|
২০০৭ সালের পয়লা নভেম্বর লিবিয়ার শাংহাই বিশ্বমেলায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা ৪৮টি আফ্রিকান দেশেরও এবারের শাংহাই বিশ্বমেলায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। শাংহাই বিশ্বমেলার "গ"অঞ্চলে অবস্থিত আফ্রিকান যৌথ প্যাভিলিয়নে আফ্রিকার ৪৩টি দেশ ও আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রদর্শনী কেন্দ্র রয়েছে। এখানে পোষাক, খাবার, সঙ্গীত ও নৃত্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দর্শকরা ব্যক্তিগতভাবে আফ্রিকার বিভিন্ন সংস্কৃতি উপলব্ধি করতে সক্ষম।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা এখন যে সঙ্গীত শুনছেন তা হচ্ছে "আলভস ব্রেডার্স"নামে ক্যাপভার্ডের সঙ্গীত দলের পরিবেশনা। এ দল তিন ভাইকে নিয়ে গঠিত এবং ক্যাপভার্ডে খুব বিখ্যাত। এ সঙ্গীত দলের প্রধান গায়ক তো আলভস বলেন,
আমরা শাংহাই বিশ্বমেলাকে ধন্যবাদ জানতে চাই। কারণ এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরণের মানুষ এবং বিভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করতে পারছি। আমি শাংহাই বিশ্বমেলার এ সাফল্যের শুভ কামনা করি।
আফ্রিকার বিভিন্ন দেশকে নিজস্ব বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সংস্কৃতি ও রীতিনীতি প্রদর্শন করার জন্য চীন প্যাভিলিয়নের নির্মাণ ক্ষেত্রে তাদেরকে অনেক সাহায্য বিশেষ করে আর্থিক সাহায্য দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে আফ্রিকার কয়েকটি দেশের কর্মকর্তারা এবং প্যাভিলিয়নের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ঘানার বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী হান্না টেট্টেহ ঘানার জাতীয় ভবন দিবসের উদযাপনী অনুষ্ঠানে বলেন,
আমি ঘানার প্রেসিডেন্ট এবং জনগণের পক্ষ থেকে বিশ্বমেলায় অংশগ্রহণে ঘানাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য চীন সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তা ছাড়া, ঘানাকে সমর্থনের জন্য চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আপনাদের সহায়তার ফলে ঘানা সুষ্ঠুভাবে বিশ্বমেলায় অংশ নিতে পেরেছে।
ক্যাপভার্ডের প্যাভিলিয়ানের প্রধান প্রতিনিধি জোয়াও ভিয়িরা বিশ্বমেলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সাহায্য করার জন্য চীনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন,
উল্লেখযোগ্য যে, এবারের বিশ্বমেলায় চীন উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অনেক সাহায্য করেছে। আপনাদের সাহায্য ছাড়া আমরা সাফল্যের সঙ্গে বিশ্বমেলায় অংশ নিতে পারতাম না।
আফ্রিকার যৌথ প্যাভিলিয়নে জাঁকজমকপূর্ণ আফ্রিকান বাজার অসংখ্য পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। মোজাম্বিকের হস্তশিল্প ব্যবসায়ী জেকা লোগোমালে বলেন, এখানে চীনের দর্শকরা আফ্রিকার হস্তশিল্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগের সুযোগ পেতে পারেন। তা ছাড়া, বিশ্বমেলার শ্রেষ্ঠ সাংগঠনিক কাজের জন্য তাঁর মনে নিজ বাড়িতে ফিরে আসার অনুভুতি অনুভব করা যায়। তিনি বলেন,
আমি প্রায় দু'বছর আফ্রিকায় যাইনি। কিন্তু এখানে এসে মনে হচ্ছে, যেন আমার জন্মস্থানে ফিরে এসেছি। এমন ধরণের অনুভূতি অনেক ভালো।
আফ্রিকান যৌথ প্যাভিলিয়নের সফলতার মূলে রয়েছে বিশ্বমেলায় অংশগ্রহণকারী আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের যৌথ প্রচেষ্টা। আফ্রিকান যৌথ প্যাভিলিয়ন পরিচালনা বিভাগের প্রধান ছেন চিন থিয়ান মনে করেন, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ এবারের বিশ্বমেলার জন্য অনেক প্রস্তুতি নিয়েছে। তাই আফ্রিকার যৌথ প্যাভিলিয়ন সবচেয়ে বেশি দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণের প্যাভিলিয়নের মধ্যে অন্যতম। ছেন চিন থিয়ান বলেন,
আফ্রিকার দেশগুলো এবারে গৌরব বোধ করছে। তাঁরা বলেন, আমরা বিশ্বমেলার এই এত বড় মঞ্চে নিজেদেরকে প্রদর্শন করতে পেরেছি। চীনা কর্মীদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ অনেক ঘনিষ্ঠ। তাই আমাদের প্যাভিলিয়ন প্রসঙ্গে বিভিন্ন মহলের মূল্যায়নও উচ্চ।
তিনি আরো বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার দর্শকের আফ্রিকার যৌথ প্যাভিলিয়নে পরিদর্শনের কথা ছিল। কিন্তু এখন প্রতিদিনের দর্শকের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। শাংহাই বিশ্বমেলার পর দর্শকরা আফ্রিকান যৌথ প্যাভিলিয়নের কথা ভুলবে না এবং আফ্রিকার উপাদানকে মনে রাখবে। আফ্রিকান যৌথ প্যাভিলিয়ন চিরদিন চীন ও আফ্রিকার জনগণের মনের সুন্দর স্মৃতিতে পরিণত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। (লিলি)
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |