|
থাইল্যান্ডের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে চু মা দি দীর্ঘ দিন ধরে বৈদেশিক বাণিজ্যের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন । কয়েক মাস আগে তিনি থাইল্যান্ডের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন । চু মা দি চীনের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন দেখে আনন্দ বোধ করেন । তিনি বলেন , আমি চীনের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের জন্য আনন্দবোধ করি । চীন অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নে বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে । চীন কয়েক বছর আগে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অংশ নিয়েছে । আমরা লক্ষ্য করেছি , বিনিয়োগ আকর্ষনের জন্য চীন আগের চেয়ে আরো উন্মুক্ত নীতি প্রণয়ন করেছে । চীন এখন বিশ্বের অন্যতম বৃহত অর্থনৈতিক দেশে পরিণত হয়েছে । এ জন্য আমরা আনন্দবোধ করি । কারন থাইল্যান্ড ও চীন দুটিই এশিয়ার দেশ , চীন যেন আমাদের বড় ভাই । আমরা জানি চীনের স্থিতিশীল উন্নয়নে থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার দেশগুলো উপকৃত হবে । আমাদের পক্ষে চীন একটি বড় বাজার , এ বাজার পেয়ে পাশ্চাত্য দেশগুলোর উপর আমাদের নির্ভরশীলতা কমেছে ।
চু মা দি বলেন , তিনি একাধিকবার চীন সফর করেছেন , তাই বিশ-বাইশ বছরে চীনের পরিবর্তন দেখে তিনি নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না । তিনি বলেন ,আমি ১৯৮৪ সালে প্রথমবার চীন সফর করেছি । চীনের সেই সময়ের অবস্থার সঙ্গে বর্তমান অবস্থার তুলনা করা যায় না । আশির দশকে আমি পেইচিং সফর করেছি । সেই সময় পেইচিংয়ের রাস্তায় মোটর গাড়ি কম ছিল , রাস্তায় সাইকেল ও বাস যাতায়াত করত । এখন চীনের উন্নয়ন যুক্তরাষ্ট্রসহ শিল্পোন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করতে পারে । তাই আমি বলি ,যারা চীনের অতীত ও বর্তমান দুটোই নিজের চোখে দেখেছেন , তারাই শুধু বুঝতে পারেন চীনে কত বিরাট পরিবর্তন হয়েছে ।
চু মা দি বলেন , চীন থাইল্যান্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার । তিনি চীন ও থাইল্যান্ডের বাণিজ্যিক বিনিময়ে আশাবাদী । তিনি বলেন ,দু'দেশের বাণিজ্যিক বিনিময়ের লক্ষ্য হলো ২০১০ সালে দু'দেশের বাণিজ্য পরিমান ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌছানো । বর্তমানে দু'দেশের বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমান ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো রয়েছে । বিশ্ব আর্থিক সংকটের প্রভাব হলেও দু'দেশের বাণিজ্য পরিমান স্থিতিশীলভাবে বাড়ছে । আমি আশা করি , আগামী বছর ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্য হাসিল হবে ।
এখন বিশ্বের সব দেশ পণ্যের নিরাপত্তার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে । চীন থাইল্যান্ডের তৃতীয় কৃষিজাত পণ্য আমদানিকারক দেশ , ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্রের পরই চীনের স্থান । থাইল্যান্ড প্রতি বছর চীন থেকে ৭০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের কৃষি পণ্য আমদানি করে । এর মধ্যে বেশির ভাগই শাকশব্জি , ফল , মাছ ও চিংড়ি । চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে চু মা দি বলেন , চীন থেকে আমদানি পণ্যগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই শাকসব্জি ও ফল । এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরীক্ষায় চীন থেকে আমদানি করা কৃষিজাত পণ্য থেকে কীটনাশক ওষুধ খুঁজে পায় নি । তাই থাইল্যান্ডের নাগরিকরা চীনের পণ্য পছন্দ করেন । তাদের ধারণা , চীন থেকে আমদানি করা খাবারের গুনগতমান ভালো ও সস্তা । এ বছরের জুন মাসে চীন খাদ্যদ্রব্যের নিরাপত্তা সম্পর্কিত আইন প্রকাশ করেছে , এতে চীনের কৃষিজাত পণ্যের ওপর আমাদের আস্থা আরো বেড়েছে ।
থাইল্যান্ড ও চীনের বাণিজ্যের ভবিষ্যত সম্পর্কে চু মা দি বলেন , থাইল্যান্ড চীনের বাজারের প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় , তাই চীনে থাইল্যান্ডের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে । তিনি বলেন , বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাইল্যান্ডের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মোট ৬৬টি কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে । আমরা চীনের পেইচিং , সাংহাই , কুয়াং চৌ , নাননিং , তালিয়েন ও ছেনতু শহরে আমাদের কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি । চীন একটি বড় দেশ । যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বড় । তাই আমরা চীনের আরো বেশি শহরে আমাদের বাণিজ্যিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করবো ।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |