Web bengali.cri.cn   
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
  2012-08-06 16:46:04  cri
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি চার বছর পর পরই একবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে: বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাথমিক প্রার্থী নির্বাচন, জুলাই ও আগস্ট মাসে দলগুলোর প্রতিনিধি সম্মেলন ও চুড়ান্ত প্রার্থী নির্বাচন, নভেম্বর মাসে দেশের ভোটারদের সরাসরি ভোটে ইলেকটোরাল কলেজ নির্বাচন এবং ডিসেম্বর মাসে ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।

চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বর্তমান প্রেসিডেন্ট এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী বারাক ওবামা এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী মিট রমনির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। নিঃসন্দেহে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য বহু টাকা লাগবে। বিভিন্ন সংস্থার জরিপ থেকে জানা গেছে, চলতি বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য ৫.৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হতে পারে। নির্বাচনী ব্যয় এবার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করতে যাচ্ছে।

এখনো বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্দাবস্থার অবসান হয়নি, বিভিন্ন দেশ অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক অবস্থাও ভালো না । তবে যদিও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা ততটা ভালো না এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধানও হয় নি, তবুও নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন দল যে এত বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছে, তা সত্যি সহজ ব্যাপার নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর রিপ্রেজেনটেটিভ পলিটিকস-এর অনুমান, চলতি বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যয় আগের বারের ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে ৭ শতাংশ বেশি হবে। এ সংস্থার একজন কর্মকর্তা জানায়েছেন, নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন মহল থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। যত বেশি অর্থ তারা সংগ্রহ করতে পারে, তত বেশি ব্যয় করতে পারে। পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, এ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যয় ২০০৮ সালের ব্যয়কে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তবে একটি ব্যাপারে বিভিন্ন মহলের সন্দেহ বেড়ে যাচ্ছে। সেটি হলো নির্বাচনী চাঁদা কোথা থেকে আসছে।

সর্বশেষ পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে 'ইউএস টুডে' পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ওবামা ও রমনির নির্বাচনী দলের ব্যয়, ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান পার্টি এবং দু'দলের সঙ্গে সম্পর্কিত রাজনৈতিক কমিশনের ব্যয় এ পর্যন্ত ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

এখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র তিন মাস বাকি। অনুমান করা যায়, আগামী দিনগুলোতে আরো তুমুল লড়াই হবে। নির্বাচনে জয়লাভের জন্য দু'দল নিশ্চয়ই আরো বেশি টাকা ব্যয় করবে।

রাজনীতির উপাদান ছাড়া, শুধু ব্যক্তিগত চরিত্রের দিক থেকে বিবেচনা করলে, অধিকাংশ মার্কিন নাগরিক মনে করেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট ওবামা রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী রমনির চেয়ে ভালো এবং আরো সহজেই সহাবস্থান করতে পারেন। সেকারণে সমর্থনের পাল্লা ওবামার দিকে বেশি। বিশ্লেষকরাও মনে করেন, রমনির পক্ষে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে জনগণের স্বীকৃতি পাওয়া কঠিন। তবে রমনির নির্বাচনী দল দৃঢ়ভাবে মনে করে, চলতি মাসে রিপাবলিকান পার্টির রাষ্ট্রীয় সম্মেলন থেকে বছরের শেষ দিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন পর্যন্ত রমনির নিজের ভাবমূর্তি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট সময় আছে। ভবিষ্যতে তিনি নিশ্চয়ই অধিকাংশ সমর্থন পাবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি গণজরিপ থেকে জানা গেছে, ব্যক্তিগত সমর্থন ক্ষেত্রে রমনি ওবামাকে পরাজিত করতে পারবেন না। 'ইউ এস টুডে'-এর সর্বশেষ জরিপ থেকে জানা গেছে, কর্মসংস্থান, কর ব্যবস্থা ও ঋণসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিষয়ে রমনি ওবামার চেয়ে বেশ ভালো প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন, কে জনগণের মধ্যে বেশি সাড়া পাবেন? এর উত্তর নিশ্চয়ই বারাক ওবামা। মাত্র ৩০ শতাংশ ভোটার মনে করে, রমনি তাদের পছন্দের প্রার্থী। যদিও রমনির প্রতি ভোটারদের সমর্থন কম, তবুও তার নির্বাচনী দলের একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ক্লাসের মনিটর নির্বাচন থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন একদম আলাদা। জনগণের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা খুব ছোট একটি উপাদান। যে প্রার্থী জনগণের মধ্যে বেশি গ্রহণযোগ্য হন, তিনি কী সফলভাবে পুনরুদ্ধার করতে পারবেন - তা একটি প্রশ্ন। রমনির জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো ভোটারদেরকে জানানো যে, তিনি যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হন, তাহলে ভবিষ্যতে জনগণের জন্য কী কী নীতি চালু করবেন এবং তাদের জন্য কেমন সুন্দর একটি ভবিষ্যত এনে দেবেন।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040