|
বইয়ের গল্প আফগানিস্তানের কাবুলের। প্রধান চরিত্র আমির ধনী পরিবারের একজন ছেলে। হাসান হচ্ছেন তাঁর পরিবারের কাজের ছেলে। তারা দু'জন ছোটবেলা থেকেই ভালো বন্ধু। বইতে এভাবে লেখা হয়েছে যে, আমার পুরো শিশুকাল যেন হাসানের সঙ্গে কাটানো গ্রীষ্মকালের যে কোন একটি অবসর দিন। ১২ বছর বয়সে আমির ও হাসান আফগানিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। আমির সব প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে । কিন্তু সর্বশেষ বিজয় লাভের জন্য শেষে ঘুড়ির সন্ধান করতে হবে। হাসান হচ্ছে স্থানীয় সবচেয়ে বিখ্যাত ঘুড়ি বাহক। সে আমিরকে ঘুড়ি সন্ধানের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ঘুড়ি সন্ধান করতে গিয়ে হাসান একটি দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। আমির নিজেই দুর্বল বলে পাশে বসে দেখেন এবং একটুও সাহায্য করতে পারেন নি। নিজের দূর্বলতা প্রকাশ পেতে পারে এই ভেবে আমির হাসানকে তাঁর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। এরপর পরই প্রাক্তন সোভিয়েট ইউনিয়ন আফগানিস্তানে অনুপ্রবেশ করে। আমির এবং তাঁর বাবা যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং নতুন জীবন শুরু করেন। বহু বছর পর পাকিস্তানে থাকার সময় একটি ফোন আমিরের শান্ত জীবনকে বিরক্ত করে তোলে। সে এর সত্যতা অনুসন্ধান করে প্রতিকার করার জন্য আমির আবার আফগানিস্তানে ফিরে যান। ইতোমধ্যেই হাসান মারা গেছে। তালিবানের দখলকৃত কাবুলে হাসানের ছেলেকে খুঁজে বের করা হচ্ছে আমিরের বেছে নেয়ার বিশেষ প্রায়শ্চিত্তের পদ্ধতি। যারা এ বই পছন্দ করবেন তারা এ বইটি কিনতে পারেন। এ বই দশটিরও বেশি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। "ঘুড়ি বহক"নামের বইটিতে ঘুড়ি যেন মৈত্রী বা প্রেম ও সততা বা দয়ালুর প্রতীক। "ঘুড়ি বাহক" মানে হাসান, আমির বা আমরা প্রত্যেকেই। তাই না?। উপন্যাসে লেখক আমাদের জন্য একটি বৈচিত্র্যময় আফগানিস্তান ও মুসলিম সংস্কৃতি বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন। আফগানিস্তানের সম্রাট ব্যবস্থা বাতিল, প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের অনুপ্রবেশ, অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ, তালিবান প্রশাসন ও ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনা প্রভৃতি যেন উপন্যাসের চরিত্রের জীবনের প্রেক্ষাপট। এতে আমরা জাতিগত সংঘর্ষ, ধর্মের দ্বন্দ্ব ও সংস্কৃতির সংমিশ্রণ দেখেছি। এক কথায় বলা যায়, আমরা একটি সত্যিকার বিশ্ব ও যুগের ছন্দ দেখেছি। আশা করি, পাঠকরা "ঘুড়ি বহক" এ বইটি পড়ার পর সাহসের সাথে নিজের জীবনকে অনুসন্ধান করতে পারবেন। (লিলি)
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |