|
গ্যারিশন ইকিয়ারা এর আগে কেনিয়ার যানবাহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। অবসর নেয়ার পর তিনি নাইরোবী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কাজ শুরু করেন । তিনি এই মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দু'বার চীন সফর করেছেন । তিনি বলেন , অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে চীন একটি শক্তিশালী দেশে পরিণত হয়েছে । বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীন ও আফ্রিকার দেশগুলোর বিনিময়ও বাড়ছে , চীন ও আফ্রিকার দেশগুলোর জনগণের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো মজবুত হচ্ছে । তিনি বলেন , চীন আফ্রিকায় ক্রমান্বয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে । বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চীন আফ্রিকার এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার । চীন অবকাঠামো নির্মাণ , শিক্ষা , সংস্কৃতি ও সমাজ সেবা ক্ষেত্রে আফ্রিকাকে অনেক সাহায্য দিয়েছে । আমি আশা করি , চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের চতুর্থ মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে , বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি , শিক্ষা , কর্মী বিনিময় ও পর্যটন ক্ষেত্রের চীন ও আফ্রিকার সহযোগিতা আরো বাড়বে , দু'পক্ষের পারস্পরিক কল্যানমূলক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরো সুসংবদ্ধ হবে ।
গ্যারিশন ইকিয়ারা কেনিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন বলে তিনি চীন ও কেনিয়ার যাঁনবাহন ক্ষেত্রের সহযোগিতার ওপর বিশেষ নজর রাখেন । তিনি কেনিয়ার অবকাঠামো নির্মাণে চীনা কোম্পানির অংশগ্রহণকে স্বাগত জানান এবং চীনা কোম্পানির প্রকল্পের গুণগত মান ও কার্যকারিতার প্রশংসা করেন । তিনি বলেন , চীনের কোম্পানিগুলো কেনিয়ার বিমানবন্দর নির্মাণে অংশ নিয়ে বিরাট অবদান রেখেছে । চীনের একটি শক্তিধর কোম্পানি নাইরোবীর জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আর আরেকটি কোম্পানি কেনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের কিসুমু বিমানবন্দরের নির্মাণ কাজে অংশ নিয়েছে । কেনিয়ায় সড়ক নির্মাণে চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকল্পের গুণগত মান ও উচ্চ কার্যকারিতা স্থানীয় অধিবাসীদের প্রশংসা কুড়িয়েছে ।
চীন ও আফ্রিকার সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হওয়ার পাশাপাশি দু'পক্ষের মধ্যে সফর বিনিময়ও বেড়েছে । গ্যারিশন ইকিয়ারা লক্ষ্য করেছেন কেনিয়ার অনেক মানুষ চীনা ভাষা শিখতে আগ্রহী । তিনি বলেন ২০০৩ সাল থেকে চীন ও কেনিয়ার মধ্যে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের বিনিময় দ্রুত বাড়তে শুরু করে । ২০০৫ সালে নাইরোবী বিশ্ববিদ্যালয়ে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয় । কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট কেনিয়ার ছাত্রছাত্রীদরন জন্য চীনা ভাষা শেখার সুযোগ করে দিয়েছে । এখন কেনিয়ার যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেকেই চীনা ভাষা শেখার মাধ্যমে চীনের সংস্কৃতি সম্পর্কে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করছেন । তাদের স্বপ্ন হলো চীনে চাকরী করা এবং চীন ও আফ্রিকার সম্পর্কোন্নয়নে অবদান রাখা । ২০০৭ সালে চীন সফরের সময় চীনে কেনিয়ার দূতাবাসের মাধ্যমে তিনি জানতে পেরেছেন যে কেনিয়ার দু'শরও বেশি ছাত্রছাত্রী সুন্দরভাবে চীনা ভাষা বলতে পারেন। তাদের মধ্যে অনেকে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণের কাজে অংশ নিয়েছেন ।
গ্যারিশন ইকিয়ারা বলেন , চীন শক্তিশালী দেশ হলেও অন্য দেশের সার্বভৌমত্বের সম্মান প্রদর্শন করে , অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন না এবং অন্যে দেশের উন্নয়ন পদ্ধতিকে মর্যাদা প্রদর্শন করে । তিনি বলেন , চীন ও পাশ্চাত্য দেশগুলোর মূল পার্থক্য হল চীন সহযোগিতার সময় আফ্রিকার দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে না , কেনিয়াসহ আফ্রিকা দেশগুলোতে অনেক সমস্যা রয়েছে , তবে আমরা নিজেদের শক্তির ওপর নির্ভর করে এ সব সমস্যার সমাধান করতে চাই । এ ক্ষেত্রে চীন যথেষ্ট সম্মান প্রদর্শন করেছে এবং কখনও অভিযোগ ও হস্তক্ষেপ করে নি । তাই আমাদের সম্পর্ক বিশেষ ধরনের সহযোগিতামূলক অংশীদারীত্বের সম্পর্ক । আশা করি এ সম্পর্ক আরো গভীর হবে ।
সাক্ষাত্কারে গ্যারিশন ইকিয়ারা চীনে কেনিয়ার সংস্কৃতি প্রচারের ব্যাপারেও আশাও প্রকাশ করেছেন । তিনি আশা করেন ,আরো বেশি চীনা পর্যটক কেনিয়া ভ্রমনে যাবেন , সেখানে তারা কেনিয়ার সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করবেন । তিনি আরেকবার চীন সফরের আশা রাখেন , কেননা প্রত্যেকবারই তিনি চীনের নতুন পরিবর্তন ও অগ্রগতি দেখতে পাবেন ।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |