|
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা এতক্ষণ যে সঙ্গীতের সুর শুনলেন তা হচ্ছে "ঘোড়া" নামে বিশ্বমেলার উদ্যানে পরিবেশিত আধুনিক নৃত্যনাট্যের পরিবেশনা। চীন, ক্যানাডা ও মঙ্গোলিয়ার শিল্পীদের নিয়ে এ সঙ্গীত দলটি গঠিত। মঙ্গোলীয় জাতির সঙ্গীতের সুরে সুরে তাঁরা আধুনিক নৃত্যের মাধ্যমে তৃণভূমির ঘোড়ার জীবন চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। যদিও সহজ মঞ্চে কোন আলোক সম্পাত ছিলো না, তবুও দর্শকরা মুগ্ধ হয়েছেন। চীনের চিয়াং সি প্রদেশের ৭০ বছর বয়সী এক জোড়া দম্পতি ঘন্টাব্যাপী এ পরিবেশনা উপভোগ করেছেন। একজনের স্ত্রী বলেন, এ ধরনের পরিবেশনা সাধারণ সময় সহজেই দেখা যায় না। তিনি বলেন,
"আমি মনে করি, অনেক মজার। নৃত্যের মধ্যে গল্পও রয়েছে। আমি যেন তৃণভূমিতে ঘোড়ার দৌঁড়ানোর দৃশ্য দেখেছি। "
"লাল আকাশ" নামের এ নৃত্যদলের নেতা ও পরিচালক সান্ড্রা লারোন্দ তার দলের জন্য ২০০৭ সালে চীনের অন্তর্মঙ্গোলিয়া থেকে অভিনেতা ও অভিনেত্রী বেছে নিলেন। হু হো হাও থে শহরের জাতীয় নৃত্যগীত দল থেকে তাঁর বেছে নেয়া ৩ জন শিল্পী এবং মঙ্গোলিয়ার তিন'জন গায়ক ক্যানাডায় প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। "ঘোড়া" নামের এ নৃত্য পেইচিংয়ের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমসে পরিবেশন করা হয়েছে এবং এখন বিশ্বমেলার মঞ্চে বিশ্বের দর্শকদের কাছেও তা তুলে ধরা হচ্ছে। সান্ড্রা মনে করেন, এ নৃত্য বিশ্বমেলার প্রকৃতি ও সম্প্রীতিমূলক প্রসঙ্গের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। তিনি বলেন,
"ভবিষ্যত জীবনের প্রতি এ তিনটি দেশের শিল্পীদের আকাংক্ষা, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য প্রদর্শন করতে ইচ্ছুক আমি। নৃত্যে ঘোড়ার সৌন্দর্য ও শক্তিও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ক্যানাডা, অন্তর্মঙ্গোলিয়া ও মঙ্গোলিয়ায় তৃণভূমি আছে এবং তার অনেকটাই এখন হারিয়ে যাবার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে। আমি সবাইকে জানাতে চেয়েছি যে, ঘোড়া এক ধরণের অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী এবং তাকে সম্মান প্রদর্শন করা উচিত্। "
এ নৃত্য দলের প্রশিক্ষণের প্রক্রিয়াও অনেক মজার। বিভিন্ন দেশের শিল্পীরা যার যার মাতৃভাষায় বলে ভঙ্গীর মাধ্যমে তথ্য বিনিময় করেন। চীনা শিল্পী ছাই হোং বলেন,
"আমরা মহড়ার সময় ভঙ্গী ব্যবহার করি। একটি আশ্চর্য বিষয় হলো, যদিও আমরা পরস্পরের ভাষা বুঝতে পারিনা, তবু আমাদের বিনিময়ের ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা নেই।"
লাল আকাশ নৃত্যদলের প্রথমবারের মতো বিশ্বমেলায় অনুষ্ঠান পরিবেশনকারী দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্পীদের অভিজ্ঞতাও অনেক বেশি। তাঁদের বেশ কয়েকবার বিশ্বমেলায় পরিবেশনের অভিজ্ঞতা আছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্যাভিলিয়নের শিল্প দলের নেতা শেন চিয়া সি বলেন, ১৯৮৬ সালে ভানকুভার বিশ্বমেলায় পশ্চিমা দর্শকরা তাঁদের পরিবেশনার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার বৈচিত্র্যময় শিল্পের সঙ্গে পরিচিত হন। তিনি বলেন,
চীন ও জাপানের তুলনায় বিভিন্ন শিল্পকর্ম সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে আমরা অনেক কাজ করেছি। মিল খুঁজে বের করার পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার স্বতন্ত্র আকর্ষণীয় শক্তি ফুটিয়ে তুলতে চাই।
প্রতিটি দেশ যার যার সবচেয়ে আকর্ষণীয় সংস্কৃতি প্রদর্শন করতে চায়। আধুনিক শিল্প বা ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প, এক একটি চমত্কার পরিবেশনা আর এ প্রদর্শনীর লক্ষ্য হলো দর্শকদের বিমুগ্ধ করা।
চীনের শিল্পীরা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার পর্যটকদের কাছে বৈচিত্র্যময় শিল্প জনপ্রিয় করে তুলছেন। পুতুল নাচ, উশু পরিবেশনা এবং অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কিত পরিবেশনা এবং আধুনিক নৃত্য অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। চীনের চে চিয়াং প্রদেশের ইউ ইয়াও শহরের ১৬ জন শিশুর নৃত্যের মধ্য দিয়ে তাদের জন্মস্থানের সংস্কৃতি প্রতিফলিত হয়েছে। তাদের পরিবেশনার নাম হলো "হো মু তু
। এ নৃত্য স্থানীয় সবচেয়ে বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান হো মু তু ধ্বংসাবশেষ অনুযায়ী তৈরী করা হয়েছে। রেকর্ড ৭-
নৃত্যে অংশগ্রহণকারী ১১ বছর বয়সী একজন মেয়ে চাং ছি সিন বলেন, লোকেরা নৃত্যের মাধ্যমে তাদের জন্মস্থানের আকর্ষণীয় শক্তি অনুভব করতে পারেন। তিনি বলেন,
আপনি এ নৃত্য দেখার পাশাপাশি অবশ্যই মনে করবেন যে, ইউ ইয়াও হচ্ছে বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যসম্পন্ন একটি জায়গা।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |