|
এপ্রিল মাসে পেইচিংয়ের বসন্তকাল। এ সময় সড়ক জুড়ে ফুটপাতের পাশে সুন্দর সুন্দর ফুল ফোটে। যা আমাদের সবাইকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করে। জাপানের বস্ত্র ক্ষেত্রের একজন বিখ্যাত আন্তর্জাতিক শিল্পী চুনিচি আরাই তাঁর শিল্পকর্ম প্রদর্শনী চীনের ছিং হুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট কলেজে শুরু হয়েছে। একইদিন সপ্তম এশীয় বস্ত্র শিল্পকলা প্রদর্শনী এবং চীনের দশম বস্ত্র ডিজাইন প্রতিযোগিতাও ছিং হুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট কলেজে শুরু হয়। ৭ শ'রও বেশি বস্ত্র কর্ম এবারের প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হচ্ছে। বন্ধুরা, আমাদের আজকের " সাংস্কৃতিক ঘটনা" অনুষ্ঠানে আমরা এ বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করবো।
শিল্পী চুনিচি আরাইকে জাপানের বস্ত্র শিল্প ক্ষেত্রের একজন বিশিষ্ট প্রযুক্তিবিদ বলে অভিহিত করা হয়। তিনি জাপানের অনেক বিখ্যাত পোষাক ডিজাইনারের নতুন পোষাকের উপাদান বাছাই করার জন্য ডিজাইনের কাজ করেছেন। তিনি এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন,
" আমি পোষাক ডিজাইনের কাজ করি। আমি মনে করি, এ কাজ হচ্ছে শান্তি রক্ষা ক্ষেত্রে অবদান রাখা। এর মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন রকমের যুদ্ধ এবং বিরোধ বন্ধ করা সম্ভব । বস্ত্র হচ্ছে শান্তির প্রতীক। আশা করি, পৃথিবীতে পরমাণু যুদ্ধ থাকবে না, আমাদের শক্তি দিয়ে পৃথিবীর পরিবেশ রক্ষার জন্য আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো। একই সঙ্গে নিজের শক্তি দিয়ে সবচেয়ে সুন্দর বস্ত্র শিল্পকর্মও সৃষ্টি করতে পারবো"।
সপ্তম এশীয় বস্ত্র শিল্পকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন এশিয় দেশের শিল্পীরা এশিয়ার ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের একশ'রও বেশি শিল্পকর্মের এ প্রদর্শনীতে অংশ নেন। জাপানের বস্ত্র সমিতির পরিচালক হিরোকো ওয়াতানাবে বলেন, এ ধরণের বিনিময় জাপান ও চীনের যোগাযোগ জোরদার করার ব্যাপারে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:
" বস্ত্র তা যেমন মানবজাতির সবচেয়ে পুরানো সম্পদ তেমনি তা আমাদের ভবিষ্যতের আধুনিক সম্পদের সঙ্গে সম্পর্কিত। আশা করি, বস্ত্র এবং পোষাকের মধ্যে যোগাযোগ জোরদারের মধ্য দিয়ে মানুষ ও মানুষের মধ্যে যোগাযোগ গভীর করা সম্ভব হবে। বস্ত্রের মাধ্যমে আমাদের সুন্দর জীবন উন্মোচিত হবে"।
এশিয়ার বস্ত্র শিল্প প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীবন এবং সুষমতার প্রতি শিল্পীদের চিন্তাভাবনা হয়েছে। চাং লি চীনের শা'ন সি প্রদেশের সি আন আর্ট কলেজের পোষাক ডিজাইন বিভাগের একজন মহাপরিচালক। তিনি বলেন, তিনি নিজের শিক্ষাদান ক্ষেত্রে আঞ্চলিক স্ববৈশিষ্ট্যের ওপর বেশ গুরুত্ব আরোপ করেন । এ সম্পর্কে তিনি বলেন:
" শা'ন সি প্রদেশের নিজের স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সুবিধা রয়েছে। আঞ্চলিক দিক থেকে এখানে ঐতিহ্যবাহী, জাতীয় এবং লোক সম্পদ অত্যন্ত প্রচুর বলে আছে বলে মনে করা হয়। সুতরাং, শিক্ষাদান ক্ষেত্রে আমরা আঞ্চলিক সংস্কৃতির ওপর বেশ গুরুত্ব আরোপ করেছি। আমার নিজের কর্মের মধ্য দিয়েও সুষ্ঠুভাবে চীনা বিষয়কে প্রতিফলিত তুলে ধরছি। আঞ্চলিক স্ববৈশিষ্ট্য কখনোই ত্যাগ করবে না। আমি মনে করি, বস্ত্র ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পারস্পরিক বিনিময়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা জরুরি"।
এবারের চীনের দশম পোষাক ডিজাইন প্রতিযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক তত্ত্বগত সেমিনারও ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট কলেজে অনুষ্ঠিত হয়। চীনের আর্ট কলেজ, থিয়ান চিন আর্ট কলেজ এবং পেইচিং পোষাক ডিজাইন কলেজসহ ১৪টি কলেজের ছাত্রছাত্রীরা এবারের প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তাদের ৪ শ'রও বেশি কর্মের মধ্য থেকে নির্বাচিত করে পৃথক পৃথকভাবে স্বর্ণ, রৌপ্য এবং ব্রোঞ্জ পদক হয়। জানা গেছে, এবারের প্রতিযোগিতার ব্যাপকতা আগের সব প্রতিযোগিতার চেয়ে অনেক বেশি। কর্মের বিষয়ও বেশ বৈচিত্রময় । এর মধ্য দিয়ে পোষাক ডিজাইন ক্ষেত্রের ডিজাইনারদের বহুমুখী ও বৈচিত্র্যময়তাই প্রতিফলিত হয়েছে।
ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট কলেজের একজন কর্মকর্তা বলেন, চীনের বস্ত্র শিল্প উন্নয়নে সৃজনশীলতা চাইলে প্রথমে অন্য দেশের আধুনিক অভিজ্ঞতা থেকে শেখা উচিত। যা চীনের বস্ত্র পণ্য ডিজাইনের মান উন্নয়ন এবং প্রযুক্তিবিদ প্রশিক্ষণ ত্বরান্বিতের ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।---ওয়াং হাইমান
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |