|
অনুষ্ঠানে থাইল্যান্ডের একজন ১৭ বছর বয়সের মেয়ে একটি চীনা গান গেয়েছেন । মেয়েটির নাম তু পিং। তিনি উত্তর আবুরি প্রদেশের একটি কনফুসিয়াস ক্লাসরুমে পড়াশুনা করছেন । তু পিং চীনের অন্যতম সংখ্যালঘু জাতি—পাই জাতির জাতীয় পোশাক পরে এ গান গেয়েছেন । থাইল্যান্ডে চীনা দূতাবাস , চীনের জাতীয় চীনা ভাষা কার্যালয় , ইউনান প্রাদেশিক সরকারের তথ্য বিভাগ , থাইল্যান্ডের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও থাই-চীন মৈত্রী সমিতির যৌথ উদ্যোগে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে । মোট তিন হাজার প্রতিযোগী এ বাছাইমূলক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন । তাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট প্রতিযোগির বয়স মাত্র সাত বছর । সবচেয়ে বয়োবৃদ্ধ প্রতিযোগীর বয়স ৭১ বছর । বাছাই পর্বের পর ৩৫জন প্রতিযোগী চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায় উঠেন ।
থাইল্যান্ডে চীনের রাষ্ট্রদূত কুয়ান মু ফাইনাল প্রতিযোগিতায় বক্তৃতা দেয়ার সময় বলেন , অনেক শ্রুতিমধুর চীনা গান থাইল্যান্ডের অধিবাসীরা খুব পছন্দ করেন। এই সব বন্ধুরা যদিও অল্প সময় চীনা ভাষা শিখেছেন , তবে তারা উত্সাহের সঙ্গে চর্চা করে চমত্কারভাবে চীনা গান গেয়েছেন । রাষ্ট্রদূত কুয়ান মু আরো বলেন , থাইল্যান্ডে চীনা ভাষার কোর্স জনপ্রিয় করা হচ্ছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-থাইল্যান্ডের সম্পর্ক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক । আমি আনন্দের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি , থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তর অঞ্চলের প্রায় সব প্রাথমিক স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ভাষার কোর্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে । থাইল্যান্ডে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার মানুষ চীনা ভাষা শিখছেন । চীনা ভাষা শেখার পাশাপাশি অনেক বন্ধু চীনা গান খুব পছন্দ করেন । তারা চীনা গান শিখতে আগ্রহী। তাদের আশা পূরণের জন্য থাইল্যান্ডে চীনা ভাষার গান গাওয়ার এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় ।
রাষ্ট্রদূত কুয়ান মু আরো বলেন , থাইল্যান্ডের রাজকুমারী প্রিন্স ছুলাভোন মাহিদোল দীর্ঘ দিন ধরে চীনের প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র বাজার চেষ্টা করেন এবং চীনের পেইচিং , সাংহাই ও কুয়াং তুং প্রদেশের তুং কুয়াং শহরে সংগীত পরিবেশন করেছেন । তিনি কু চেং বাজার মাধ্যমে চীন ও থাইল্যান্ডের জনগণের মধ্যে একটি বিনিময়ের সেতু নির্মাণ করেছেন ।
থাইল্যান্ড –চীন মৈত্রী সমিতির চেয়ারম্যান কোর্ন দাপারাংসি এ প্রতিযোগিতার সাফল্য কামনা করে বলেন , ১৯৭৬ সালে চীনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই ও থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাটিছাই ছোনহাভানের যৌথ প্রচেষ্টায় থাইল্যান্ড –চীন মৈত্রী সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয় । সমিতি প্রতিষ্ঠার পর ত্রিশ বছরে দু'দেশের জনগণের বন্ধুত্ব ক্রমেই দৃঢ হচ্ছে । এবার আমরা গান গাওয়ার মাধ্যমে দু'দেশের জনগণের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রশংসা করছি ।
জানা গেছে , চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া ৩৫জন গায়কগায়িকার মধ্যে কেউ কেউ মাত্র ছয়মাস চীনা ভাষা শিখেছেন । তবে তাদের গান শুনে বোঝা যাবে না যে তারা বিদেশী এবং অল্প সময় চীনা ভাষা শিখেছেন । কোনো কোনো গায়কগায়িকা গান করার সঙ্গে সঙ্গে বেলে নৃত্য ও রঙীন ফিতা নিয়ে নাচ নেচেছেন । একজন গায়ক প্রাচীন চীনের বিখ্যাত সাহিত্য কর্ম ' পশ্চিম যাত্রা'র ভিত্তিতে রচিত একটি টি ভি নাটকের গান গেয়েছে এবং এ সাহিত্য কর্মের প্রধান চরিত্র বানর সুন উ খুনের ভুমিকায় অভিনয় করেছেন । গায়ক গায়িকারা মঞ্চে গান গাওয়ার সময় তাদের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা হাততালি দিয়ে তাদের উত্সাহ দিয়েছে ।
একজন প্রতিযোগী ' ইয়াংসি নদীর গান' নামে একটি গান পরিবেশন করেন । তার গান শুনে থাইল্যান্ডের প্রবাসী চীনা লিন কো ফাং বলেন , আমি মনে করি তিনি খুব ভালো গেয়েছেন । এ গানে চীনের বৃহত্তম নদী --ইয়াংসি নদীর প্রশংসা করা হয়েছে । আমি চীনের লোকসংগীত ও দেশপ্রেমের গান খুব পছন্দ করি ।
তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে পাঁচজন প্রতিযোগী প্রথম পুরস্কার , আটজন দ্বিতীয় পুরস্কার আর ১২জন তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে । যারা প্রথম পুরস্কার পেয়েছে , তারা চীনের ইউনান প্রদেশে এক মাস চীনা ভাষা অধ্যয়নের সুযোগ পাবেন । রাষ্ট্রদূত কুয়ান মু ও থাইল্যান্ডের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা প্রতিযোগিদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন এবং তাদেরকে চীন ও থাইল্যান্ডের মৈত্রীর জন্য অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন ।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |