Web bengali.cri.cn   
তিব্বতি গালিচা
  2010-08-20 15:18:34  cri

চীনের ছিং হাই প্রদেশের উপজাতীয়দের শিল্পের বাগানে একটি সুন্দর ফুল ফুটে রয়েছে। তা হলো ছিং হাই তিব্বতের গালিচা। হুয়াং চোং জেলার চিয়া ইয়া গ্রামের তিব্বতি গালিচা সবচেয়ে বিখ্যাত। চিয়া ইয়া তিব্বতি গালিচার কাঁচামাল হলো তিব্বতের ভেড়া, ছাগল, চমরী গাই ও উটের পশম। এভাবে বোনা কম্বলের রং অনেক উজ্জ্বল এবং নমনীয়তাও ভালো। ২০০৬ সালে চিয়া ইয়া'র কম্বল প্রথম জাতীয় পর্যায়ের অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক উত্তরাধীকারের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়।

ইয়াং ইয়ং লিয়াং হচ্ছেন চিয়া ইয়া'র কম্বলকে বাঁচিয়ে রাখা সপ্তম প্রজন্মের লোক। তিনি বলেন, চিয়া ইয়া গ্রামে তিব্বতি গালিচের তিনশ বছরের ইতিহাস আছে। অনেক আগে, গালিচা বানানো শিল্পীরা কোন অঙ্কনবিদ্যা অনুযায়ী বুনেননি। তাঁরা শুধুমাত্র মনের ডিজাইন অনুযায়ী বুনেছেন। চীনের তিব্বতি কম্বল সমিতির মহাসচিব ওয়াং ইং হু এ সম্পর্কে বলেন, ছিংহাইয়ের তিব্বতি গালিচার ইতিহাস কয়েক হাজার বছর আগে ব্রোনজ যুগে শুরু হয়। তিনি বলেন,

"ছিংহাই হচ্ছে তিব্বতি গালিচার প্রধান উত্পত্তিস্থান। আমাদের পুর্বপুরুষরা হাড় দিয়ে তৈরী সূই এবং কাঠ দিয়ে তৈরী চরকাসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতির মধ্য দিয়ে তিব্বতি গালিচা বানানো হয়। তিব্বতি গালিচায় হান জাতি, ছিংহাইয়ের থু জাতি ও নেপালসহ বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক উপাদান নিয়ে নিজের বিশেষ শৈলীর মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়।"

চমত্কার তৈরী শৈলী, শ্রেষ্ঠ উপকরণ ও তুষার বিস্তৃত পার্বত্য এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং সেখানে বসবাসকারীদের বিশেষ চরিত্রের কারণে তিব্বতি গালিচার দৃষ্টি নন্দন ও সরল আঞ্চলিক স্টাইল বজায় রয়েছে। ওয়াং ইং হু বলেন,

"ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির ২৫০০ মিটার উপর এবং ৪৫০০ মিটারের মধ্যে তিব্বতের যেসব ভেড়া লালন-পালন করা হয় তাদের পশম দিয়ে বোনা হয়।"

গত শতাব্দীর আশির দশক থেকে ছিংহাই পূর্বাঞ্চলের সি নিং শহর, মিন হো জেলা, হুয়াং ইউয়াং জেলা ও কুই দে জেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যথাক্রমে তিব্বত গালিচার কোম্পানি নির্মিত হয়। তিব্বতি গালিচা ব্যাপকারে উত্পাদনের যুগে প্রবেশ করেছে। তখন থেকেই সুদীর্ঘ ইতিহাস সম্পন্ন তিব্বতি গালিচা ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির হস্তশিল্প কারখানা উত্পাদিত হয়ে বিশ্বে ছড়িয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে রপ্তানিকৃত চীনের তিব্বতি গালিচার মধ্যে ছিংহাই হস্তশিল্পের তিব্বতি গালিচার মোট সংখ্যা ৯০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এবং ইউরোপ ও আমেরিকার দশটিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে তা বিক্রী হচ্ছে।

সিয়ে আন পিং নামে এক জোড়া দম্পতি পরিশ্রম করে ধীরে ধীরে ধনী হওয়ার পথে এগুচ্ছে। এখন প্রতি বছর তিব্বতি গালিচা বোনার মাধ্যমে তাদের আয় প্রায় দুই হাজার ইউয়ান। সিয়ে আন পিং বলেন,

আমি ১৯৯৪ সালে তিব্বতি গালিচা বোনা শিখতে শুরু করি। গ্রামে তিব্বতি গালিচা বোনা ও কৃষি কাজ করার মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব নেই। ফসলের সময় আমরা কৃষি কাজ করি এবং কৃষি কাজ না থাকার সময় আমরা তিব্বতি গালিচা বুনি।

২০০৪ সাল থেকে প্রতি বছর ছিংহাই প্রদেশে তিব্বত গালিচা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বর্তমানে ছিংহাই প্রদেশের তিব্বতি গালিচার মোট ১৩০টি ধরণ এবং এক হাজারেরও বেশি ডিজাইন আছে এবং এটা ৬টি জাতীয় পেটেন্ট পেয়েছে। প্রাচীন তিব্বতি গালিচা নতুন প্রাণশক্তিকে উন্মুক্ত করছে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040