Web bengali.cri.cn   
চীনের উন্নয়ন বিশ্বের জন্য উন্নয়নের নতুন পদ্ধতি যুগিয়েছে
  2010-02-08 20:49:56  cri
নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর ৬০ বছরে চীনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে যথেষ্ট অগ্রগতি সাধিত হয়েছে । ফ্রান্সের চীন বিষয়ক গবেষক পিয়েরে পিকুয়ার্ট মনে করেন , যদিও চীনের উন্নয়নের পথ এখনও দীর্ঘ , তবুও চীন একটি নির্ভুল পথ বেছে নিয়েছে । চীনের উন্নয়ন বিশ্বের জন্য এক নতুন উন্নয়ন পদ্ধতি সরবরাহ করেছে । সম্প্রতি সি আর আই সংবাদদাতা পিয়েরে পিকুয়ার্টের একটি সাক্ষাত্কার নিয়েছেন । পিয়েরে পিকুয়ার্ট প্যারিসের আট নম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওপলিটিক্সে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন । তিনি চীন ও বিশ্বের প্রবাসী চীনা সমস্যা নিয়ে গবেষণা করেন । তিনি গবেষণার মাধ্যমে প্রকৃত চীনকে দেখার চেষ্টা করছেন । তিনি ' চীনা সাম্রাজ্য' ও ' অলিম্পিক ও চীন'সহ বেশ কয়েকটি চীনের উন্নয়ন সম্পর্কিত বই লিখেছেন । বই লেখা ছাড়া তিনি পত্রিকায় প্রবন্ধ প্রকাশ করে চীনের উন্নয়ন ও বিশ্বে চীনের প্রভাবের মূল্যায়ন করেন । চীনের অর্জিত সাফল্য সম্পর্কে পিয়েরে পিকুয়ার্ট বলেন , চীনের মতো বিপুল জনসংখ্যাবিশিষ্ট দেশে গত ৬০ বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে , তা' সবার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে । তিনি আরো বলেন , নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর ৬০ বছর পার হয়ে গেছে। চীনের সাফল্য পর্যালোচনার সময় আমাদের স্বীকার করতে হবে যে ১৯৪৯ সালের তুলনায় চীনে আমুল পরিবর্তন ঘটেছে । অর্থনীতি ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে সংস্কার চালানোর পাশাপাশি চীন বিশ্বের কাছে সার্বিকভাবে নিজের দ্বার উন্মুক্ত করেছে । বর্তমান চীনে জনগণের ক্রয় ক্ষমতা অনেক বেড়েছে , চীনের অবকাঠামো নির্মান ব্যবস্থা ক্রমেই পরিপূর্ন হচ্ছে , শিক্ষা , গবেষণা , বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি এবং স্বাস্থ্য রক্ষা ক্ষেত্রে চীনের অগ্রগতি লক্ষনীয় ।

তিনি আরো বলেন , ১৯৪৯ সালে চীন ছিল একটি দরিদ্র ও পশ্চাদপদ দেশ। ৬০ বছরে চীন একটি দরিদ্র ও পশ্চাদপদ দেশ থেকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশে পরিণত হয়েছে । এটা এক বিস্ময়কর ব্যাপার । কিন্তু কিছু পাশ্চাত্য দেশ চীনের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের সমালোচনা করছে । পিয়েরে পিকুয়াট বলেন , পাশ্চাত্য দেশের কিছু মানুষ চীন একটি শক্তিশালী দেশ হওয়ার আশংকা করেন । ঠিক এই কারণে পাশ্চাত্য দেশের কিছু গবেষক ও তথ্য মাধ্যম চীনের উন্নয়ন সম্পর্কে বাস্তব মনোভাব পোষন করতে পারেন নি । চীনা জনগণ দেশের উন্নয়নে উপকৃত হয়েছেন । অর্থনীতির উন্নয়নের ফল শুধু আমদানি ও রপ্তানি পরিমান , মাথাপিছু উত্পাদন মূল্যে প্রকাশিত হয় নি , অবকাঠামো নির্মাণ , দেশের শিক্ষাগত মান , জনগণের জীবনযাত্রার মান আর গোটা সমাজের উন্নয়নেও পরিলক্ষিত হয় । উন্নয়নের কল্যানে চীন কিছু উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সাহায্য করতে পারছে ।

পাশ্চাত্য দেশের কিছু লোক চীনের হুমকির কথাও প্রচার করছেন । এ প্রসঙ্গে পিয়েরে পিকুয়ার্ট মনে করেন , চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথ বেছে নিয়েছে । এটা উন্নয়নের একটি নতুন পদ্ধতি । তিনি বলেন , চীন শান্তিপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে , এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার নীতি অনুসরণ করছে । পশ্চিমা দেশ চীনের উন্নয়ন সম্পর্কে বাস্তব মনোভাব পোষণ করলে চীনের উন্নয়ন পদ্ধতির উপকার বুঝতে পারবে । জিওপলিটিশান হিসেবে পিয়েরে পিকুয়ার্ট মনে করেন , আন্তর্জাতিক মঞ্চে চীনের প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে । এখন আন্তর্জাতিক বিষয়াদিতে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের একটি উপযুক্ত সময় । তিনি বলেন , চীন আন্তর্জাতিক ব্যাপারগুলোতে ক্রমেই আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে । চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য হয়েছে , আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠার আলোচনায় অংশ নিচ্ছে এবং সক্রিয়ভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর কাজে অংশ নিয়েছে । বিশ্ব আর্থিক সংকটের অসুবিধাজনক প্রভাব দূর করার ব্যাপারে চীন সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে ।

পিয়েরে পিকুয়ার্ট চীনের পেশ করা সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার ধারণার প্রশংসা করেন । তিনি মনে করেন , সুষম বিশ্ব গড়ে তোলা বিশ্বের জন্য কল্যান নিয়ে আসবে । তিনি বলেন , যদিও পাশ্চাত্য দেশগুলোর তথ্য মাধ্যমগুলো সুষম উন্নয়ন পদ্ধতির উপকার এখন পুরোপুরিভাবে উপলব্ধি করতে পারছে না , তবে এ ধরনের উন্নয়ন ধারণা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের সামঞ্জস্য নিয়ে আসবে ।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040