|
এ উস্যু ক্লাবের কোচ মাসুদ জাফারির বয়স ৩৩ বছর । তিনি নয় বছর বয়স থেকে চীনা উস্যু শিখতে শুরু করেন । ১৩ বছর বয়স থেকে চীনের শাও লিন উস্যু চর্চা করেন । ২০০৬ সালে জাফারি চীনের হোনান প্রদেশের সোন সানের শানলিন মন্দিরে তিন মাসব্যাপী একটি উস্যু কোর্সে অংশ নেন । চীন থেকে দেশে ফিরে যাওয়ার পর জাফারী শাও লিন উস্যু জনপ্রিয় করার কাজ শুরু করেছেন । তিনি বলেন , আমি গত তিন বছরে চীনা উস্যু জনপ্রিয় করার কাজ করেছি । ইরানের বেশির ভাগ প্রদেশ ও শহরে আমাদের সদস্য আছে। আমার ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে যেমন অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে আছে ,তেমনি পঞ্চাশ বছরের পৌঢরাও রয়েছে । আমরা দেশের অনেক শহরে চীনা উস্যু প্রশিক্ষণ কোর্সের ব্যবস্থা করেছি , আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হল সদস্যদের ,বিশেষ করে অল্পবয়সী যুবকযুবতীদের স্বাস্থ্যের মান উন্নত করতে সাহায্য করা ।
আলি সালভাদর একজন ইঞ্জিনিয়ার । ছোট বেলা থেকেই তিনি উস্যু চর্চা পছন্দ করেন । দু'বছর আগে তিনি জাফারীর উস্যু ক্লাবে যোগ দিয়েছেন । তিনি বলেন , আমি ছোট বেলা থেকেই চীনা উ স্যু চর্চা পছন্দ করি । কিন্তু এর আগে আমি ভালো কোচ পাওয়ার সুযোগ পাই নি । উস্যু চর্চার সময় অসাবধানে আহত হওয়ার কথা চিন্তা করে আমার বাবা-মা আমাকে উস্যু শিখতে মানা করেন । এবার আমি জাফারির কাছ থেকে চীনের শাও লিন ইস্যু শিখছি , এতে আমার ছোট বেলার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে ।
কিছু দিন আগে চতুর্থ কনফুসিয়াস সম্মেলন পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হয় । জাফারি তার উস্যু দল নিয়ে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের পক্ষ থেকে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন । চীন সফরের এ অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে জাফারি বলেন ,দর্শকরা আমাদের উস্যু দলের অভিনয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন । অনুষ্ঠান শেষে তারা মঞ্চে উঠে আমাদের সঙ্গে ছবি তুলেছেন । আমরা চীনের শাও লিন উস্যু বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে অভিনয় করেছি । স্বাগতিক দেশ চীন ছাড়া শুধু আমরাই চীনা উস্যুতে অভিনয় করেছি ।
ইরানে চীনা উস্যুর জনপ্রিয়তা প্রসঙ্গে জাফারি বলেন , দক্ষিণ কোরিয়ার তাইকুনডো ও জাপানের জুডোর তুলনায় ইরানে চীনা উস্যু চর্চাকারীর সংখ্যা এখনও কম । তিনি মনে করেন , জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার জুডো ও তাইকুনডো চর্চাকারীরা কড়াকড়িভাবে নিয়ম ও মানদন্ড অনুসারে শরীর চর্চা করেন এবং একই স্টাইলের সাদা পোশাক পরে চর্চা করেন । তবে চীনা উস্যুর শাখা বেশি বলে চচার্কারীরা বিভিন্ন ধরনের পোশাক পরেন । এটা চীনা উস্যুর জনপ্রিয় করার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে । তবে তিনি চীনা উস্যুর ভবিষ্যত সম্পর্কে আশাবাদী । তিনি বলেন , আমরা ইরানে ফার্সি , ইংরেজী ও চীনা ভাষায় চীনা উস্যুর ওয়েবসাইট খুলেছি । আমাদের বন্ধুরা চীনে থেকেও আমার ক্লাবের কাজকর্মের খোঁজখবর নিতে পারেন । তা ছাড়া আমরা চীনা উস্যুর পাঠ্য বই ও ভিসিডি তৈরী করছি । আমি বিশ্বাস করি , এ সব ব্যবস্থা নেয়ার পর আমাদের ক্লাবের সদস্য সংখ্যা আরো বাড়বে ।
রাজধানী তেহরান ছাড়া জাফারি ইরানের অন্যান্য প্রদেশ ও শহরে চীনা উস্যু জনপ্রিয় করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন । তিনি ইরানের বিভিন্ন প্রদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করে চীনা উস্যুর কোচ ও রেফারী প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন । জাফারি ও তার দলের সদস্যদের প্রচেষ্টায় ইরানে এখন দু' হাজার মানুষ চীনা উস্যু চর্চা করছেন । ইরানে চীনা উস্যুর প্রভাব বাড়ানোর জন্য তিনি চীনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সমর্থন ও সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন ।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |