|
বাণিজ্য মন্ত্রী মারি বলেন , ইন্দোনেশিয়া সাংহাই বিশ্ব মেলার ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় । ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ৭ কোটি লোক বিশ্ব মেলা পরিদর্শন করবে । আমি আশা করি, আমাদের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দর্শকরা ইন্দোনেশিয়ার প্রাকৃতিক দৃশ্য ও রীতিনীতি উপলব্ধি করতে পারবে এবং এ মেলার মাধ্যমে বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে , পর্যটন শিল্প উন্নয়ন ঘটবে এবং পুঁজি আকৃস্ট হবে ।
এ বিশ্ব মেলাকে সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক অনুষ্ঠান হিসেবেও বলা যায় । এর মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ার ভাবমূর্তিও সারা বিশ্বে উন্নত হবে । চলতি বছর হচ্ছে চীন ও ইন্দোনেশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৬০তম বার্ষিকী । আমরাও বিশ্ব মেলার মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়া ও চীনের সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চাই । বিশ্ব মেলায় আমরা এ বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেবো ।
ইন্দোনেশিয়া হল আসিয়ানের বৃহত্তম অর্থনৈতিক গোষ্ঠী । ২০০৬ সালের ১লা জুলাই ইন্দোনেশিয়া সাংহাই বিশ্ব মেলায় অংশ নেয়ার কথা নিশ্চিত করেছে । ২০০৮ সালের ১৩ই নভেম্বর ইন্দোনেশিয়া মেলায় অংশ নেয়ার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে । গত বছরের ১৮ই সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ব মেলায় ইন্দোনেশিয়ার প্রদর্শনী স্টলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ।
মারি বলেন , ইন্দোনেশিয়া এ জানালার মাধ্যমে লোকজনকে আঞ্চলিক ব্যাপারে ইন্দোনেশিয়ার নেতৃত্বের ভূমিকা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ , সংস্কৃতি ও উদ্ভাবন শিল্প , পুঁজি বিনিয়োগ , বাণিজ্য ও পর্যটনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের সুপ্তশক্তি তুলে ধরবে ।
তিনি বলেন , সাংহাই বিশ্ব মেলার প্রতিপাদ্য হল 'শহর বিশ্বকে আরো সুন্দর করেছে' । এ প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রাখার জন্য ইন্দোনেশিয়ার প্রদর্শনী স্টলের প্রধান বিষয় হল : 'ইন্দোনেশিয়া—প্রাকৃতিক ও বহুমুখী শহর' । তিনি ব্যাখ্যা করে বলেছেন :
ইন্দোনেশিয়ার সংস্কৃতি , প্রাকৃতিক সম্পদ ও উন্নয়নের মান বহুমুখী । যদিও জাতি , সংস্কৃতি , ধর্ম ও প্রাকৃতিক সম্পদসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের দেশের বৈচিত্রময়তা রয়েছে । তবে ইন্দোনেশিয়ার জনগণ যৌথভাবে আরো সুন্দর শহর ও সুন্দর জীবন গড়তে পারবে । যদি একটি শহরের বিভিন্ন দিক থেকে বৈচিত্রময়তা থাকে , তাহলে সে শহরটি আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে । ইন্দোনেশিয়ার অনেক শহরের অনেক ঐতিহ্যময় জিনিসপত্র হারিয়ে যায় নি । তারপরও আমরা আধুনিকতার ছোঁয়া লাগা অনেক জিনিসই দেখতে পারি । তা যুগের উন্নয়নের প্রবণতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ।
সাংহাই বিশ্ব মেলায় ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ প্রতিনিধি হিসেবে মারি গত বছরের ১৮ই সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার স্টল নির্মাণ কাজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন । এ স্টল ইন্দোনেশিয়ার নিজস্ব নকশা করা ৪ হাজার সেন্টিমিটার আয়তনের একটি রাষ্ট্রীয় প্রদর্শনী স্টল । স্টলটি চারতলা বিশিষ্ট । দর্শকরা ৬ মিটার প্রসস্হ সিঁড়ির মাধ্যমে প্রদর্শনী কেন্দ্রের বিভিন্ন তলা দেখতে পারবে । এ স্টল নির্মাণে ১ কোটি থেকে ১.২ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করা হবে । তিনি বলেন :
প্রদর্শনী কেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ কাঠামো যেন কম্বুরেখার মত। আমরা প্রদর্শনী কেন্দ্রটি যাতে লোকজনের মনে গভীর ছাপ ফেলতে পারে এমন পাঁচটি প্রদর্শনী এলাকা স্থাপন করবো । দৃষ্টি অংশে আমরা ভিডিও ও আলোকচিত্রসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রদর্শনী বিষয়বস্তুর বৈচিত্রময়তার প্রতিফলন করবো। শ্রবণ অংশে শোনা যাবে সঙ্গীতযন্ত্রের শব্দ ও পানির মিষ্টি শব্দসহ বিভিন্ন সুমধুর আওয়াজ । ঘ্রাণেন্দ্রিয় অংশে লোকজন বাঁশ , ঘাস ও কফির গন্ধ নিতে পারবে । চতুর্থ অংশ হল স্বাদ । দর্শকরা ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার উপভোগ করতে পারবে । পঞ্চম অংশ হল অনুভূতি । দর্শকরা ইন্দোনেশিয়ার বেলাভূমি ও পোষাক পরিচ্ছদ উপভোগ করতে পারবে এবং ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গীতযন্ত্র বাজাতে পারবে । এ ছাড়াও প্রদর্শনী স্টলে ইন্দোনেশিয়ার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে ।
মারি সংবাদদাতাকে বিশ্ব মেলার জন্য ইন্দোনেশিয়ার নেয়া বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কাজ অবহিত করেছেন । তিনি বলেন :
আমাদের প্রদর্শনী কেন্দ্রের নির্মাণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে । আমরা ব্যাপকভাবে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহার করে এ স্টল নির্মাণ করেছি । যাতে এটি এবারের সাংহাই বিশ্ব মেলার প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হয় । এখন আমরা বিশ্ব মেলা চলাকালে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি । এসব অনুষ্ঠান ইন্দোনেশিয়ার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত হবে । আমরা বেসরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানকেও অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জানাবো । যাতে ৬ মাসব্যাপী অনুষ্ঠানকে আরো প্রাণচঞ্চল করে তোলা যায় ।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |