|
মে মাস হল ফুল ফোটার ঋতু। এ সময়টি চীনা ভাষা শেখা ফরাসী শিক্ষার্থীদের নিজেদের চীনা ভাষা শেখার দক্ষতা প্রকাশের ঋতু। এবার চীনা ভাষার সেঁতু শীর্ষক প্রতিযোগিতার প্রতিপাদ্য হল "আকর্ষণীয় চীনা ভাষা, চমত্কার বিশ্বমেলা। ফ্রান্সের ডিআর্টোইস কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট, প্যারিসের ইস্টার্ন ভাষা ইন্সটিটিউট ও বোর্ডক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষা শিক্ষার্থীরা এবার চীনা ভাষার সেঁতু প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন।
যদিও শিক্ষার্থীরা সবাই শাংহাই বিশ্বমেলার বিষয় নিয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন, তবে প্রত্যেকেই তাদের নিজের বৈশিষ্ট তুলে ধরেছেন। কেউ কেউবা শাংহাই বিশ্বমেলার মাস্কট 'হাই বাও'কে নিয়ে কিছু কথা বলেছেন, কেউ কেউবা শাংহাই থেকে শুরু করে বিশ্বভ্রমণ করার কথা নিজের মত করে বর্ণনা করেছেন এবং বিভিন্ন প্যাভিলিয়নের বৈশিষ্ট ব্যাখ্যা করেছেন। এবার প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কার বিজয়ী ক্রিস্টিলা চোকোডেউ বক্তৃতায় বিশ্বমেলার প্রতি নিজের সুন্দর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন:
আমি জানি ২০১০ সালের শাংহাই বিশ্বমেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়ার সময় শাংহাই শহর তার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। তাই আমি আশা করি এবারের বিশ্বমেলার মাধ্যমে শাংহাই আরো ভালোভাবে নিজের উন্নয়ন ঘটিয়ে সাজিয়ে তুলতে পারবে।
আরেকজন শিক্ষার্থী সবাইকে অবাক করে দিয়ে চীনের বিখ্যাত গায়ক জে চৌয়ের 'রংধনু' গানটি গেয়েছেন। নিজেকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য এ শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় যন্ত্র সংগীত ছাড়া সরাসরি গান গাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে গান গেয়েছেন। এটা ছিল তার নিজের চীনা ভাষার মান সবার চেয়ে আলাদাভাবে প্রকাশ করার পদ্ধতি। আমরা তার গাওয়া গানটি এখন শুনি।
বক্তৃতার ক্ষেত্রে সবাই যার যার ভাষার মান প্রতিযোগিতায় তুলে ধরে। পরে শিল্পকলা সম্পর্কিত মেধা প্রদর্শন প্রতিযোগিতার অংশে শিক্ষার্থীরা অনেক চমত্কার অভিনয়ের মাধ্যমে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এবারের প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী মাইকেল ডোমেরেট দর্শকদের জন্য কৌতুকাভিনয় পরিবেশন করেছেন। মাইকেল বলেন, তিনি ইন্টারনেটে তা শিখেছেন। তিনি বলেন-
এর কারণ, আমি গান গাইতে পারি না তাই আমি সবাইকে একটি মজার হাঁসির গল্প বলেছি। এ গল্পটি চীনে বসবাসরত আমার একজন ক্যানাডীয় বন্ধুর কাছ থেকে শুনে মুগ্ধ হয়েছিলাম।
গতবারের চীনা ভাষার সেঁতুর মূল প্রতিযোগিতায় ফ্রান্সের নির্বাচিত প্রতিনিধি প্রথম পুরস্কার পেয়েছিলেন। এমন ভালো ফলাফল সম্পর্কে ফ্রান্সের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চীনা ভাষা শিক্ষা বিভাগের গভর্নর জোইল বেলাসেন আশা করেন ফ্রান্সের প্রার্থীরা আরো বেশি পুরস্কার পাবে। তিনি বলেন-
আমরা বিচারকরা সবাই মনে করি, ভাষার মান এবং শিল্পকলা সম্পর্কিত মেধার ক্ষেত্রে চলতি বছরের শিক্ষার্থীদের মান গত বছরের চীনা ভাষার সেঁতু প্রতিযোগিতার প্রার্থীদের চেয়ে অনেক ভালো। তা সহজেই বুঝা যায়।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ফ্রান্সে চীনা ভাষা শেখার আগ্রহ বেড়ে যাওয়ার ফলে চীনা ভাষার গুণগত মান পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যাও বেড়েছে। বেলাসেন বলেন, চলতি বছর ফ্রান্সে এমন পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ১ হাজারে দাঁড়িয়েছে। তা একটি নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন-
এ থেকে বোঝা যায় যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনা ভাষার উন্নয়ন হচ্ছে অনেক দ্রুত। আমরা সবাই জানি, এখন বিদেশি ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে ভাষা পরীক্ষার দিকটি আরো বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। আমার মনে হয় এটি একটি বড় প্রেক্ষাপট, বলতে পারেন, কেন এ পরীক্ষার গুরুত্ব বাড়লো? কারণ, ছাত্রছাত্রীরা বিদেশে কাজ করতে চায়, কর্মসংস্থান শুধু নিজের দেশে হবে তা নয়, বিদেশেও অনেক কাজের সুযোগ রয়েছে। তা হল একবিংশ শতাব্দীর একটি প্রবণতা। আমরা একটি ঘনিষ্ঠ যোগযোগের যুগে প্রবেশ করেছি। বিভিন্ন দেশের মানুষের ঘন ঘন বিনিময়ের ফলে ভাষা পরীক্ষার গুরুত্ব তাই দিন দিন বেড়েই চলেছে।
মে মাস গ্রীষ্মকাল। এবারের প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কার বিজয়ী ক্রিস্টেলা গ্রীষ্মকালকে অনেক পছন্দ করার কারণে নিজের নাম
' সিয়া থিয়েন' অর্থাত্ গ্রীষ্মকাল এ চীনা নাম রেখেছেন। তিনি সংবাদদাতাকে বলেন, চীনা ভাষা শেখা প্রথমে একটু কঠিন, আস্তে আস্তে তা সহজ হয়ে যায়। ঠিক যেন শীতকালকে বিদায় দিয়ে গ্রীষ্মকালকে স্বাগত জানানোর মত। তিনি বলেন:
গ্রীষ্মকাল মানে আনন্দ, মানুষ জীবনে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়, এসব সমস্যাকে শীতকাল হিসেবে মনে করতে হবে, তবে চিন্তার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ, যে কোন সমস্যার সম্মুখীন হলেও গ্রীষ্মকাল মানে সুদিন আসতেই হবে।
যদিও চীনা ভাষা শেখা ততটা সহজ নয়, তবে চীনা ভাষা শেখা এখন একটি প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তা এখন আর খুব একটা ফ্যাশনেবল ব্যাপার নয়, বরং তা ভবিষ্যতে চাকরি পাওয়ার সুযোগ এনে দেবে। আশা করি চীনা ভাষার ছাত্রছাত্রীরা চীনা ভাষার মাধ্যমে জীবন ক্ষেত্রে আরো বেশি ভালো সুযোগ সুবিধা পাবেন।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |