Web bengali.cri.cn   
একজন মিসরীয়ের চীনা মমতা
  2009-11-09 15:58:07  cri
চীন ও মিসর দুটি দেশই হাজার বছরের ইতিহাস সম্পন্ন প্রাচীন সভ্যতার দেশ । ১৯৫৬ সালের মে মাসে চীন মিসরের সঙ্গে কুটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে । তখন থেকেই আরব ও আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে নয়া চীনের নতুন সম্পর্কের নতুন যুগের সুচনা । নতুন শতাব্দীতে প্রবেশের পর চীন ও মিসরের সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে । দুদেশের জনগণের সমঝোতা ও বিনিময় ক্রমেই বাড়ছে । মিসরের অনেক মানুষ চীন ও চীনের সংস্কৃতি পছন্দ করেন । সম্প্রতি সি আর আই সংবাদদাতা মিসরের সুয়েজ খাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলার ও কন্ফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক আলি এল জায়াদের একটি সাক্ষাত্কার নিয়েছেন ।

সাক্ষাত্কারে আলি এল জায়াদ বলেন , আমি চীনাদের পছন্দ করি । আমি প্রায়ই চীনা কর্মীদের প্রশংসা করি । চীনারা পরিশ্রমী , সত্ ও বুদ্ধিমান । চীনাদের কথা বলতে গেলেই যেন তার কথার শেষ নেই । তিনি চীনে ত্রিশ বার সফর করেছেন । তাই চীনে তার অনেক বন্ধু রয়েছে । মিসরে তার বন্ধুদের অনেকেই চীন সফর করেছেন । আলির ছেলে এখন চীনের বিখ্যাত ফুতান বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ভাষার ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি করছে ।

আলি এল জায়াদ বলেন , চীন ও মিসরের ইতিহাস সুদীর্ঘ । সংস্কৃতি ও জাতীর বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে দুটি দেশের অনেক মিল আছে এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যায় দু'দেশের অবস্থানের মিলও বেশি । এ কারণে দু'দেশের মধ্যে সহজেই আস্থা স্থাপন করা যায় । তিনি বলেন , মিসর ও চীন দু'টিই প্রাচ্যের দেশ , দু'দেশের সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যে মিলও বলতে গেলে বেশি । তাই মিসর ও চীনের মধ্যে সংলাপ ও বিনিময় ইউরোপীয় দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে সহজ ।

আলি এল জায়াদ বলেন , মিসরে চীনের পর্যটকের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে । মিসরে চীনা ভাষার পর্যটকরা সহজেই গাইডের চাকরি পাবেন । দু'দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক আদান-প্রদান বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মিসরের অনেক মানুষ চীনা ভাষা শেখার চেষ্টা করছেন । তিনি বলেন, অনেকেই চীনাদের সঙ্গে মেলামেশা ও চীনা পর্যটকদের অর্ভ্যথনার অভিজ্ঞতা পেতে চান । এটাই বোধহয় মিসরের অধিবাসীদের উত্সাহের সঙ্গে চীনা ভাষা শেখার প্রধান কারণ।

জায়াদ বলেন , মিসরের অধিবাসীদের চীনা ভাষা শেখার আগ্রহ মেটানোর জন্য সুয়েজ খাল বিশ্ববিদ্যালয় চীনের সঙ্গে মিলে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । তিনি বলেন, আমরা চীনের উন্নয়নের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাই এবং এ সব তথ্য আমাদের দেশের জনগণকে জানাতে চাই। এ লক্ষ্য হাসিলের জন্য আমাদের চীনা ভাষা শিখতে হবে । জানা গেছে , ২০০৮ সালের পয়লা এপ্রিল সুয়েজ খাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় । এ ইন্সটিটিউটের আয়তন এক হাজার বর্গমিটার । ছাত্র সংখ্যা প্রথম দিকের ২০জন থেকে বেড়ে দেড় শ'তে পৌঁছেছে । ছাত্রদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী , শিক্ষক , শিল্পপতি , ব্যবসায়ী এবং মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রী রয়েছে।

চীনা ভাষার কোর্স খোলার সময় অনেকেই নাম নিবন্ধন করতে এসেছেন । কিন্তু শিক্ষকের অভাবে সবার আকাংখা মেটাতে পারি নি । চীনা ভাষা শেখার সুযোগ পাওয়ার জন্য কোনো কোনো মানুষ চীনা দূতাবাসের সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করেছেন । জায়াদ বলেন , চীনা ভাষা শেখার চাহিদা মেটানোর জন্য তিনি চীনের সঙ্গে সহযোগিতা করে আরো বেশি চীনা শিক্ষক মিসরে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন ।

জায়াদ গত কয়েক দশকে অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নে চীনের বিরাট সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন । তিনি বলেন , চীন প্রাচীন সভ্যতা সম্পন্ন দেশ । অনেক দেশের মতই চীনের অত্যাচারের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে । কিন্তু চীন অল্প সময়ের মধ্যে দেশের উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেছে । এ ক্ষেত্রে চীন অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে । আমার ধারণা , চীন নিজের বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে অনেক সমস্যার সমাধান করেছে । এটা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর পক্ষে সম্ভব হবে না , কেননা তাদের অত্যাচারের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা নেই ।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040