Web bengali.cri.cn   
চাঁদ আমার মনের প্রতিনিধিত্ব করে: চীনের প্রতি কেনীয় ছাত্রছাত্রীদের অনুভূতি
  2009-12-28 20:41:54  cri
২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের পেইচিং শীর্ষ সম্মেলন হল চীন ও আফ্রিকা সম্পর্কের ইতিহাসের একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ও তাত্পর্যসম্পন্ন ঘটনা । চীন ও আফ্রিকার নেতারা চীন-আফ্রিকার রাজনৈতিক ক্ষেত্রের পারস্পরিক আস্থা ও সম্মান , অর্থনীতির ক্ষেত্রের সহযোগিতা ও উভয়ের কল্যাণ , সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের বিনিময় ও পরস্পরকে জানার নতুন কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেছেন । পূর্ব আফ্রিকার কেনিয়া চীন-আফ্রিকা বাস্তব সহযোগিতার ক্ষেত্রে কল্যাণকর হয়েছে । পেইচিং শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিশ্রুতি মেনে নেয়ার লক্ষ্যে ২০০৮ সালে চীন সরকার ৮০ জন কেনিয়ার ছাত্রছাত্রীকে চীনে লেখাপড়ার সুযোগ দিয়েছে । এ সংখ্যা ২০০৭ সালের দ্বিগুণ । যদিও চীনে এসব কেনীয় ছাত্রছাত্রীদের জীবনে নানামুখী অভিজ্ঞতা রয়েছে , তবে চীন সম্পর্কে তাদের গভীর অনুভূতি রয়েছে । 

লুসি কনফুসিয়াস ইন্সটিটউটে লেখাপড়া করে । এ সুন্দর মেয়েটি এখন নাইরোবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটে চীনা ভাষার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে । এক বছর আগে সে সাফল্যের সঙ্গে চীন সরকারের বৃত্তি পেয়েছে এবং চীনের থিয়েন চিন নর্মাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ভাষা শেখার সুযোগ পেয়েছে । থিয়েন চিনে লেখাপড়ার অভিজ্ঞতার ফলে লুসি অনেক জ্ঞান অর্জন করেছে এবং নিজের দৃষ্টিভঙ্গী সম্প্রসারণ করেছে । নাইরোবি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট ও থিয়েন চিন নর্মাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার একজন সহপাঠী আছে , তার নাম দোর্কাস ওদিয়াম্বোও চীনের সংস্কৃতিকে অনেক পছন্দ করে । তারা দু'জনই নাচগান করতে পারে । যেন চীনের হংকংয়ের একটি বিখ্যাত সঙ্গীত দল টুইনস এর মত , চীনের শিক্ষকরা তাদেরকে কেনিয়ার টুইসন বলে ডাকে । তারা চীনের গান সম্পর্কেও অনেক জানে ।

চীনা গান ছাড়া চীনের চলচ্চিত্রকে দোর্কাসও অনেক পছন্দ করে । সে বলে :

আমি চলচ্চিত্র "বীর"কে অনেক পছন্দ করি । এ চলচ্চিত্র অস্কার পুরস্কার পেয়েছে । আমি এ চলচ্চিত্রের প্রধান নায়ক লিয়াং ছাও উইকে অনেক পছন্দ করি । আশা করি আগামী বার আমি চীনে যাওয়ার সময় তাকে দেখতে পাবো ।

কেনিয়ার এ দু'ছাত্রীর তুলনায় ডেনিয়েল কাগো ওয়ামবুগু চীন সম্পর্কে আরো বেশি জানেন । তিনি এখন লেখাপড়ার পাশাপাশি কুয়াং চৌয়ে আসবাবপত্রের ব্যবসা করেন । যখন ডেনিয়েল আফ্রিকায় ফিরে যান , তখন আমাদের কেনিয়াস্থ সংবাদদাতা তার চীনা ভাষার মান পরীক্ষা করেছে ।

আমাদের সংবাদদাতা ডেনিয়েলকে জিজ্ঞেস করেছে যে এ টেবিলের দাম কত , ডেনিয়েল উত্তর দিয়ে বলেন , ১৬ শ' ইউয়ান । তবে ডিস্কাউন্টে ১৫ শ' ইউয়ান দিয়ে এ টেবিল কিনতে পারেন । শ্রোতা বন্ধুরা , এ সংলাপ শোনার পর আপনারা কি কল্পনা করতে পারেন যে এত ভালো চীনা ভাষা বলতে পারা এ ব্যবসায়ী একজন আফ্রিকার লোক ?

ডেনিয়েল চীনা ভাষায় নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন । তিনি এখন শেন চেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ভাষা শিখছেন । তার শিক্ষার প্রেক্ষাপট অনেক ভালো । তিনি কেনিয়ার কেনিয়াত্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন । দূরন্তের চীন সম্পর্কে জানার আগ্রহ নিয়ে তিনি মনের স্বপ্ন পূরণ করতে কুয়াং তুংয়ে এসেছেন । তার কাছে চীনা ভাষা হল বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ভাষার অন্যতম । চীন দিন দিন শক্তিশালী হওয়ার পাশপাশি চীনের আন্তর্জাতিক অবস্থান এবং মর্যাদা দিন দিন বাড়ছে । এখন চীনা ভাষা শেখা অনেক সহায়ক । চীনে আসার পর ডেনিয়েল চীনা ভাষা শেখার সব সুযোগই আকড়ে ধরেছেন । এখন নিজের চীনা ভাষার মান সম্পর্কে তিনি খুব আস্থাবান । তিনি বলেন :

আমি খুব খুশি এখন চীনা ভাষা শিখছি । আমি চীনা ভাষায় চীনের সহপাঠি এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সহপাঠীর সঙ্গে ভাব বিনিময় করতে পারি । এখন আমি একই ভাষায় কথা বলছি , তা হল চীনা ভাষা ।

ভাষা হল যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম এবং মৈত্রীর সেঁতু । চীনে থাকার সময় ডেনিয়েল , লুসি এবং দোর্কাসের মত কেনিয়া এবং আফ্রিকার অন্যান্য দেশের ছাত্রছাত্রীরা চীনের দ্রুত উন্নয়ন সম্পর্কে গভীরভাবে অনুভব করেছেন । দোর্কাস বলেন :

আমার মনে হয় , চীন সরকার সত্যিকারভাবেই দেশের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করছে এবং এর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে । আমাদের উচিত ভালোভাবে চীনের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা গ্রহণ করা । প্রথমে চীন সরকার সাধারণ নাগরিকের স্বার্থের প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় । চীন একটি জনবহুল দেশ । লোকসংখ্যার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা চীনা জনগণের কল্যাণের সঙ্গে জড়িত । তাই সরকার সংশ্লিষ্ট নীতি প্রণয়ন করেছে । তা চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হয়েছে । চীনের শিশুদের জীবনযাত্রার মানেরও উন্নতি হচ্ছে । এ ছাড়া চীন কখনোই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে না এবং বরাবরই অন্য দেশের সঙ্গে সহাবস্থানের নীতি মেনে চলে ।

এ ছাড়া দোর্কাস কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার সময় তার একটি আবৃত্তির মাধ্যমে চীনের প্রতি তার গভীর অনুভূতি প্রকাশ করেছেন । তিনি বলেন :  

আমি জানি , চীন হল একটি ৫ হাজার বছরের ইহিতাস সমৃদ্ধ একটি প্রাচীণ দেশ । তার সুন্দর ভাষা এবং তার উজ্জ্বল সংস্কৃতি লোকজনকে আকর্ষণ করে । এ কারণে এ দেশ মানুষের কাছে আরো আকর্ষণীয় হয়েছে ।

চীন এখন প্রাচীন তবে তরুণ দেশ হিসেবে এখন আফ্রিকা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বন্ধুদের স্বাগত জানায় এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বন্ধুদের জন্য নিজের দরজা খুলে রেখেছে । আমাদের বিশ্বাস , চীনে আসা প্রত্যেক বন্ধু এখানে সুন্দর স্মৃতির অধিকারী হতে পারে ।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040