|
(ওয়াং ফাং)
সু অপেরা চীনের চিয়াং সু ও জে চিয়াং প্রদেশে খুব জনপ্রিয়। ১৯৪১ সালে চীনের জাতীয় ও নতুন সু অপেরা দল" সাং হাইয়ে গঠিত হয়। যার মানে সু অপেরা আনুষ্ঠানিকভাবে তার পরিবেশনা শুরু করলো। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা দু'জন সু অপেরা শিল্পীর গল্প আপনাদের শুনাবো।প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনি এইমাত্র যা শুনেছেন, সেটা হচ্ছে মাদাম ওয়াং ফাংয়ের গাওয়া সু অপেরা "নেশা হয়ে বাসায় ফিরে যাওয়া"। মাদাম ওয়াং ফাং এ অপেরার মধ্য দিয়ে চীনের অপেরার বৃহত্তম পুরস্কার- পার্ম ফুল পুরস্কার পেয়েছেন। ওয়াং ফাং'র চমত্কার পরিবেশনার কারণ হচ্ছে তার শিক্ষক চিয়াং ইয়ু ফাং। সবাই চিয়াং ইয়ুন ফাংকে সু অপেরা'র প্রথম নারী-পুরুষ হিসেবে জানেন। তিনি "নেশায় বুদ হয়ে বাসায় ফিরে যাওয়া" অপেরায় পুরুষ ছিন জোং নামক চরিত্রে অভিনয় করেন। পুরুষ চরিত্রে সুন্দর পরিবেশন করার পাশাপাশি নারী চরিত্রেও তিনি খুব ভালো অভিনয় করেন। এ সম্পর্কে ওয়াং ফাং বলেন,
"আমার শিক্ষক চিয়াং ইয়ু ফাং খুব ভালো পরিবেশন করেন। তার গাওয়া অপেরা খুব সুন্দর এবং পুরো অপেরার পরিবেশনার বিষয়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। এ পর্যন্ত কেউই তার মতো ভালো অভিনয় করতে পারেন নি। যখন আমি সু অপেরা শিখতে শুরু করি, তখন আমার বয়স খুব কম ছিল। আমি প্রথমেই "নেশায় বুদ হয়ে বাসায় ফিরে যাওয়া" অপেরাটির অভিনয় শিখতাম। তিনি বারবার আমাকে গুরুত্বপূর্ণ দিক দেখিয়ে দিতে মনোযোগ দিয়ে আমাকে শিখাতেন।"
চিয়াং ইয়ু ফাং সু অপেরার প্রথম শিল্পী। ১২ বছর বয়সী চিয়াং ইয়ুন ফাং একা একা ইন দলে পরিবেশনা শিখতে যান। তিনি ই জোং ছুউ'র কাছ থেকেও সু থান শিল্পকলা শিখতে শুরু করেন। সে সময় সু অপেরার অস্তিত্ব ছিল না। চিয়াং ইয়ুন ফাংসহ অনেক প্রাবীণ শিল্পীর চেষ্টা ও উদ্যোগে খুন অপেরাকে পরিবর্তন করে সু অপেরা সৃষ্টি করা হয়।
চিয়াং ইয়ুন ফাং সু থান অপেরার ওপর আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি মনে করতেন, সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের উপভোগের মানও উন্নতি হচ্ছে। সেজন্য সু থান অপেরার সুর সমৃদ্ধ হওয়া উচিত। সু থান অপেরা পরিবশনের সময় বসতে হয়। যা শিল্পীদের বাধার সৃষ্টি করে। সেজন্য চিয়াং ইয়ু ফাং চিন্তা করেছেন, সু থান উন্নয়ন করে সু অপেরায় পরিণত করবেন কিনা? শিল্পীরা মঞ্চে শরীরের ভাষা প্রকাশ করতে না পারলে ভালো হবে না? তিনি তার চিন্তাধারণার কথা কয়েকজন সু থান শিল্পীকে বলেন। তাঁরা চিয়াং ইয়ু ফাং'র সঙ্গে একমত হন। চিয়াং ইয়ু ফাং'র বন ও বিখ্যাত শিল্পী ইন সি মিন এ বছর ৮৯ বছর পা দিয়েছেন। তিনি সু থান শিল্পকলা শেখার সময়ের কথা স্মরণ করে বলেন, "সু থান অপেরা পরিবেশনের সময় বসতে হবে। সেজন্য পরিবেশনের পদ্ধতি খুব ভালো নয়। আমরা খুন অপেরা থেকে অভিজ্ঞতা শিখে আমাদের পরিবেশনাকে সমৃদ্ধ করেছি।
তাছাড়া চিয়াং ইয়ু ফাং বিলুপ্ত দক্ষিণাঞ্চলের সুরকেও সু অপেরার মধ্যে লাগিয়েছেন।
চিয়াং ইয়ু ফাংয়ের শ্রেষ্ঠ ছাত্রী হিসেবে ওয়াং ফাং তার শিক্ষককে যথেষ্ট সম্মান করেন। তিনি বলেন, "এ দলে যোগ দেয়ার সময় তারা খুব বিখ্যাত শিল্পী ছিলেন। আমরা তাদেরকে খুব সম্মান করতাম। কিন্তু আমাদের শেখানোর সময় তারা যেন আমাদের বাবামায়ের মত ছিলেন। শিক্ষক চিয়াং সব সময়ই আমাদের বলেতেন, সাধারণ জীবনে কী ধরণের মানুষ থাকে ঠিক সেভাবে মঞ্চেও সে ধরণের চরিত্রে অভিনয় করতে হবে।
সু চৌ অপেরা শিল্পকলার জাদুঘরে এখনও একটি পুরোনো ছবি হয়ে আছে। এ ছবিটি প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইয়ের সঙ্গে চিয়াং ইয়ু ফাং'র তোলা। এ ছবি ১৯৫৯ সালের এপ্রিল মাসে চিয়ান চিয়াংয়ে তোলা হয়।
২০০৮ সালের জানুয়ারী মাসে চিয়াং ইয়ু ফাং সু চৌ শহরে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স ৮৭ বছর।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |