|
ইউয়ান রাজবংশে হুয়াং কোং উয়াং নামে একজন চিত্রশিল্পী ছিলেন। তিনি ফু ছুন শান চুই থু নামে একটি চিত্র টেনে অচিরেই মারা গেছেন। কয়েক'শ বছরের মধ্যে এই ছবি বিভিন্ন জায়গায় রাখা ছিল। কিন্তু এখন আমি জানি, এ ছবির একটি অংশ চে চিয়াং প্রদেশের হাং চৌ জাদুঘরে এবং আরেকটি অংশ থাইপেই জাতীয় প্যালিস জাদুঘরে রাখা হয়। আমি আশা করি, দুটি অংশ ভবিষ্যতের এক দিনে একটি পুরো ছবি সংযুক্ত হবে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখে "ফু ছুন শান চুই থু" নামে এ চিত্রশিল্প হচ্ছে চীনের দশটি বিখ্যাত চিত্রের মধ্যে একটি। তা প্রাচীনকালে চীনের চাইনীজ চিত্রকলার সর্বোচ্চ মানেও দাঁড়িয়েছে। চলতি বছর হচ্ছে এ চিত্রের জন্মগ্রহণের ৬৬০ তম বার্ষিক। চিত্রে শরতকালে চে চিয়াং প্রদেশের ফু ছুন নদীর দু'তীরের সুন্দর দৃশ্য বর্ণনা করা হয়। ছিং রাজবংশে এ চিত্র আগুনে অগ্নিসংযোগ করে দুটি অংশ ভেঙ্গে যায়। বর্তমানে এ চিত্রের প্রথম অংশের নাম ছিলো শেং শান থু এবং তার দৈর্ঘ্য ছিল ৫০ সেন্টিমিটার। তা চে চিয়াং প্রদেশের জাদুঘরে রাখা হয়। দ্বিতীয় অংশের নাম ছিল উ ইয়ং শি চুয়ান এবং তার দৈর্ঘ্য ছিল ৬৪০ সেন্টিমিটার। তা থাইপেই জাতীয় প্যালিস জাদুঘরে সংগ্রহ করা হয়।
এ দুটি অংশ কবে একটি পূর্ণ চিত্র সংযুক্ত করা হবে তা দু'তীরের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি নতুন কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও তাঁর আশা প্রকাশের পর থাইপেই জাতীয় প্যালিস জাদুঘরের মহাপরিচালক চৌ কোং শিন সাড়া দিয়েছেন যে, ২০১২ সালের বসন্ত উত্সবে থাইপেই জাতীয় প্যালিস জাদুঘরে হুয়াং কোং উয়াংয়ের চিত্রশিল্পের প্রদর্শন আয়োজিত হবে। তিনি আশা করেন, তখন পূর্ণ "ফু ছুন শান চুই থু" প্রদর্শিত হবে।
গণ-রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্য ও বিখ্যাত চিত্রশিল্পী হো শুই ফা চে চিয়াং এব থাইপেই জাদুঘরের উদ্দেশ্যে ২০১০ সালে এ চিত্রশিল্পের জন্মস্থানে প্রদর্শনের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেন,
আমার এ প্রস্তাব দেয়ার আগে আমি সাংস্কৃতিক মহলের বন্ধুদের মতামত সংগ্রহণ করেছি। সবাই মনে করেন, এ প্রস্তাব ভাল। সাংস্কৃতিক মহলের কোন কোন বিখ্যাত ব্যক্তিরা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন। তাদের মধ্যে পেইচিং প্যালিস জাদুঘরের মহাপরিচালক চেং সিন মিও ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ওয়াং ওয়েন চাং প্রমুখ।
এ থেকে পুরোপুরিভাবে এ চিত্রের যত তাড়াতাড়ি সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে মূলভূভাগের সাংস্কৃতিক মহলের জরুরী প্রতীক্ষা এবং দু'তীরের সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদারের জরুরী প্রতীক্ষা প্রতিফলিত হয়েছে।
দশটিরও বেশি বছরের আগে চে চিয়াং জাদুঘর থাইপেই প্যালিস জাদুঘরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু থাইপেই প্যালিস জাদুঘর কোন স্পষ্ট সাড়া দেয়নি। ২০০৫ সালে চে চিয়াং জাদুঘরের শেন শান থু প্রদর্শনের জন্য তাইওয়ানে গিয়েছে। কিন্তু থাইপেই প্যালিস জাদুঘরের উ ইয়ং শি চুয়ান কবে মূলভূভাগে আসবে তা এখনও উল্লেখ করা হয়নি।
চে চিয়াং জাদুঘরের উপ-পরিচালক ছেন হাউ বলেন, এতে দুটি কারণ আছে। তিনি বলেন,
বর্তমানে তাইওয়ানের প্রযুক্তিগত বাধা আছে। থাইপেই প্যালিস জাদুঘরের মূল্যবান সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ হিসেবে ফু ছুন শান চুই থুয়ের প্রদর্শনের সময়ে নিষেধাজ্ঞা আছে। অন্য একটি কারণ হলো তাইওয়ান আইনে আটক মাওকুফ করার অনুরোধ করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মূলভূভাগ এ অনুরোধ পরিপূর্ণ করতে পারবে না।
আইনে আটক মাওকুফ করার আসল অর্থ হলো, তাইওয়ান আশা করে, মুলভূভাগ আইনের মাধ্যমে এখানে প্রদর্শিত সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ আটক করবে না। তাইওয়ান মূলভূভাগে প্রদর্শনের সময় তাদের সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ আটক করে রাখার আশংকা করে। এ প্রসঙ্গে ছেন হাও বলেন,
আমার মনে হয় তাইওয়ানের এ আশংকার কোন দরকার নেই। আমাদের চীন গণ প্রজাতন্ত্রের শুল্ক আইন আছে। সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট নিয়ম আছে। সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষসহ মুলভূভাগের বাইর থেকে আসা দ্রব্য ৬ মাসের মধ্যে বাইরে ফিরে যেতে হবে। তাই মুলভূভাগের তাইওয়ানের সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ আটক রেখে করার কোন সম্ভাবনা নেই।
চে চিয়াং জাদুঘর তবুও আশা করে, থাইপেইয়ের উ ইয়ং কোং চুয়ান যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মুলভূভাগে প্রদর্শন করবে। কারণ এর অর্থ শুধুমাত্র প্রদর্শন নয়, বরং সাংস্কৃতিক বিনিময় দিপাক্ষিক। চে চিয়াং প্রদেশের জাদুঘরের উপ-পরিচালক ছেন হাও বলেন,
তাইওয়ানের সরকারী জাদুঘরের সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ এখনও মুলভূভাগে প্রদর্শিত হয়নি। আমি আশা করি, এই অবস্থা যত তাড়াতাড়ি পরিবর্তিত হবে। তা দু'তীরের সাংস্কৃতিক বিনিময়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |