Web bengali.cri.cn   
বিশ্বের সবচেয়ে ভালো চাকরি পাওয়া ব্যক্তির বিশ্বমেলা পরিদর্শন
  2010-05-10 20:43:06  cri

বিশ্বের সবচেয়ে ভালো চাকরির কথা উল্লেখ করায় হয়তো আপনাদের মন পড়তে পারে এ সম্পর্কিত কিছু কথা। কাজের এ জায়গাটি হল অস্ট্রেলিয়ার রঙিন গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ। এখানে দিনে সাদা ধূলি ও নীল সমুদ্রের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করতে পারা যায়, সমুদ্রে ডুব দিয়ে মাছকে খাবার দেয়া যায়। রাতে সমুদের কাছে নির্মিত ভিলায় এসব সুন্দর সুন্দর দৃশ্যের কথা ওয়েবসাইটে নিজের ব্লগে লিখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের সংগে আনন্দ ভাগাভাগি করা যায়। এরপর অস্ট্রেলিয়ার কুইনসল্যান্ডের সৌন্দর্য নিয়ে বিশ্ব ভ্রমণ ও অন্যান্য দেশের লোকজনের সংগে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের চমত্কার দৃশ্যও ভাগাভাগি করে উপভোগ করা যায়। এছাড়া আরো অনেক দুঃসাহসী অভিযান অপেক্ষা করছে আপনার জন্য। হ্যাঁ, এটাই হল বিশ্বের সবচেয়ে ভালো চাকরির বিষয়।

 কেমন? শুনে আপনারাও আকৃষ্ট হয়েছেন, তাই না? আপনারা কি জানেন? এত ভালো এ আরামদায়ক চাকরিটির প্রতি সপ্তাহের কাজের সময় মাত্র ১৫ ঘন্টা। কর্মচুক্তির মেয়াদ ৬ মাস। এ ৬ মাসের জন্য অস্ট্রেলিয়া তাকে ১ লাখ ৫০ হাজার অস্ট্রেলিয় মুদ্রায় বেতন দেবে। এখন আপনারা হয়তো জানতে চান, কে সেই ভাগ্যবান, যে এত ভালো চাকরিটি পেয়েছে? হ্যাঁ, আমি আপনাদের জানাচ্ছি, এ ভাগ্যবান ছেলেটি হল ব্রিটেনের বেন সাউদাল। তিনি বিশ্বের হাজার হাজার প্রার্থীদের টেক্কা দিয়ে এ চাকরি পেয়েছেন। এখন তিনি তার বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ শুরু করেছেন, যাতে অস্ট্রেলিয়ার কুইনসল্যান্ডের পর্যটনকে জনপ্রিয় করে তোলা যায়।

আপনার অবশ্যই জানেন যে সাংহাই বিশ্বমেলা শুরু হয়েছে। বেনও এ খবর জানেন। তিনি অবশ্যই এত ভালো সুযোগকে কাজে লাগাবেন এবং সাংহাইয়ে এসে কুইনল্যান্ডের কথা সবাইকে বলবেন এবং সাংহাই বিশ্বমেলা পরিদর্শন করবেন। চলুন তাহলে এখন আমরা তার কাছ থেকে জেনে নেই সাংহাই বিশ্ব মেলা সম্পর্কে তার অনুভূতি কেমন?

বিশ্বের সবচেয়ে ভালো চাকরির সুযোগ পাওয়া বেন অনেক প্রাণচঞ্চল। সাক্ষাত্কার দেয়ার সময় দেখা যায় তার কোনো চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। তার মনে অনেক কথা যা শ্রোতাদের সঙ্গে তিনি অতি সহজেই ভাগাভাগি করতে পারেন। বিশ্ব ভ্রমণে তিনি অনেক ব্যস্ত। এ জন্য প্রতিদিন তার শুধু ৬ ঘন্টা ঘুমানোই যথেষ্ট। একটি বড় ব্যাগপ্যাকে তার বিশ্ব ভ্রমণের সব লাগেজ। বেন বলেন, তার সাংহাই ভ্রমণ বিশ্বমেলার অস্ট্রেলিয়া ভবন থেকে শুরু হবে। তিনি অস্ট্রেলিয়া ভবনের প্রধান প্রতিনিধি লিনডাল সাশের সঙ্গে দেখা করেছেন। বেন বলেন, এবার বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েই তিনি অনেক অবাক করা মানুষ ও মজার সব ব্যাপার দেখেছেন। এসব বিষয়ের মধ্যে সাংহাই বিশ্বমেলা তার মনে সবচেয়ে গভীর দাগ কেটেছে। তিনি বলেন:

অস্ট্রেলিয়া ভবনের ডিজাইন খুব মজার তবে একটু ব্যাতিক্রম। কিছু কিছু জায়গা দেখতে যেন মরিচা ধরা লোহার মত। তবে ভিতরে দিক দেখতে অবাক করার মত। ভবনে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস, জনগণ সম্পর্কিত অনেক শিল্পকর্ম আছে। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল তা বিশ্বের জনগণকে জানাতে পারে যে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের জন্য কী কী করতে পারে। খুবই উত্সাহব্যঞ্জক ব্যাপার।

সাংহাই বিশ্বমেলার অস্ট্রেলিয়া ভবনে আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে, অস্ট্রেলিয়ার পর্যটন সংস্থা এবং বিদেশি ব্যবসায়ীরা এবার বিশ্বমেলার মাধ্যমে তাদের সম্পদ জনপ্রিয় করতে চান। সাংহাই বিশ্বমেলার অস্ট্রেলিয়া ভবনের প্রধান প্রতিনিধি লিনডাল বলেন, অস্ট্রেলিয়া ভবনের সহযোগী হিসেবে কুইনসল্যান্ড রাজ্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়ে বিশ্বমেলায় যোগ দিয়েছে। তিনি আশা করেন সাংহাই বিশ্বমেলার সুযোগে কুইনসল্যান্ড রাজ্য সাংহাইয়ের সঙ্গে আরো বেশি বাণিজ্যিক যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে এবং ২০ বছরেরও বেশি সময়ে দু'শহরের সম্পর্ক সম্প্রসারণ করতে সক্ষম হবে। ২০ থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত "কুইনসল্যান্ড সপ্তাহ" অনুষ্ঠান বিশ্বমেলায় কুইনসল্যান্ড রাজ্যের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । অনুষ্ঠান চলাকালে কুইনসল্যান্ড রাজ্য ধারাবাহিক বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।

বেন বলেন, তিনি অনেক দেশে গিয়েছেন। তবে সাংহাই খুব সুন্দর একটি বহুমুখী শহর। এ শহরে ইতিহাসের বৈচিত্র আছে, আছে চোখ ধাধানো আধুনিক দৃশ্যও । তিনি বলেন:

আমার জন্য সাংহাইয়ের জীবনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো খুব সহজ ব্যাপার। এখানকার উন্নয়নের গতি অনেক দ্রুত, সব জায়গাই প্রাণঞ্চল। আপনি দেখতে পারেন যে পুরোনো নির্মাণের পাশেই নতুন নির্মাণ হচ্ছে । এখানে ইতিহাসের ছায়া উপভোগ করা যায়, আধুনিক নির্মাণও অনেক বেশি। হুয়াং ফু নদীর দু'তীর থেকে বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় অনেক নতুন নতুন ভবন। ভাষার সমস্যা ছাড়া এ শহরে থাকা ও কাজের জন্য অনেক উপযোগী।

সাংহাই হল বেনের চীন সফরের তৃতীয় ধাপ। বিশ্বমেলার অস্ট্রেলিয়া ভবন পরিদর্শন ছাড়া বেন ২০০৯ সালের জুলাই মাসে কুইনসল্যান্ডের বিশ্বমেলা পরিবার—সুই চিয়ান নানের পরিবার পরিদর্শন করেছেন, এবার তিনি আবারও সে পরিবারে গিয়েছিলেন। তারা বেনকে নিয়ে সাংহাইয়ের বৈচিত্রময় অনেক জায়গায় বেড়াতে গিয়েছেন, সাংহাইয়ের সুস্বাদ্যু খাবার খেয়েছেন এবং সাংহাইয়ের মানুষের জীবন যাত্রাকে উপভোগ করেছেন। বেন বলেন:

একটি খুব ভালো সুযোগে আমি সাংহাই বিশ্বমেলার একটি পরিবারে গিয়েছি। তারা গত বছরের জুলাই মাসে অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেন ভ্রমণ করেছিলেন। সেখানে ১৯৮৮ সালে বিশ্বমেলা হয়েছিল। তাই অন্যান্য দেশের লোকজনের বিশ্বমেলা আয়োজন করা সম্পর্কে জানার চেয়ে এ পরিবার অনেক বেশি জানে। আমি তাদের বাসা পরিদর্শন করেছি। তারা অনেক অতিথি পরায়ন। আমি তাদের সুন্দর ছেলে এ্যান্ড্রিকে দেখেছি। এ পরিবার আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। আমি তাদের কাছ থেকে সাংহাইয়ের মানুষের জীবন যাত্রা সম্পর্কে জানতে শুরু করেছি। এ পরিবারের সবাই ভ্রমণ করতে অনেক পছন্দ করে। তাদের ছবি থেকে আমি বুঝতে পেরেছি যে তারা বিশ্বের অনেক জায়গায় ভ্রমণ করেছেন। আমাদের অনেক শখও একই। তারা আমার মত শরীর চর্চা করতে এবং ছবি তুলতে পছন্দ করেন। দুপুরে আমরা সাংহাইয়ের বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানে গিয়েছি, সাংহাইয়ের ঐতিহ্যিক খাবার খেয়েছি, পরস্পরের জীবন নিয়ে আলাপ আলোচনা করেছি। খুব আনন্দের সঙ্গে একটি দিন কাটিয়েছি।

সাংহাইয়ে আসার আগে বেন পেইচিং ও হংকংও গিয়েছিলেন। চীনা মেয়ে ইয়ু ইং এর আগে এ চাকরিটি পাওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিয়েছিল, এবার চীন ভ্রমণে বেন তার সঙ্গে আবার দেখা করেছেন। পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে তারা পৃথক পৃথকভাবে কুইনসল্যান্ডে নিজের বিশিষ্টময় অভিজ্ঞতাও বর্ণনা করেছেন। বেন বলেন, কর্মের সময়সূচী অনুযায়ী তাকে আবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেতে হবে, তাই সাংহাই বিশ্বমেলা পরিদর্শনের সুযোগ তার আর নেই। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, এবারের বিশ্বমেলা নিশ্চয়ই চমত্কার এবং সফল হবে। (শুয়েই ফেইফেই)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040