ্ট্রেলিয়ারও অনেক মানুষ চীনে লেখাপড়া বা চাকরি করছেন।
অষ্ট্রেলিয়ায় চীনা দূতাবাসের এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বর্তমানে এক লাখ ৩০ হাজার চীনা ছাত্রছাত্রী অষ্ট্রেলিয়ায় লেখাপড়া করছে, চীন অষ্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীর উত্সে পরিণত হয়েছে। বিশ্বে অষ্ট্রেলিয়া সবচেয়ে বেশি চীনা ছাত্রছাত্রী গ্রহণ করেছে, এর সংখ্যা বৃটেন ও যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে।
প্রফেসর বার্মি বলেন, অষ্ট্রেলিয়ার চীন সম্পর্কিত গবেষণা কেন্দ্র চীন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা ছাড়া অষ্ট্রেলিয়া, চীন ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিশেষজ্ঞ ও গবেষণা কর্মীদের জন্য সাংস্কৃতিক বিনিময়ের এক প্ল্যাটফর্মে পরিণত হবে। তিনি বলেন, কেন্দ্রের কাজ শুধু যুবকযুবতীদের চীনা ভাষা অধ্যায়ন অথবা চীনা পন্ডিতদের অষ্ট্রেলিয়ায় কাজ করতে উত্সাহ দেয়া নয়, অষ্ট্রেলিয়া ও চীনের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা ও মতবিনিময়ের জন্য আমরা চীনের সঙ্গে সহযোগিতা করবো। এ কাজ সহজ নয় , কারণ দুদেশের সমাজ ব্যবস্থা ও বাস্তব অবস্থার মধ্যে অনেক তফাত রয়েছে। কিন্তু দু পক্ষের মধ্যে বিনিময় বজায় রাখার চেষ্টা অব্যাহত থাকলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়ন সুনিশ্চিত হবে। আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক প্রাণশক্তিতে ভরপুর খোলামেলার সম্পর্ক হবে।
প্রফেসর বার্মি আরো বলেন, গবেষণা কেন্দ্র অষ্ট্রেলিয়ার সরকারী সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা করবে, যাতে অষ্ট্রেলিয়া ও চীনের মধ্যে সংলাপ বজায় থাকে। তা ছাড়া এ গবেষণা কেন্দ্র চীনের গবেষণা সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করবে এবং দুদেশের নীতি নির্ধারক সংস্থার জন্য নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহ করবে।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |