Web bengali.cri.cn   
অলিম্পিক চেতনার উজ্জ্বল প্রদর্শন হলো লন্ডনে
  2012-09-05 22:11:29  cri

উসাইন বোল্ড তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন। তিনি শুধু স্বর্ণপদক রক্ষা করেন নি, এখানে পেইচিং অলিম্পিকে তাঁর নিজের সাফল্যকেও অতিক্রম করেন। আটজন ক্রীড়াবিদের মধ্যে আসাফা পাওয়েল ছাড়া অন্য ৭জন ক্রীড়াবিদ ১০ সেকেন্ডের মধ্যে স্কোর অর্জন করেন। এটা ছিল এক অত্যন্ত ভয়ংকর প্রতিযোগিতা।

লন্ডনে গ্রীষ্মকালও খুব শীতল। তবে এ শীতল আবহাওয়াকে অতিক্রম করেছে গত ১৬ দিনের অলিম্পিক গেমসের অনেক রক্তের ফোঁড়া আবেগরুদ্ধ মুহূর্ত। ছয় আগস্ট অনুষ্ঠিত পুরুষ এক শ' মিটার স্বল্প-পাল্লার দৌড় প্রতিযোগিতায় ৮জন ক্রীড়াবিদের ৭জন ১০ সেকেন্ডের মধ্যে স্কোর করেন। ধারাভাষ্যকর বিস্মিত কণ্ঠে বলেন, এটা হচ্ছে মানব ইতিহাসে সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক প্রতিযোগিতা। স্বর্ণপদক প্রাপক বোল্ড ছাড়া তাঁরই কোচের আরেক সহকারী ইয়োহান ব্লেক রৌপ্যপদক লাভ করেন। পেইচিং অলিম্পিক গেমস থেকে এখন পর্যন্ত ব্লেকের মতো অনেক নতুন তারকা আবির্ভূত হয়।

"আমি মনে করি যে, আমার শরীর ক্ষমতার চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছায় নি। প্রশিক্ষণের পর আমার ফলাফল আরো ভাল হবে। আমি বিশ্বাস করি যে, আমি করতে পারবো।"

চার আগস্ট সন্ধ্যায় পুরুষদের দেড় হাজার মিটার ফ্রি-স্টাইল সাঁতার প্রতিযোগিতার ফাইনালে চীনের ক্রীড়াবিদ সুন ইয়াং ১৪ মিনিট ৩১ সেকেন্ড নিয়ে লন্ডন অলিম্পিক গেমসে তাঁর নিজের দ্বিতীয় স্বর্ণপদক লাভ করেন। তিনি তাঁর নিজের সৃষ্ট বিশ্বরেকর্ড ভাঙেন। প্রতিযোগিতার পর সুন ইয়াং বলেন, তাঁর শারীরিক ক্ষমতা চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছায় নি। ২০০৮ সালের পেইচিং অলিম্পিক গেমসে 'উড়ন্ত মত্স্য' বলে খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের মাইকেল ফেলপস ওয়াটার কিউবে তাঁর যুগের অনেক ক্রীড়াবিদের বিভিন্ন রেকর্ডও ভাঙেন। আন্তর্জাতিক সাঁতার ফেডারেশন যখন উচ্চ-প্রযুক্তির সাঁতার-পোশাক নিষিদ্ধ করেছিল, তখন অনেকেই পূর্বাভাস করেছিল যে বিশ্ব সাঁতার প্রতিযোগিতার ফলাফল এবার আগের রেকর্ড থেকে পিছিয়ে থাকবে। তবে সাঁতার ফেডারেশনের এ সিদ্ধান্তের ৩ বছর পর লন্ডন অলিম্পিকে উচ্চ-প্রযুক্তির সাঁতার-পোশাক ছাড়াই সুন ইয়াং, ইয়ে সি ওয়েন ও রিয়ান স্টিভেন লোচসহ এ নতুন যুগের ক্রীড়াবিদরা বিভিন্ন রেকর্ড ভাঙেন।

"আজকের ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতার ফলাফলে আমিও বিস্মিত। 'বি' দল সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত একটি ফলাফল সৃষ্টি করেছে। ২৯৩ কেজি!"

