Web bengali.cri.cn   
শাংহাই বিশ্বমেলা আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য একটি মঞ্চ সৃষ্টি করেছে
  2010-05-14 18:50:05  cri
১ মে সকালে আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে ২০১০ সালের শাংহাই বিশ্বমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া আলজেরিয়ার স্পীকার আব্দু আল কাদির বিন সালেহ বিশ্বমেলা বাগানে গিয়ে প্রধান চীন ভবন, আফ্রিকা ভবন এবং আলজেরিয়া ভবন পরিদর্শন করেন এবং এ সময় তিনি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সাংবাদিককে সাক্ষাত্কারও দিয়েছেন। সাক্ষাত্কারে তিনি ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

সাক্ষাত্কার শুরুতেই বিন সালেহ শাংহাই বিশ্বমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি এ অনুষ্ঠানকে ২০০৮ সালের পেইচিং অলিম্পিক গেমসের পর চীনের আয়োজিত আরেকটি বড় আকারের অনুষ্ঠান হিসেবে মনে করেন। তিনি বলেন, আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে বিশ্বের অর্থনীতি ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের এ বিরাট অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে তিনি খুব ভাগ্যবান। তিনি বলেন:

বিশ্বমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সত্যি বিরাট একটি আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সুশৃঙ্খলভাবে আয়োজন করা হয়েছে। এতে শুধু চীনের সূদীর্ঘ ইতিহাস ও সংস্কৃতি প্রতিফলিত হয়েছে তাই নয়, বরং মানব সম্পদের সংস্কৃতির উন্নয়ন, বিশেষ করে চীনের অর্জিত উজ্জ্বল অগ্রগতি প্রতিফলিত হয়েছে। ২০১০ সালের শাংহাই বিশ্বমেলা আয়োজনের জন্য চীনা জনগণ, বিশেষ করে শাংহাইর জনগণ যে বিরাট প্রচেষ্টা চালিয়েছেন, আমি তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

চীন ভবন সম্পর্কে বিন সালেহ বলেন:

খুব দুঃখের ব্যপার হল সময়ের কারণে আমি ভালোভাবে চীন ভবনের সব প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারি না। তবে আমি যে জিনিসপত্র দেখেছি, তা থেকে আমি জানতে পেরেছি যে চীন ভবনের প্রদর্শনী শুধু চীনের বর্তমান দর্শকদের জন্য তা নয়, বরং আমরা এ থেকে ভবিষ্যত চীনের আকাংখার দিকটিও জানতে পেরেছি। আমরা চীনকে অভিনন্দন জানাই, শাংহাইকে অভিনন্দন জানাই। এবার বিশ্বমেলা এ শহরে আয়োজিত হচ্ছে এবং তা খুব চমত্কার হয়েছে। তা চীনের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত সবকিছুকেই অন্তর্ভূক্ত করেছে।

এবার বিশ্বমেলা ১ মে থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত চীনের শাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিশ্বের ২৪৬টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এতে অংশ নিয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, চীন সরকার আফ্রিকার দেশগুলোকে ভবন নির্মাণ এবং মেলায় অংশ নেয়ার জন্য ১০ কোটি মার্কিন ডলার আর্থিক সাহায্য দিয়েছে। ৪২টি আফ্রিকার দেশ এবং আফ্রিকার একটি সংস্থার জন্য নির্মিত এই যৌথ ভবন এবারের বিশ্বমেলার বৃহত্তম ভবন, ইতোমধ্যেই এ ভবনের আফ্রিকান বৈশিষ্ট অসংখ্য দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। বিন সালেহ সাক্ষাত্কারে বলেন:

নিঃসন্দেহে, সব ভবন অনেক সুন্দর। প্রত্যেক দেশের ভবন সে দেশের সাফল্যের প্রতিফলন, বিশেষ করে আফ্রিকার ভবন। তা শুধু আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের উন্নয়নের প্রতিফলন ঘটিয়েছে তা নয়, বরং তাতে আফ্রিকার প্রাচীন সংস্কৃতি এবং তাদের আশা আকাংখার ভবিষ্যতের প্রতিফলন রয়েছে। শাংহাই বিশ্বমেলা আফ্রিকার দেশগুলোর ভাবমূর্তি ও বৈশিষ্ট প্রকাশের একটি বড় মঞ্চে পরিণত হবে।

আলজেরিয়া ভবন বিশ্বমেলা এলাকার সি (c) ব্লকে অবস্থিত। এ ভবনের প্রতিপাদ্য হল "পূর্ব প্রজন্মের বাড়িঘর"। ভবনের আকার আলজেরিয়ার শহর নির্মাণের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া প্রধান উপাদান নিয়ে নির্মিত হয়েছে। এতে উত্তর আফ্রিকা ও আলজেরিয়ার ঐতিহ্যিক নির্মাণ বৈশিষ্টের প্রতিফলন রয়েছে।

সাক্ষাত্কারে বিন সালেহ শাংহাই বিশ্বমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং আনন্দের সঙ্গে বিশ্বমেলায় আলজেরিয়ার অংশ নেয়ার কথাও জানিয়েছেন। তিনি বলেন:

আমাকে আমন্ত্রণ জানানোয়, আমাদের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে বিশ্বমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অংশ নেয়ার জন্য চীন দেশকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আলজেরিয়ায় থেকে আমরাও মহান চীনা জনগণের অর্জিত অগ্রগতির ওপর নজর রাখছি। বিশ্বমেলার মাধ্যমে আমরা চীনের অর্জিত সাফল্য দেখতে পারি। এ ছাড়া, বিশ্বমেলা আমাদের জন্যও খুব ভালো একটি সুযোগ। আমরা বিভিন্ন দেশের ভবন, বিশেষ করে আফ্রিকা দেশগুলোর প্রদর্শিত জিনিসপত্র দেখতে পারি। আমাদের আলজেরিয়া ভবনের বিশ্বমেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে সবার কাছে আলজেরিয়ার ভাবমূর্তি প্রকাশ করতে পারছি। এ ভবনে আলজেরিয়ার ইতিহাস, মহান সাফল্য এবং আলজেরিয় জনগণের জীবন ও রীতিনীতি সবই আছে। তা চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা আলজেরিয়ার আসল অবস্থানের দিকটিরই প্রতিফলন ঘটিয়েছে। এবারের বিশ্বমেলার প্রতিপাদ্য হল শহর, জীবনকে সুন্দর করে তোলে। আমরা লক্ষ্য করেছি যে, আলজেরিয়া ভবনে প্রদর্শিত বিষয় ঘনিষ্ঠভাবে এবার বিশ্বমেলার প্রতিপাদ্যের সঙ্গে জড়িত।

আলজেরিয়া ও চীনের সম্পর্কের উন্নয়নের ভবিষ্যত সম্পর্কে বিন সালেহ বলেন:

আমাদের প্রেসিডেন্ট চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন। কারণ, তিনি জানেন, দু'দেশের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি স্পষ্টভাবে জানেন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতি চীনের আন্তরিকতা। আলজেরিয়া ও চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সূদীর্ঘকালের। তা দু'দেশের স্বাধীনতার যৌথ প্রচেষ্টার ফসল। চীন আলজেরিয়াকে যে সমর্থন করেছে, আমরা তা কনখই ভুলে যাবো না। বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দু'দেশের সম্পর্কের দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। আমাদের প্রেসিডেন্ট বার বার চীন সফর করেছেন এবং চীনে আয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। এর পাশাপাশি চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও এবং চীনের অন্যান্য নেতারাও বার বার আলজেরিয়া সফর করেছেন। আলজেরিয়া ও চীনের কৌশলগত সহযোগিতার মান বেড়েই চলেছে। দু'দেশের মধ্যে অনেক সহযোগিতার প্রকল্প রয়েছে। এসব বিষয় থেকে জানা যায় আলজেরিয়া ও চীন সম্পর্ককে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দৃষ্টান্ত হিসেবে উন্নয়ন করার আলজেরিয়ার সদিচ্ছার কথা। নিঃসন্দেহে, আলজেরিয়া ও চীনের সহযোগিতার ভবিষ্যত আরো সুন্দর ও উজ্জ্বল হবে। আমরা আশা করি দু'দেশের সম্পর্কের অব্যাহত উন্নয়ন ঘটবে। যাতে দু'দেশ ও দু'দেশের জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত হবে।

সাক্ষাত্কার শেষে বিন সালেহ চীনের অর্জিত উল্লেখযোগ্য সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন:

বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের অর্জিত সাফল্যের জন্য আমরা অবাক হয়েছি। চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করে যাচ্ছে। চীনে প্রতিদিন উন্নয়ন হচ্ছে। বলা যায় চীন অন্যান্য দেশের একটি দৃষ্টান্ত। চীনা জনগণের জীবনযাপনের মানও অব্যহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনগণের আয় স্থিতিশীলভাবে বেড়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞান ক্ষেত্রের অবস্থাও একই। আমার মনে হয়, এসব সাফল্য ও অগ্রগতি খুব ভালো প্রমাণ, আর কোনো কথা বলার প্রয়োজন নেই। কারণ তা সব কথার চেয়ে আরো শক্তিশালী।

(শুয়েই ফেইফেই)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040