Web bengali.cri.cn   
বাড়ি ফেরা--উত্সবের সময় বিভিন্ন দেশের মানুষের যাতায়াত
  2012-08-13 18:59:57  cri

 

ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের অধীন কোম্পানি, রেলপথ ও পর্যটন কোম্পানি, তাদের ওয়েবসাইটের মোবাইল সংস্করণ তৈরি করেছে, যাতে যাত্রীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টিকিট কিনতে পারে।

যাত্রীকে প্রথমে ওই কোম্পানির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে তাদের টিকিট কেনার সফটওয়ার ডাউলোড করতে হয়। তারপর সেটি মোবাইলফোনে ইনস্টল করতে হয়। টিকিট কেনার সময় মোবাইলফোনের মাধ্যমে এই ওয়েবসাইট লগ-ইন করে নিজের তথ্য এবং ব্যাংক কার্ডের তথ্য দিতে হয়। এভাবে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কেনা হয়ে যায় ট্রেন টিকিট। টিকিট কেনা প্রক্রিয় সফল হলে ওয়েবসাইট স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাত্রীকে একটি খুদে বার্তা পাঠিয়ে নিশ্চিত করে দেয়। এ বার্তাটিই হয় যাত্রীর ই-টিকিট। তবে এখনো পর্যন্ত খুব কম মানুষ এ সফটওয়ার ব্যবহার করে। তবে এটা নিশ্চিত করে বলা যায়, মোবাইলফোন জনপ্রিয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরো বেশি লোক এই পদ্ধতিতে টিকিট কিনবে।

বর্তমানে ভারতের রেলপথ ও পর্যটন কোম্পানির ওয়েবসাইট হলো দেশটির সবচেয়ে বেশি মানুষের ভিজিট করা ওয়েবসাইটগুলোর অন্যতম। মোবাইল ইন্টারনেট সেবা চালু করা বর্তমানে ক্রমবর্ধমান স্মার্ট ফোন বাজারের জন্য সহায়ক। এ কোম্পানি ভবিষ্যতে সব ধরনের স্মার্ট ফোনের জন্য টিকিটক্রয় সফটওয়ার তৈরি করবে, যাতে টিকিট ক্রয় ক্ষেত্রের সমস্যা সমাধান করা যায়।

তবে আধুনিক সুবিধা গ্রহণের যেমন ব্যয় আছে, এ ক্ষেত্রেও তেমনটি আছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টিকিট কিনলে দশ থেকে বিশ রুপি চার্জ দিতে হয়।

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টিকিট কেনা ছাড়াও এখন চীনে নিজের পরিচয়পত্র দিয়ে টিকিট কেনার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। অর্থাত্ যাত্রীরা নিজের নাম ও মৌলিক তথ্য দিয়ে টিকিট কিনতে পারে। এর আগে চীনে টাকা দিলেই একটি ট্রেন টিকিট কেনা যেত। তাই কেউ কেউ একবারে অনেক টিকিট কিনতো, পরে অন্যদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করার জন্য। এভাবে টিকিট কালোবাজারি করে অনেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নিত। এ ধরনের কালোবাজারি রোধ করার জন্য চীন সরকার নিজের পরিচয় প্রদানের মাধ্যমে টিকিট ক্রয় ব্যবস্থা চালু করেছে।

আর এ ব্যবস্থা সত্যিই ভাল কাজে লেগেছে। কিউবায় এমন ব্যবস্থা চালু আছে। তবে সেখানকার ব্যবস্থা চীনের তুলনায় একটু ভিন্ন। কিউবায় লম্বা যাত্রার জন্য পরিচয়পত্র দিয়ে রেলপথ বিভাগ থেকে টিকিট কিনতে হয়। নিজ দেশের নাগরিকরা তাদের আই ডি কার্ড দিয়ে টিকিট কেনে আর বিদেশি পর্যটকরা পাসপোর্ট দিয়ে টিকিট কিনে। সেখানে রেলস্টেশনে ঢোকার সময় কর্মীরা যাত্রীর আই ডি কার্ড ও টিকিট মিলিয়ে দেখে। যদি সেগুলো না মেলে, তাহলে যাত্রী ট্রেনে উঠতে পারে না। কিউবায় লম্বা যাত্রার বাস টিকিট কিনলেও আই ডি কার্ড লাগে। তবে দেশটিতে স্বল্প দূরত্বের রেল বা বাস যাত্রার জন্য কোনো কার্ড লাগে না। কারণ এমন যাত্রার জন্য অনেক ট্রেন ও বাস আছে। সেজন্য টিকিটের কোনো সংকট হয় না এবং কালোবাজারির কোনো সুযোগ থাকে না

ভারত ও কিউবার মতো দেশগুলোতে যাত্রীরা গণপরিবহণের ওপর নির্ভর করলেও মার্কিন নাগরিকরা কিন্তু নিজেরাই গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরতে পছন্দ করে। যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি সমিতির পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, গত বড়দিনের সময়ে অর্থাত্ ২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে ২০১২ সালের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৯২০ লাখ মার্কিন নাগরিক বাইরে যায়। এ সংখ্যা ছিল তার আগের বছরের তুলনায় ১.৪ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ মানুষ নিজেরা গাড়ি চালিয়ে বাড়ি যায়। মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ বিমানে করে বাড়ি ফেরে।

নাগরিকরা যাতায়াতের কি উপায় অবলম্বন করে, তার মধ্য দিয়ে একটি দেশের অবস্থা ফুটে ওঠে। আসলে উত্সবের সময় আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে থাকা খুব সুখের ব্যাপার। তবে যারা অসুস্থ, প্রতিবন্ধী অথবা যাদের বাইরে যেতে অসুবিধা হয়, উত্সবের সময় বাড়ি ফেরা তাদের জন্য খুব কঠিন। তবে এমন মানুষদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি সেরা অ্যাম্বুলেন্স কোম্পানি, মার্কিন মেডিকেল রিস্পান্স, একটি উপায় বের করেছে। আমার মনে হয়, এই অভিজ্ঞতা বিশ্বের অন্যান্য দেশ ভাগাভাগি করতে পারে। দশ বছর আগে এই কোম্পানি 'উত্সবে বাড়ি ফেরা' প্রকল্প চালু করে। এ প্রকল্পের লক্ষ্য হলো অসুস্থ বা প্রতিবন্ধী মানুষদেরকে পরিবারের সঙ্গে মিলনের সুযোগ করে দেওয়া। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অ্যাম্বুলেন্স কোম্পানি একই ধরনের সেবা চালু করেছে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্য সরকারের উদ্যোগে স্থানীয় দমকল বিভাগ থ্যাংকসগিভিং দিবসে এমন সেবা দিতে শুরু করে। আরেকটি ভাল ব্যাপার হলো বড় বড় উত্সবের সময় দেওয়া এমন সেবার জন্য কোনো চার্জ লাগে না। কিছু কিছু কোম্পানি পেশাদার নার্সও দেয় যাত্রার সময়। এমন প্রকল্প মার্কিন নাগরিকদের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040