উনত্রিশ জুলাই লন্ডন অলিম্পিক গেমসে ৫৬ কেজি ওজন-শ্রেণীর ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় চীনের ক্রীড়াবিদ উ চিং পিয়াও পরাজিত হন। 'বি' দলের উত্তর কোরিয়ার ক্রীড়াবিদ ইয়েন রুন জে মোট ২৯৩ কেজির স্কোর নিয়ে স্বর্ণপদক অর্জন করেন।

এবারের লন্ডন অলিম্পিক গেমসে অনেক বিস্ময় সৃষ্টি হয়েছে। অলিম্পিক গেমসের ইতিহাসে অনেক চিরস্মরণীয় মুহূর্ত আছে। আমরা যখন একটি অলিম্পিক গেমসের মূল্যায়ন করি, তখন আমাদের সামনে থাকে অনেক মানদণ্ড। ষোল দিনের প্রতিযোগিতার পর যেটা দেখতে পারি, সেটা হলো অলিম্পিকের আরো দ্রুত, উচ্চ ও শক্তিশালী চেতনা।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি মিয়ুং-বাক ১০ আগস্ট জাপানের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ দোকদো দ্বীপ সফর করেন। তাঁর এ সফর ছিল দ্বীপটিতে দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম সফর। জাপান এ সফরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ সফরের কারণে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সম্পর্ক নজিরবিহীন অচলাবস্থায় পড়েছে।

তেরো আগস্ট ইয়োনহাপ বার্তা সংস্থা প্রকাশিত এক খবরে জানা গেছে, লি মিয়ুং-বাক দোকদো সফর নিয়ে বলেন, তিন বছর আগে থেকে তিনি এবারের সফরের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। গত বছরই তাঁর সফরের পরিকল্পনা ছিল। তবে আবহাওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত সফরটি বাতিল করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, এবার তাঁর পরিকল্পনা ছিল দোকদো দ্বীপে তিনি এক রাত থাকবেন। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরে যান।

তিনি জানতেন যে, তাঁর সফলের ফলে জাপান প্রবল প্রতিবাদ করবে। তবে তিনি বলেন, দোকদো হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি অবিচ্ছিদ্য অংশ। বসন্ত দোকদো দ্বীপ নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের নিষ্পত্তি করা যাবে। তিনি বলেন, তবে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমস্যার কারণে দোকদো সমস্যা নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে জাপান। জাপান সরকারের উচিত কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা।

বিগত ২০০৮ সালে লি মিয়ুং-বাক দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর জাপানের সঙ্গে 'উজ্জ্বল ভবিষ্যত সম্পর্ক' প্রতিষ্ঠা সমর্থন করেন তিনি। সেজন্য তাকে জাপান পন্থী বলে মনে করা হয়।

দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমে ১৩ আগস্ট প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, জাপান সরকার আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে দোকদো দ্বীপের সার্বভৌমত্ব সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তি করতে চায়। জাপানের এ উদ্যোগের ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে যে, দক্ষিণ কোরিয়া ১৯৯১ সালে জাতিসংঘে যোগ দেওয়ার সময় জানায় যে, আন্তর্জাতিক আদালতের বলপুর্বক নিয়ন্তণাধিকার দক্ষিণ কোরিয়া গ্রহণ করবে না। তাই জাপান আন্তর্জাতিক আদালতে মোকদ্দমা করলেও, দক্ষিণ কোরিয়া সরকার কোনো প্রতিক্রিয়া করবে না।

প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? কোনো 'হট টপিক' সম্বন্ধে আপনারা যদি জানতে বা আলোচনা করতে চান, আমাদেরকে চিঠি বা ইমেইল পাঠাতে পারেন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা হচ্ছে ben@cri.com.cn। চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, চলতি প্রসঙ্গ অনুষ্ঠান 'হট টপিক প্রস্তাব'। যদি আপনাদের প্রস্তাব গৃহীত হয়, তাহলে সেই মাসের শেষ দিকে 'চলতি প্রসঙ্গ' ও 'মুক্তার কথা' অনুষ্ঠানে আপনাদের নাম প্রচার করবো আর অবশ্যই উপহার পাঠাবো। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় আছি।

 (জিনিয়া ওয়াং)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040